রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গ্যাস খনন ও উত্তোলন কোম্পানি গ্যাজপ্রম খনন করছে ভোলার ‘নর্থ-২ গ্যাস কূপ’, যার তত্ত্বাবধান করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স)। গতবছরের ডিসেম্বর থেকে এ কূপে খননকাজ শুরু হওয়ার পর দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস পাওয়া গেছে। ২৩ জানুয়ারি, সোমবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
সোমবার ভোলা সদরের পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামে এ কূপের সন্ধান পায় বাপেক্স। সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী মো. আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রকৌশলী আলী বলেন, দেশিয় জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানে সরকার আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছে। এর হিসেবে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে টবগী-১, ভোলা নর্থ-২ এবং ইলিশা-১ তিনটি কূপ খনন কার্যক্রম দ্রুম শেষ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর ভোলা নর্থ-২ কূপে কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে মাটির ৩ হাজার ৪২৮ মিটার গভীরতায় খনন কাজ শেষ হয়।
তিনি আরও জানান, আজ কূপের ডিএসটি শেষ করলে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এ কূপ থেকে প্রতিদিন ২০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব। এখানে কত পরিমাণ গ্যাসের মজুদ রয়েছে আগামী ৭২ ঘণ্টায় জানা যাবে।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র পরিদর্শনে এসে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী বলেছিলেন, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল তেল-গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনা যাচাই করতে ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলায় তেল গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। জরিপ কাজে ব্যয় হবে ২৬৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই আগামী অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে বাপেক্স।
‘নর্থ-২ গ্যাস কূপ’ ছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলের এ জেলায় এখন পর্যন্ত ৮টি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পায় বাপেক্স। এ পর্যন্ত দ্বীপজেলায় মোট মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৫ টিসিএফ ঘনফুট গ্যাস।
নতুন করে তেল-গ্যাস পাওয়া গেলে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হতে পারে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোয়। এতে জেলাগুলোর শিল্পায়ন হবে বলে জানিয়েছে বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪-৯৫ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুরে প্রথম গ্যাস আবিষ্কার হয়। পর্যায়ক্রমে সেখানে পাঁচটি ও জেলার আরও ৩টি স্পটে কূপ খনন করে বাপেক্স। চলতি বছর জুলাইয়ে আরও একটি কূপ খনন করবে সংস্থাটি।
এছাড়া জেলার চরফ্যাশন থেকে নিঝুম দ্বীপ পর্যন্ত ১২ এলাকায় গ্যাসের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ভূ-কম্পন বা সিসমিক জরিপ করবে বাপেক্স। সেখানেও বিপুল পরিমাণ গ্যাস পাওয়া আশা করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন।