ড. ইউনূসের সমর্থনে ১০ জুন আলতাব আলী পার্কে প্রবাসীদের গণ-জমায়েত

প্রবাসী বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে মঙ্গলবার সকালে লন্ডন আসছেন। প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ার লাইন্সের ফ্লাইটটি আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাকিংহাম প্যালেসে যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহন করবেন। এছাড়া রাজা তৃতীয় চার্লস এবং প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হবে। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘চ্যাথাম হাউস’ আয়োজিত এক সংলাপেও তিনি অংশ নেবেন।

বাংলাদেশের গর্ব নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো এবং দেশ পরিচালনায় সার্বিক সহায়তার জন্য বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ মিলে গঠন করা হয়েছে ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটি কোয়ালিশন’। রোববার বিকেলে বিপুল সংখ্যক প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে গঠিত সংগঠনের আহবায়ক মনোনীত হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা সিরাজ মোহাম্মদ হক। যুগ্ম আহবায়ক যথাক্রমে সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতা কে এম আবুতাহের চৌধুরী, ব্যারিস্টার সাইফুদ্দিন খালেদ, ব্যারিস্টার নাজির আহমদ, মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ, মহি উদ্দিন আলমগীর, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ জুনেদ ও মোঃ আনছার মিয়া। সদস্য সচিব মোহাম্মদ আইয়ুব করম আলী, অর্থ সচিব সলিসিটর মোহামাদ ইয়াওর উদ্দিন, স্টুয়ার্ট সচিব এম আব্দুস শুকুর, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সচিব সাংবাদিক সাঈদ চৌধুরী, মহিলা সচিব ডাক্তার শাহিন আক্তার-সহ ৬১ সদস্য কমিটি গঠন করা হয়।

রবিবার (৮ জুন ২০২৫) বিকেলে ইস্ট লন্ডনের গ্রেটারক্স স্ট্রীটের মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিউনিটি নেতা সিরাজ মোহাম্মদ হক। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মোহাম্মদ আইয়ুব করম আলী। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কে এম আবুতাহের চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ব্যারিস্টার নাজির আহমদ, মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ, সাংবাদিক সাঈদ চৌধুরী, সাবেক মেয়র শফিকুল হক, ব্যারিষ্টার খালেদ নূর, মহি উদ্দিন আলমগীর, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ জুনেদ, মোঃ আনছার মিয়া, সলিসিটর মোহামাদ ইয়াওর উদ্দিন, জয়নাল চৌধুরী, আবু সুলেমান মুরাদ, মুফতি শাহ সদর উদ্দিন, মাওলানা সাইদ তামিম আহমদ, এম এ রব, শাহ এ মালিক মর্তুজা, ডাক্তার গিয়াস উদ্দিন, হাফিজ মাওলানা ওয়াহিদ সিরাজী, সৈয়দ জিল্লুল হক, এম আব্দুস শুকুর, রিয়াজ আহমদ, ডাঃ শাহীন আক্তার, রেহেনা ইসলাম, মোহাম্মদ মইউর মিয়া, মোহাম্মদ নূরুল আলম, মোহাম্মদ আজম আলী, মোহাম্মদ ফারুক আহমদ, জি এম রাসেল, সাইদ মুস্তাক, মৌরিন আহমদ, রুহুল আমিন, সৈয়দ আল ফারুক, আনোয়ার হোসেন শাওন, মকসুদ চৌধুরী, ফায়াজ আহমদ, এম আবুল আসাদ, সৈয়দ মিসবাহ, সৈয়দ মোস্তাক, এস এস ইসলাম, আব্দুল কাহির, মাহবুব আলী, আফজল মিয়া, আমিনুর চৌধুরী, আতাউর রহমান, মোহাম্মদ এনামুল হক, আবুল হোসেন, কাজী মাওলানা ইমদাদুল হক, কাউন্সিলার ওসমান গনি, সাঈদ আলী, আব্দুল সুকর খালিসাদার, আফজল মিয়া, ফারুক আহমদ প্রমুখ।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে স্বাগত জানানোর জন্য ১০ জুন মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় আলতাব আলী পার্কে গণ জমায়েতের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত সভায় দলমত নির্বিশেষে দেশপ্রেমিক জনতাকে অংশ গ্রহনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সভায় বক্তারা বলেন, এক সংকটময় সময়ে ড. ইউনুস বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এই অর্থনীতিবিদ ক্ষুদ্রঋণের জনক ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। তার আধুনিক চিন্তাধারা ও সামাজিক উদ্যোগ সারা বিশ্বে দারিদ্র্য বিমোচনের মডেল হিসেবে স্বীকৃত।

অনুষ্ঠানে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে ড. ইউনুসকে আলোকবর্তিকা হিসেবে আখ্যায়িত করে বলা হয়, শুধুমাত্র ক্ষুদ্রঋণই নয়, তিনি সামাজিক ব্যবসা (Social Business) ধারণারও উদ্ভাবক। তার অর্থনৈতিক ভাবনা বিশ্বময় সাড়া জাগিয়েছে। আর এই মডেল বিভিন্ন দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে সফলতার নতুন মাত্রা সৃষ্টি করেছে। বিশ্ব ব্যবস্থায় ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব এক অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণের প্রবক্তা হিসেবে তিনি আরেকটি নোবেল পুরষ্কার পেতে পারেন।

উল্লেখ্য, নোবেল পুরস্কার ছাড়াও ড. ইউনূস বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য পুরস্কার ও স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। ১০টি দেশ থেকে বিশেষ সম্মাননা-সহ সর্বমোট ২৬টি দেশ থেকে ১১২টি পুরষ্কার লাভ করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো: যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (২০০৯), আমেরিকান কংগ্রেস প্রদত্ত অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল (যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩), ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গঠনে তার অবদানের জন্য ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ (১৯৯৪), মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারে অবদানের জন্য সিডনি শান্তি পুরস্কার (১৯৯৮), উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বেলজিয়ামের কিং বডুয়েন ডেভেলপমেন্ট প্রাইজ (১৯৯৮) ইত্যাদি।

(নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ের পর নরওয়ের অসলো থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী অ্যালেকজান্ড্রা প্যালেসে দুই সহস্রাধিক বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনার বক্তব্য)

সাঈদ চৌধুরী দৈনিক সময় ও মানব টিভি সম্পাদক, কবি ও কথাসাহিত্যিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *