বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ইউকের উদ্যোগে সাংবাদিক ও শিক্ষক সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই এবং লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা জি এম ফুরুখের মৃত্যুতে ১৫ এপ্রিল সোমবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের উডহাম কমিউনিটি হলে এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ।
জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম আবুতাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাপ্তাহিক বাংলা পোষ্টের সাবেক ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলহাজ্ব এ এস মোহাম্মদ সিংকাপনী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল ইউকের সাবেক চেয়ারপারসন নুরুল ইসলাম মাহবুব, বিশিষ্ট রাজনীতিক ও লেখক অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাদের সালেহ, লেখক ও সমাজসেবী নুরুল ইসলাম এমবিই এবং লন্ডন বারা অব টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেধাবী কাউন্সিলার আবু তালহা চৌধুরী।
সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই ও জি এম ফুরুখের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সময় সম্পাদক কবি ও কথাসাহিত্যিক সাঈদ চৌধুরী।
মরহুমদ্বয়ের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা, সাংবাদিক রেজাউল করিম মৃধা, সাংবাদিক শরীফুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক ড. আজিজুল আম্বিয়া, সাংবাদিক বদরুজ্জামান বাবুল, সাংবাদিক শিহাবুজ্জামান কামাল, সাংবাদিক শাহ আলম রাজন প্রমুখ।
গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন এডিনবরা মসজিদের সাবেক ইমাম মাওলানা জিল্লুর রহমান, টিভি উপস্থাপক মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের সাউথ ইষ্ট রিজিয়নের আহ্বায়ক হারুনুর রশীদ ও যুগ্ম আহবায়ক জামাল হোসেন, বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের সভাপতি জামান সিদ্দিকী, দক্ষিণ সুনামগন্জ উন্নয়ন সংস্থার সাবেক সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কমিউনিটি সংগঠক ও চ্যারিটি ওয়ার্কার হাজি ফারুক মিয়া, হাজি মতিউর রহমান, সমাজকর্মী ইউসুফ জাকারিয়া খান প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই চ্যানেল এস টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সংবাদ পাঠক ছিলেন। প্রফেশনাল নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি কাজ করেছেন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস, ভয়েস অব আমেরিকা, বাংলাদেশ টেলিভিশন-সহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে। সাংবাদিকতার পাশাপাশি একজন সফল ভাষা শিক্ষক, সৎ ও সাহসী এবং বিনয়ী ও ধর্মপ্রাণ মানুষ হিসেবে তিনি অমর হয়ে থাকবেন। সৈয়দ আফসার ১২ এপ্রিল শুক্রবার রাত ২টা ২০ মিনিটে লন্ডনের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৫৯ বছর। স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে সহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।
সভায় বক্তারা বলেন, সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখেছেন। একজন টিভি সংবাদ পাঠক ও আবৃত্তিকার হিসাবে স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের স্বাক্ষর রেখেছেন। বাংলা ভাষা শিক্ষার আন্দোলন ও সমাজ সেবায় তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। কমিউনিটিতে বিভিন্ন সেবা ও অনুপ্রেরণামূলক কাজে অবদানের জন্য যুক্তরাজ্যের রানী কর্তৃক তিনি এমবিই খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশী কমিউনিটির বিরাট ক্ষতি হয়েছে।
জি এম ফুরুক সম্পর্কে বক্তারা বলেন, তিনি ছিলেন ইতিহাস ও ঐতিহ্য অনুসন্ধুৎসী একজন লেখক। অন লাইন টিভিতে তিনি বৃটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটির পথ নির্দেশকদের তুলে ধরেছেন। স্বল্প দৈর্ঘ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে সমাজকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ।
সভায় মরহুমদ্বয়ের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন শায়েখ আব্দুল কাদের সালেহ। সভায় উপস্থিত সকলকে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন সোনালী স্বপ্নের সভাপতি মিসেস কামরুন নাহার শোভা মতিন। উল্লেখ্য, মরহুম সৈয়দ আফসার উদ্দিন বিলেতে এসে প্রথম এক বছর শোভা মতিনের বাসায় ছিলেন।