অনুবাদ মাসুম খলিলী :
এক. আপনার জীবনে যদি ভুল মানুষ থাকে তবে আপনি দমবন্ধ বোধ করবেন। তবে হতাশ হবেন না। সর্বশক্তিমান সর্বজ্ঞ। তিনি তাদের সরিয়ে দেবেন এবং সঠিক ব্যক্তিদের আপনার পথে নিয়ে আসবেন। তিনি আপনাকে এর মাধ্যমে পথ দেখাবেন। এটা সময়ের ব্যাপার। আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে তাকে।
দুই. আপনি যেভাবে চান সেভাবে সব কিছুই হবে তা আশা করবেন না। ধৈর্য ধরতে শিখুন। আপনার কাছে যা কিছু আছে তার প্রশংসা করুন এবং সর্বদা সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ দিন, কৃতজ্ঞতা জানান।
তিন. আপনি মাঝে মাঝে হতাশ বোধ করবেন। আপনার মনে হবে আপনার চোখের সামনে সবকিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আপনি অনুভব করবেন যে আপনি নিজের জিনিসগুলি ঠিকঠাকমতো পরিচালনা করতে পারবেন না। আপনি অনুমানের উপর চলার মতো কেউ নন! আপনি সর্বশক্তিমানকে সব কিছু বলেন, তিনি আপনার এই বলা বা চাওয়াকে পছন্দ করেন। দৃঢভাবে, আস্থার সাথে তার কাছেই বলুন। আপনার ভার তিনি তুলে নেবেন!
পূনশ্চঃ
এক. আপনি অত্যন্ত জ্ঞানী হতে পারেন কিন্তু যদি আপনার কোন সহানুভূতি না থাকে এবং আপনি সাহায্যের হাত বাড়াতে ইচ্ছুক না হন, তাহলে আপনার মূল্যবোধগুলি আপনাকে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
দুই. আপনার প্রত্যাশাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। কারো কাছ থেকে কিছু আশা করবেন না। আপনার দয়ার বিনিময়ে আপনি যা পান তা বোনাস। শুধুমাত্র তাঁর জন্য কাজ করুন. আপনার পুরস্কার একমাত্র তাঁরই কাছে।
তিন. সর্বশক্তিমান আল্লাহ। দেড় মাসের এই মর্মান্তিক ট্র্যজেডির অবসান হোক। ফিলিস্তিনের জনগণকে রক্ষা করুন এবং তাদের জীবন চালানোর পথ তৈরি করুন। আপনার রহমত বিরাজ করুক, এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে মানুষের জন্য স্বস্তি ও নিরাপত্তা আনুক। আমীন।
চার. আপনার সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে তার ব্যাপারে কম ক্রুদ্ধ এবং প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ার জন্য নিজেকে প্রশিক্ষণ দিন। প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি প্রতিক্রিয়া, প্রতিটি সমালোচনা; এগুলিকে আপনার চলার পথে হজম করে নিন। মনে রাখবেন, নীরবতা প্রায়শই অনেক কিছু বলে যায়।আপনার শক্তি সঞ্চয় করুন সেই কাজের জন্য যেখানে সত্যিকার অর্থে আপনার জড়িত হওয়া দরকার!
পাঁচ. অন্যেরা যা করেন তার প্রতি অন্ধ হন এবং নিজের প্রতি মনোনিবেশ করুন। এর মধ্যেই রয়েছে প্রজ্ঞা। এতে আপনি কেবল আপনার এই জীবনেই শান্তি পাবেন না, আপনাকে জান্নাত দিয়েও পুরস্কৃত করা হবে। পৃথিবীটি এইরকম যে আমরা অন্যের যা আছে, অন্যের জীবন, অন্যরা কী করে তার প্রতি বেশি বেশি মনোযোগ দেই। এসব থেকে নিবৃত হোন এবং নিজের কাজে মনযোগ দিন!
ছয়. অন্যের ক্রমাগত দোষ খোঁজা এবং তাদের উপর নিজেকে তুলে ধরার বিষয়টিকে বিনোদনে পরিণত করবেন না। এর পরিবর্তে নিজের দিকে ফিরে যান। নিজেকে আরো ভালো বা উন্নত করার জন্য আপনি অনেক কিছু করতে পারেন। আপনার নিজের ভুলের প্রতি অন্ধ হবেন না।
দ্রষ্টব্যঃ
তিনিই সেই সত্তা, যিনি মানুষকে হাসান এবং কাঁদান। তিনিই তো মৃত্যু দেন, জীবন দেন। আর, তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল—পুরুষ ও নারী’ (সুরা নাজম : ৪৩-৪৫)
* লেখক: মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি * অনুবাদ: মাসুম খলিলী সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট