রাষ্ট্রপতি পদে দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আজই শেষ দিন। প্রেসিডেন্ট পদে আর কোন দল মনোনয়নপত্র জমা না দেয়ায় আগামীকালই দেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪শে এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩শে এপ্রিল শেষ হবে।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, ‘এখন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। এটাই মহান আল্লাহর ইচ্ছা।’
এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের দফতরে যান এবং মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব ছিলেন। চুপ্পু এক পুত্রসন্তানের বাবা।
কর্মজীবনে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮০ সালে আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৮২ সালে বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডারের (বিচার) জন্য নির্বাচিত হয়ে মুন্সেফ (সহকারী জজ) পদে যোগ দেন। তিনি যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা ও দায়রা জজ পদে দায়িত্ব পালন করে ২০০৬ সালে অবসরে যান।
বিচারিক কাজের পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডেস্ক অফিসার হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের ১৪ মার্চ তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০১৬ সালে অবসরে যান। বর্তমানে তিনি ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চুপ্পু। দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বব্যাংকের উত্থাপিত পদ্মাসেতু সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেন সাহাবুদ্দিন। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণে তার প্রেরিত তদন্ত প্রতিবেদন কানাডা কোর্টে সমর্থিত হয়।
রাজনৈতিক জীবনে সাহাবুদ্দিন পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে সংঘটিত বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পর কারাবরণ করেন। তিনি আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।