মাগুরায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আছিয়ার জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছে। দু’বার জানাজা শেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সোনাইকুণ্ডী সম্মিলিত ঈদগাহ ও কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় অংশ নিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমির আল্লামা মামুনুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন-সহ বিএনপি, জামায়াত, খেলাফত, জমিয়ত বিভিন্ন দলের অনেক নেতা-কর্মী।
আছিয়ার মরদেহের সঙ্গে মাগুরায় গেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। সেখানে মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম-সহ স্থানীয় প্রশাসনের অনেকেই ছিলেন। পরে তারা আছিয়ার জানাজায় যোগ দিয়েছেন।
ভিডিও: https://youtu.be/a3KKu8Lxz-4?si=XvBuZYEprL8YVzKe
সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় আছিয়ার মরদেহ ঢাকা থেকে মাগুরায় নেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাতটায় মাগুরা নোমানী ময়দানে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাদ এশা শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম সোনাইকুণ্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। জানাজা শেষে শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানাজার আগে মাগুরার বিভিন্ন স্থান থেকে শিশু আছিয়াকে একনজর দেখার জন্য শত শত মানুষ ছুটে আসেন তাদের বাড়িতে। সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পুরো এলাকা জুড়ে চলছে শোকের মাতম। আছিয়াকে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। রাত পৌনে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় শিশুটি। পরদিন তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
শুক্রবার রাতে আছিয়াকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। শনিবার সন্ধ্যায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। রোববার শিশুটিকে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে নেওয়া হয়, তবে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী জানান, আসামিদের রিমান্ড চলছে। আছিয়ার বড় বোনের শ্বশুর মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামের হিটু শেখ (৪২), দুলাভাই সজীব শেখ (২২), তার বড় ভাই রাতুল শেখ ও রাতুলের মা জায়েদা খাতুন এখন পুলিশ হেফাজতে।