অনুবাদ মাসুম খলিলী:
এক. আপনি যদি সবসময় দুশ্চিন্তা, চাপ ও উদ্বেগে থাকেন তবে আপনাকে আপনার জীবন নিয়ে পুনর্বিবেচনা করতে হবে। সর্বশক্তিমান এবং তাঁর পরিকল্পনার প্রতি আপনার বিশ্বাস রাখতে হবে। আপনার যথাসাধ্য চেষ্টা আপনি করুন আর বাকিটা তাঁর কাছে হস্তান্তর করুন।
দুই. হারানো কখনই সহজ হয় না। প্রিয়জন হারানো, সম্পদ হারানো, চাকরি হারানো। এই সব আপনার হৃদয় ভেঙ্গে দিতে পারে। তবে এতে সর্বশক্তিমানের রহমতের আশা হারাবেন না। আপনার হৃদয়ের নিরাময় হবে; অন্তর নরম হবে। আপনি তাঁর আরও কাছে আসবেন। আপনি আবারও স্বস্তি অনুভব করবেন।
পূনশ্চঃ
এক. যা আপনার নয় তা দাবি করা ভুল। আপনার কর্মের ন্যায্যতা প্রমাণ করার জন্য একটি মিথ্যা বর্ণনা তৈরি করা ভুল। আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি পুরো জনসংখ্যাকে বিতাড়ন থেকে একটি অস্থায়ী উচ্চ অর্জন করতে পারেন। তবে এটি স্বল্পস্থায়ী কারণ বিশ্বজগতের প্রভু সবচেয়ে ন্যায়সঙ্গত। তিনি আপনার পরিকল্পনা জানেন এবং পৃথিবীটা নিয়ন্ত্রণে আছে তা দেখাবেন। এটি হবে শীঘ্রই।
দুই. আমরা প্রায়ই আমাদের অভ্যন্তরিণ শান্তির প্রয়োজন পূরণের জন্য যত সব ভুল জায়গায় অনুসন্ধান করি; শান্তি ও তৃপ্তি সর্বদা আমাদের এড়িয়ে যাবে যদি আমরা সর্বশক্তিমানের মাধ্যমে অন্তরের শূন্যতা পূরণ না করি। সেই সংযোগ তৈরি করুন।
তিন. সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সম্পর্কে আপনি সচেতন হন। এটি সম্প্রতি আরও বেশি বিরূপ হয়ে ওঠছে। কখনও ভুলবেন না যে সামাজিক গণমাধ্যম একটি হাতিয়ার। কীভাবে সরঞ্জামটি ব্যবহৃত হয় তা আমরা স্থির করি। ভালো কাজ ও ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দিতে এটি ব্যবহার করুন; এর তরঙ্গায়িত প্রভাব প্রবল হতে পারে। তারা আপনার সম্পর্কে যাই বলুক না কেন খারাপ কথাগুলি এড়িয়ে চলুন!
চার. দুর্ভাগ্যক্রমে, আমাদের সমাজে যারা ব্যর্থ হয় তাদের জন্য সহনশীলতা কম। আসলে, সাফল্যের অনেক গল্প ব্যর্থতা দিয়ে শুরু হয়। ব্যর্থতা আপনাকে আরও কঠোর করে তোলে। এটি আপনাকে সঠিক দিকে চলতে সহায়তা করে। ব্যর্থতাকে গ্রহণ করে নিন আপনি যে চেষ্টা করছেন এটি তার প্রমাণ এবং এটিই সর্বশক্তিমানের জন্য যথেষ্ট!
পাঁচ. অতীত নিয়ে চিন্তা করে জীবন কাটাবেন না। আপনার ভুল থেকে শিখুন এবং সর্বশক্তিমান আপনাকে যে করুণা করেছেন তার সম্ভাবনা পুরোপুরি উপলব্ধি করে জীবন যাপন করুন। যাত্রাটি গুরুত্বপূর্ণ তবে শেষটি আরও বেশি জটিল। সব সময় হেদায়েত ও শক্তি প্রার্থনা করুন। সর্বশক্তিমান আমাদের সেরা ফলাফলটি দান করুন!
দ্রষ্টব্যঃ
আপনি বলুন, সত্যিই কি তোমরা সেই মহাপ্রভুকে অস্বীকার করছ! যিনি পৃথিবীকে মাত্র দুদিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার অংশীদার নির্ধারণ করছ? তিনি তো সমস্ত জগতের প্রতিপালক। যিনি পৃথিবীতে তার উপরাংশে পাহাড় স্থাপন করেছেন এবং জমিনের ভিতরাংশ বরকতপূর্ণ করেছেন আর ভূগর্ভে সুষমরূপে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছেন মাত্র চার দিনে। সব যাচনাকারীর জন্য সমানভাবে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন আর তা ছিল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।
(সুরা : ফুসিসলাত : ৯-১১)
বরং আমিই তাদেরকে এবং তাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে ভোগ-সম্ভার দান করেছিলাম; অধিকন্তু তাদের আয়ুষ্কালও হয়েছিল দীর্ঘ। তারা কি দেখছে না যে, আমি তাদের দেশকে চতুর্দিক হতে সংকুচিত করে আনছি; তবুও কি তারাই বিজয়ী? (সুরা : আম্বিয়া: ৪৪)
* লেখক: মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি * অনুবাদ: মাসুম খলিলী সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট