অনুবাদ মাসুম খলিলী :
এক. সর্বশক্তিমান। যারা আমাদের ভুল বোঝাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাদের সামনে নীরব থাকা আমাদের জন্য সহজ করুন। আমরা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে পারি না বিশেষ করে যাদের একটি এজেন্ডা আছে। তাই তাদের মন্তব্য ও কর্ম উপেক্ষা করতে এবং আমাদের জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করুন। আমীন।
দুই. কষ্ট ব্যথা- এসব নিয়ে চিন্তা করবেন না। এর উপশম হবে। শুধু সেখান থেকে শেখা পাঠ মনে রাখবেন। আপনি এটি অতিক্রম করতে পারবেন কিন্তু আপনি ভুলবেন না। এটাই সময় এবং ধৈর্যের সৌন্দর্য।
তিন. আপনি জীবনে যা কিছু করে ফেলেছেন সেটি বিবেচ্য নয়, সর্বদা বিশ্বাস করুন যে আপনার রূপান্তর সম্ভব। এটি কেবল একটি মুহূর্ত পরিমাণ দূরে। সর্বশক্তিমান অপেক্ষায় আছেন আপনি কোন মুহূর্তে তাঁর দিকে ফিরছেন। তাঁর রহমত অপ্রতিরোধ্য, আপনি কখনই তা ভাবতে পারেননি। সুতরাং যদি আপনি তাঁর ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং আবার শুরু করেন তবে আপনার হারানোর কিছুই থাকলো না!
চার. কারো সাথে আপনি অন্যায় করেছেন জেনে আপনার সম্ভবত ভালো ঘুম আসছে না। আপনার সাথে কারো বিবাদ হলেই বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করুন।
পূনশ্চঃ
এক. আপনি যখন অন্যের প্রতি শ্রদ্ধার সাথে আচরণ করেন, সাহায্যের হাত বাড়ান এবং ভালো কাজ ছড়িয়ে দেন, তখন আপনি সত্যিকারের বিশ্বাসীর মূর্ত প্রতীক হন। আর আপনি যখন কারো জন্য প্রার্থনা করছেন তখন আন্তরিকভাবে তা করুন। তার মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করুন এবং কখনো খারাপ উদ্দেশ্য রাখবেন না। আমাদের প্রত্যেকের জন্য আমাদের প্রত্যেকের প্রার্থনা দরকার।
দুই. যে পৃথিবীতে চোখ জলসানো আলোকসজ্জা রয়েছে সেখানে আপনি কীভাবে ইতিবাচক থাকতে পারেন? আসুন এটি স্বীকার করি যে সময়ে সময়ে এটি বরং কঠিন হতে পারে। তবে মূল কথাটি হ’ল: আপনার কাছে যা আছে তার জন্য সর্বদা সর্বশক্তিমানকে ধন্যবাদ জানানো উচিত এবং আপনার সমস্ত প্রয়োজনের জন্য তাঁর উপর ভরসা করা উচিত। তিনি কি করতে পারেন সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ করবেন না!
তিন. বিলম্ব হওয়াটা জীবনের অংশ। এতে নিজেকে অভ্যস্ত করে নিন। সবকিছু আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী হবে এমন না। সর্বশক্তিমান যখন বিলম্ব করেন, তিনি সর্বদা একটি কারণে এটি করেন। সেটি আবার পাঠ করুন।
চার. সর্বশক্তিমানের কাছে আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য প্রার্থনা করতে থাকুন। সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কারণ আপনি ভাল কাজ করছেন কিন্তু আপনি যদি এটি মনোযোগ আকর্ষণের জন্য করে থাকেন তবে আপনি এটি ভুল কারণে করছেন।
পাঁচ. বিশ্ব যখন একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত তখন আপনি, তাদের মধ্যে থাকুন যারা নিজেরা নিজেদের সাথে অধিক ভালো হবার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। গতকালের চেয়ে আজ আপনি ভাল হোন। কঠোর পরিশ্রম করুন। নিজেকে উপরে উঠানোর জন্য অন্যকে কখনই নিচে নামাবেন না। মানুষ এর মাধ্যমে আপনাকে প্রত্যক্ষ করবে। আপনার যাদের সাথে দেখা হয় তাদের সকলের প্রতি সদয় হোন। সঠিক লোকেরা আপনাকে মূল্যায়ন করবে।
দ্রষ্টব্যঃ
তাদের (ইহুদিদের) ওপর অপমান ও অভাব লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও গজবের শিকার হয়েছে। কেননা, তারা আল্লাহর আয়াতের সঙ্গে কুফরী করেছে এবং নবীদের হত্যা করেছে, এটা ছিল তাদের নাফরমানি এবং তারা ছিল সীমালঙ্ঘকারী। (সূরা বাকারা: ৬১)
ইহুদিরা বলে, উজাইর আল্লাহর পুত্র, আর খ্রিস্টানরা বলে, (ঈসা) মাসিহ আল্লাহর পুত্র। এ সবই তাদের মুখের (বানানো) কথা। তাদের আগে যারা আল্লাহর অবাধ্য হয়ে গিয়েছিল, তাদের মতোই এরা কথা বলছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন! এরা বিভ্রান্ত হয়ে কোন দিকে যাচ্ছে? (সুরা তাওবাহ : ৩০)
তারা (ইহুদিরা) সবাই সংঘবদ্ধভাবেও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সমর্থ হবে না, কিন্তু শুধু সুরক্ষিত জনপদের ভিতরে অথবা দূর্গ-প্রাচীরের আড়ালে থেকে; পরস্পরের মধ্যে তাদের যুদ্ধ প্রচণ্ড। আপনি মনে করেন তারা ঐক্যবদ্ধ, কিন্তু তাদের মনের মিল নেই; এটা এজন্যে যে, এরা এক নির্বোধ সম্প্রদায়। (সূরা হাশর: ১৪)
যখনই তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালায়, আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন এবং তারা যমীনে ফিতনা ফাসাদ ও গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ভালোবাসেন না। (সূরা মায়েদা : ৬৪)।
তারা (ইহুদি) যেসব গৰ্হিত কাজ করত তা হতে তারা একে অন্যকে বারণ করত না। তারা যা করত তা কতই না নিকৃষ্ট। তাদের অনেককে আপনি কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন। তাদের অন্তর যা তাদের জন্য পেশ করেছে তা কত নিকৃষ্ট! যে কারণে আল্লাহ তাদের উপর রাগাম্বিত হয়েছেন। আর তারা আযাবেই স্থায়ী হবে। তারা আল্লাহতে, নবীতে (মুহাম্মাদ) ও তার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে বিশ্বাস করলে, ওদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না। কিন্তু তাদের অনেকে সত্যত্যাগী। হে নবী, আপনি ইহুদি ও মুশরেকদেরকে মুসলমানদের কঠোর শত্রু হিসাবে দেখতে পাবেন। (সূরা মায়েদা ৭৯-৮২)
* লেখক: মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি * অনুবাদ: মাসুম খলিলী সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট