বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, নেতা নয়, নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। ক্ষমতা নয়, দুনিয়াতে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করতে আমরা বদ্ধপরিকর। জামায়াত আল্লাহর কুরআন বিজয় করতে চায়। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ময়দানে কাজ করার আহবান জানান।
আমীরে জামায়াত বলেন, তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন করার জন্য আল্লাহ আমাদের ওপর সিয়ামকে অত্যাবশ্যকীয় বা ফরজ করে দিয়েছেন; তাই এ মোবারক মাসে যথাযথভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে হবে। যাকাত ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, শাড়ি,লুঙ্গি বা খাদ্যদ্রব্য নয় বরং এমনভাবে যাকাত দেওয়া উচিত যাতে একজন ব্যক্তি স্বাবলম্বী ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইসলামী রাষ্ট্র না হওয়ায় সরকারী যাকাত ব্যবস্থাপনায় জনগণের আস্থা নেই তাই মানুষ সরকারকে যাকাত দিতে চায় না।
ডা. শফিকুর রহমান মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজধানীর শ্যামলীস্থ বাদশাহ ফয়সল ইন্সটিটিউটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মেডিকেল থানা আয়োজিত চিকিৎসকদের সন্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মেডিকেল থানা আমীর ডা. স ম খালিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, এনডিএফ সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, থানা সহকারী সেক্রেটারি ডা.হাসানুল বান্না । উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর নায়েবে আমীর আ.রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত, জিয়াউল হাসান, ডা. আ. জলিল প্রমূখ।
আমীরে জামায়াত বলেন, পবিত্র মাহে রমযান একটি মোবারক মাস। রাসূল (সা.) রজব মাস শুরুর সাথে সাথে এ বলে দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে রজব ও শাবান মাসের বারাকাহ ও কল্যাণ নিশ্চিত করো এবং রমযান পর্যন্ত আমাদেরকে পৌঁছিয়ে দাও।’ কারণ, হাদিসে রাসূল (সা.)-এ রমযান মাসের প্রথম ১০ দিন রহমত, মধ্যের ১০ দিন মাগফিরাত তথা গোনাহ মাফ, আর শেষ দশকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। হাদিসে রাসূল (সা.)-এর অন্যত্র বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রমযান মাসে সিয়াম পালন করবেন আল্লাহ তার পূর্বের সকল গোনাহ মাফ করে দেবেন। মূলত, মাহে রমযান আত্মশুদ্ধি, তাক্বওয়া ও তাজকিয়া অর্জনের মাস। তাই এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তিনি মাহে রমযানের শিক্ষা বাস্তব জীবনের প্রতিফলন ঘটাতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, পবিত্র রমযান মাসেই মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল হয়েছিলো বলেই এ মাসের এতো মহাত্ম ও মর্যাদা। মূলত, এ মাসকে কুরআনের মাসও বলা হয়। তাই মানবজীবনের সকল সমস্যার সমাধান করতে হবে কুরআনের আদর্শের ভিত্তিতেই। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠায় চিকিৎসকদেরকে দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণের আহবান জানান।
মোবারক হোসাইন বলেন, রমযানে সিয়াম পালন শুধু আমাদের জন্য নয় বরং পূর্ববর্তীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ছিল। আমরা যাতে তাক্বওয়া অর্জন করতে পারি এজন্যই রোজা আমাদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। তাই পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে তাক্বওয়ার সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. স ম খালিদুজ্জামান বলেন, আমরা সকলেই আল্লাহর বান্দা। তাই চিকিৎসাকে শুধু পেশা হিসাবে গ্রহণ করলে চলবে না বরং তা মানবসেবা হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। তিনি চিকিৎসকদের সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করার আহবান জানান।