সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস মানবিক এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, আমি আশা করি কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল রোগীদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে। বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় রোগীদের জন্য এটি একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ১০তলা ভবন সমৃদ্ধ এই কিডনি ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এই হাসপাতাল সাশ্রয়ী ও আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা দেয়া এবং রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর তেমুখী-বাদাঘাট-বাইপাস সংলগ্ন নাজিরেরগাঁওয়ে এই হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, অনেকগুলো আলোকিত উদ্যোগী প্রাণ মানুষ সেবা করার মন-মানসিকতা নিয়ে কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেটে মিলিত হয়েছেন। সম্মিলিত ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে সৃষ্টি এই প্রতিষ্ঠান সেবায় রোলমডেল হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করি। দেশের মানুষকে এই ভালো উদাহরণগুলো রীতিতে পরিণত করতে হবে। তাহলে সহজেই বাংলাদেশ তার গন্তব্যে পৌঁছে যাবে।
দায়িত্বের জায়গা থেকে এই অসাধারণ কাজের সঙ্গে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হওয়া একটা বড় পাওয়া বলে উল্লেখ করেন শারমীন এস মুরশিদ। তিনি বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় অনেক সীমাবদ্ধতার কারণে ভালো কাজের সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাইলেও সহজে হওয়া যায় না। সরলরেখায় শুধু পিপিপি হলেই সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশনের মতো চমৎকার কিছু ঘটবে এমনটি কিন্তু নয়। কয়েককজন অসাধারণ মানুষের তীব্র ইচ্ছার কারণে এ হাসপাতালটি বাস্তব চিত্রটা পেয়েছে।
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত ছিয়াত্তর হাজার প্রতিষ্ঠানকে সুব্যবস্থাপনায় আনা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানকে সুগঠিত করতে হলে কয়েকজন সুগঠিত মানুষ লাগে। কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল সিলেটকে এত উজ্জ্বলভাবে উপস্থাপন করার জন্য এধরনের নিবেদিত প্রাণ নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-উর রশিদ, মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান, বীর উত্তম, অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক কর্নেল এম এ সালাম (অব.) প্রমুখ।
হাসপাতাল ভবনটি নির্মাণে ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ২০ কোটি টাকা দিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ভবন নির্মাণ ছাড়াও হাসপাতালের যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার অর্থ বিভিন্ন অনুদান থেকে ব্যয় করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সিলেটের ব্যবসায়ী জুবায়ের আহমদ চৌধুরী প্রায় ৮ কোটি টাকা মূল্যের ১১০ শতক ভূমি বিনামূল্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দান করেছেন। – বাসস ও নিজস্ব সংবাদদাতা