সাঈদ চৌধুরী
ব্রিটেনে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য শীর্ষক ইসলামিক কনফারেন্স বুধবার (২২ মে ২০২৪) বিকেলে লন্ডন টটেনহামের মসজিদ আয়েশা মিলনায়তনে আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। মুসলিম কমিউনিটি এসোসিয়েশন (এমসিএ) লন্ডন নর্থওয়েস্ট রিজনের হেকনী ব্রাঞ্চ আয়োজিত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট খ্যাতিমান আইনজীবী ও মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব ব্যারিষ্টার হামিদ হোসাইন আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমসিএ সোসিয়াল ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি ফজলুল করিম শাহজাহান।
শাখা সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি বদরুল ইসলামের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মসজিদ আয়েশা টটেনহামের ইমাম শায়েখ সায়েম নুরুল রহমান চৌধুরী ও সাবেক ইমাম শায়েখ এএইচএম আব্দুল মোহাইমিন।
কনফারেন্সের প্রধান অতিথি ব্যারিষ্টার হামিদ হোসাইন আজাদ ব্রিটেনে শক্তিশালী মুসলিম কমিউনিটি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, একটি ন্যায়সঙ্গত এবং প্রগতিশীল সমাজের জন্য আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। সম্প্রদায়ের মধ্যে সক্রিয়তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বিশ্লেষণ করে বাস্তবতা সম্পন্ন অগ্রগতির জন্য যৌথ প্রয়াসের উপর তিনি জোর দেন।
এমসিএ প্রেসিডেন্ট মহাগ্রন্থ আল কুরআনের সূরা বাকারা থেকে উদ্ধৃত করেন। যেখানে আল্লাহপাক বলেছেন – আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী উম্মত বানিয়েছি, যাতে তোমরা মানুষের উপর সাক্ষী হও এবং রাসূল সাক্ষী হন তোমাদের উপর। আর যে কিবলার উপর তুমি ছিলে, তাকে কেবল এ জন্যই নির্ধারণ করেছিলাম, যাতে আমি জেনে নেই যে, কে রাসূলকে অনুসরণ করে এবং কে তার পেছনে ফিরে যায়। যদিও তা অতি কঠিন (অন্যদের কাছে) তাদের ছাড়া যাদেরকে আল্লাহ হিদায়াত করেছেন এবং আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তোমাদের ঈমানকে বিনষ্ট করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল, পরম দয়ালু।
ব্যারিষ্টার হামিদ আজাদ বলেন, প্রথমত আমাদের দায়িত্ব হলো ইসলামের শিক্ষা মেনে চলা। এটিই চরিত্রের সংস্কার ও পরিমার্জন সাধন করে। দ্বিতীয়টি হল ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজে নিষেধ করা। আর এটা হল সমাজ সংস্কার। আমাদের মনে রাখতে হবে- নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন না করে। তাই সাধ্যমত চেষ্টা করুন এবং বলুন, আমার সালাত, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও আমার মরণ সবই বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য।
অমুসলিম সমাজে মুসলমানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে এমসিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসলামের প্রকৃত প্রতিনিধি হিসেবে মুসলমানদেরকে নিজ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অমুসলিমদের ইসলাম সম্পর্কে অবহিত করা এবং ভুল বোঝাবুঝি দূর করার চেষ্টা করা অপরিহার্য। এক্ষেত্রে সকল মুসলমানদের সংগঠিত করা, ভাষা, বর্ণ, জাতি, সংস্কৃতি, জাতীয়তা বা শ্রেণী নির্বিশেষে মুসলমানদের মধ্যে প্রকৃত ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলা, জ্ঞান অন্বেষণের বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে সম্প্রদায়ের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং তা শেখার সুবিধা প্রদান করা, ব্যাপক জ্ঞান, চরিত্র ও ব্যক্তিত্বের প্রশিক্ষণ প্রদান করা, যাতে আমরা সকলে সম্প্রদায়ের সেবা করতে সক্ষম হই।
সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, ন্যায়ের নির্দেশ পালন এবং সামাজিক কুসংস্কার দূর করার চেষ্টা করা, মুসলিম ও অমুসলিমদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ, ধর্মীয় ও অন্যান্য বৈষম্য দূর করার সংগ্রামে সহযোগিতা করা উচিত। বক্তারা জাতি, সংস্কৃতি এবং অন্যান্য ভেদাভেদ নির্বিশেষে সবার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করার আহবান জানান।