শিল্পীর মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাম্প্রতিকতম মূল্য দিয়েছেন কুণাল কামরা এবং মুম্বইয়ের একটি কমেডি ক্লাব। ভারতের এই স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান একটি অনুষ্ঠানে মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী, তথা শিবসেনার নেতা একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে গান বাঁধলেন। শাহরুখ খানের ৯০ দশকের জনপ্রিয় গানের প্যারোডি। নাম না করেই এই মন্ত্রী মহাশয়কে তিনি ‘গদ্দার’ বা ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে বিঁধলেন। ভিডিও প্রকাশ্যে আসার দুদিনের মধ্যেই শিন্ডে, তাঁর দলের নেতা-সমর্থকরা, এমনকি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত এই কমেডিয়ানের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন।
তবে ঘটনাটি এখানে থামেনি। সোশাল মিডিয়ায় ক্রমাগত হুমকির সুনামি পেরিয়ে যেই কমেডি ক্লাবে এই অনুষ্ঠানটি হয়েছিল, সেটিকে ভাঙচুর করে এলেন শিন্ডে সমর্থকেরা। কুণালের নামে পুলিশ কেস, মামলা করা হলো। শেষ পর্যন্ত আদালতের রায় আপাতত খানিকটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন তিনি।
মুক্ত চিন্তার স্বাধীনতা শহুরে প্রগতিশীল সমাজে শুনতে যতটা ভালো লাগে, ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রটা ততটা সরল নয়। গণতান্ত্রিক, এমনকি পাশ্চাত্যের তথাকথিত এগিয়ে থাকা দেশগুলিতেও ফাঁক ফোকর দিয়ে কণ্ঠরোধের কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ে। শিল্প হোক বা রাজনীতি, ভারতবর্ষে (এমনকি অন্যান্য দেশেও) মত প্রকাশের স্বাধীনতা আসে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণের সঙ্গে। “নিজের মত নিজ দায়িত্বে প্রকাশ্য করবেন। রাষ্ট্রদ্রোহিতার কেস খেতে পারেন।” ভারতের সংবিধানের ১৯(১)(এ) প্রতিটি দেশবাসীকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। তবে তার সঙ্গেই থাকে একটা ফুটনোট। সংবিধানের ১৯(২)তে বলা আছে মত প্রকাশের এই স্বাধীনতার উপর সরকার নিষেধাজ্ঞা লাগাতে পারে, যদি আপনার মতকে তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব বা জনহিতের পরিপন্থী, শালীনতা বা নৈতিক বোধের বিপ্রতীপে বলে মনে হয়। শময়িতা চক্রবর্তী, কলকাতা, ডিডাব্লিউ