ভারতের উত্তর প্রদেশে ইসলামিক স্কুল বা মাদ্রাসাকে বন্ধ ঘোষণা করেছে আদালত। এতে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ রাজ্যের মোট ২৪ কোটি মানুষের মধ্যে এক পঞ্চমাংশ হলেন মুসলিম।
উত্তর প্রদেশ রাজ্যে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের প্রধান ইফতিখার আহমদ জাভেদ বলেছেন, এলাহাবাদ হাই কোর্টের এ রায়ে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ২৭ লাখ শিক্ষার্থী, ১০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ২৫ হাজার মাদ্রাসা।
শুক্রবারের দেয়া আদালতের রায়ে বলা হয়, সাংবিধানিকভাবে ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এখানে মাদ্রাসা শিক্ষা সংবিধানের লঙ্ঘন। এই শিক্ষাকে বাতিল করে শিক্ষার্থীদেরকে প্রচলিত স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেয় আদালত। আইনজীবী অংশুমান সিং রাঠোরের এক আপিল আবেদনে আদালত ওই রায় দেয়।
বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী এবং বিবেক চৌধুরী তাদের লিখিত রায়ে বলেছেন, ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে যাতে ভর্তি থেকে বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকে।
এ বছর এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে ভারতে। এতে নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির কিছু সদস্য এবং সমমনাদের বিরুদ্ধে ইসলামবিরোধী ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্য এবং নজরদারিকে উৎসাহিত করার জন্য অভিযোগ তুলে আসছেন মুসলিম ও অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো।
ভারতে ধর্মীয় বৈষম্য থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে মোদি সরকার। বিজেপি বলেছে, ঐতিহাসিক যেসব ভুল ছিল তা পরিবর্তন করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১৯৯২ সালে ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত বাবরি মসজিদের স্থানে হিন্দুদের জন্য একটি মন্দির উদ্বোধন করেছে।
উত্তর প্রদেশে মাদ্রাসা শিক্ষাকে অনুমোদন বা পরিচালনার জন্য একটি আইন করা হয় ২০০৪ সালে। নতুন রায়ে সেটা বাতিল হয়ে গেল। এর ফলে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারের থেকে আরো দূরে সরে যেতে পারেন মুসলিমরা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।