দুই হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা অনেকটাই বাড়াবে

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

হেজবোল্লা নেতা শুকুর ও হামাস নেতা হানিয়ার হত্যার পর দুই সংগঠনে মধ্যপন্থিদের তুলনায় চরমপন্থিদের গুরুত্ব বাড়বে।
হেজবোল্লা ও হামাস নেতার মৃত্যুর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরো প্রবল হলো।

মঙ্গলবার ইসরায়েল জানিয়েছে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে তারাই হেজবোল্লা কম্যান্ডার শুকুরকে হত্যা করেছে।

বুধবার হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ইরানে খুন গেছেন। ইতিপূর্বে ইসরায়েল হানিয়াকে তাদের একজন ‘টার্গেট’ বলেছিল। তবে এখনো পর্যন্ত হানিয়ার মৃত্যু নিয়ে ইসরায়েল কোনো কথা বলেনি, তবে অভিযোগের আঙুল তাদের দিকেই রয়েছে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা ইতিমধ্যে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, হানিয়ার হত্যার তীব্র প্রতিক্রিয়া হবে।

ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া হতে পারে

ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অফ ফরেন রিলেশনসের মধ্যপ্রাচ্য-গবেষক কেলি পেটিলো বলেছেন, ”এই দুই হত্যাকাণ্ডের প্রভাব গোটা অঞ্চলের উপর পড়বে।” ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ”ঠিক কী প্রভাব পড়বে তা এখনই বলা কঠিন, তবে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকা উচিত।”

তিনি বলেছেন, ”হানিয়ার মৃত্যুর পর ইসরায়েল হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে শেষ করে দিলো। এই রাজনৈতিক নেতারা ছিলেন মধ্যপন্থি। কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা করছে, তাতে হানিয়ার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।”

কেলির মতে, ”এখন সামরিক শাখার নেতারা আরো বেশি করে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন পাবেন। তারাও বলতে পারবেন, হানিয়া আলোচনার রাস্তায় গেছিলেন। তার কী হাল হলো তা দেখা যাচ্ছে।”

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় ধাক্কা

চীনও একটা প্রয়াস করছিল। তারা ১৪টি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর মধ্যে আলোচনার ব্যবস্থা করেছিল। যুদ্ধ পরবর্তী গাজা কে শাসন করবে, তা নিয়ে একটা মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল। হানিয়ার মৃত্যু তাতেও প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া হামাস যাদের বন্দি করে রেখেছে, তাদের মুক্তির উপরেও এর প্রভাব পড়তে পারে।

জেরুসালেমে হিব্রু ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সাইমন উলফগ্যাং ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ”হানিয়ার মৃত্যুর প্রভাব কী হবে, তা এখনই আন্দাজ করাটা কঠিন। তবে বন্দিমুক্তি নিয়ে আলোচনা একেবারে শেষ পর্যায়ে ছিল। এই হত্যাকাণ্ড তার উপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে হচ্ছে।”

হেজবোল্লা ও ইরানের উপরও প্রবল চাপ

কেলি পেটিলো বলেছেন, ”শুকুর ছিলেন হেজবোল্লার দুই নম্বর নেতা। ফলে তার হত্যার পর হেজবোল্লা প্রত্যাঘাত করতে চাইবে।” তার মতে, ”হেজবোল্লা ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত বাড়বে তাই নয়, হেজবোল্লা নব উদ্যমে এই সংঘাতের মধ্যে নিজেদের জড়াতে পারে।”

সাইমন উলফগ্যাং বলেছেন, ”বহু বছর ধরে হোজবোল্লা ও হামাসকে সমর্থন করছে ইরান। তেহরানে হানিয়ার মৃত্যু ইরানকে ধাক্কা দেয়ার মতো ঘটনা। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সময় এটা ঘটলো। এটাও দেখানো হলো, ইরান তার অতিথিকেই নিরাপত্তা দিতে পারে না।”

পেটিলো বলেছেন, ”ইরানের মাটিতে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তাই ইরান এখন প্রত্যাঘাত করতে চাইবে। তাদের দিকে এখন নজর থাকবে।” – ডিডাব্লিউ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *