ইলিয়াস হোসেনের সাথে লাইভে এসে শেখ পরিবারকে হত্যার বিবরণ দিলেন রাশেদ চৌধুরী

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের সাথে লাইভে এসে মুখ খুললেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এম রাশেদ চৌধুরী বীর প্রতীক। জানালেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিভাবে শেখ পরিবারের পতন ঘটে। সেদিন শিশু রাসেলও এই হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই পায়নি। রেডিওতে ঘোষণা হয়, শেখ মুজিব ইজ ডেড। তারপর চিত্র বদলে যায়।

রাশেদ চৌধুরী বললেন, সারা দেশে মানুষের আনন্দ উল্লাশ ঢেউ খেলেছে। একটা লোকও শোক প্রকাশ করেনি। কেউ ইন্না-লিল্লাহ পড়েনি।

২৪ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে ইলিয়াস হোসেনের লাইভে যুক্ত হন সাবেক এই সামরিক কর্মকর্তা। কীভাবে শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল তা বিশদভাবে আলোচনা করেন তিনি। ৭৫ পূর্ব দুর্ভিক্ষ ও লুটপাটের কারণে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী সৈনিকেরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বলে জানান।

তার মতে, ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের পর ক্ষোভের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। নানা কারণে একদল দেশ প্রেমিক সেনা কর্মকর্তা একশনে যায়। শেখ মুজিবের বাসা, সেরনিয়াবাদ, রেডিও স্টেশন ও শেখ মনির বাসাকে টার্গেট করা হয়। ১৫ আগস্টের অপারেশনের নেতৃত্বে ছিলেন কর্ণেল (অব.) ফারুক, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের একত্রিত করার দায়িত্বে ছিলেন কর্ণেল (অব.) রশিদ। মেজর ডালিম রেডিও স্টেশন ও সেরনিয়াবাদ বাসার দায়িত্বে ছিলেন, আর তিনি (রাশেদ চৌধুরী) ছিলেন রেডিও স্টেশনে ডালিমের অধীনে।

রাশেদ চৌধুরী বলেন, মুজিবকে হত্যার কোনো প্ল্যান ছিল না; পরিকল্পনা ছিল তাকে অ্যারেস্ট করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে কোর্ট মার্শাল করা। রশিদ ও ফারুক ছিলেন অরিজিনাল প্ল্যানার।

রাশেদ চৌধুরী আরো জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রশিদ খন্দকার মোশতাককে নিয়ে রেডিও স্টেশনে আসেন এবং গার্ড অব অনার দেওয়া হয়, কারণ তিনি তখন বাংলাদেশের নতুন প্রেসিডেন্ট। এরপর রেডিও স্টেশনটি নতুন সরকারের হেডকোয়ার্টার হয়ে ওঠে।

মেজর বজলুল হুদার স্টেটমেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে রাশেদ চৌধুরী বলেন, শেখ কামাল স্টেনগান নিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে নিচে আসেন এবং তার স্ত্রী সুলতানা অটোমেটিক রাইফেল দিয়ে দোতলা থেকে নিচে গুলি করতে শুরু করেন। এতে এক সিপাহী নিহত হন, কয়েকজন আহত হন, যা দেখে অন্যান্য সিপাহীরা ক্ষেপে যান।

শেখ রাসেলকে কেন হত্যা করা হলো জানতে চাইলে রাশেদ চৌধুরী বলেন, ‍মুজিবের বাসা থেকে গোলাগুলি শুরু হলে কয়েকজন সিপাহী জানালা দিয়ে গ্রেনেড ড্রপ করে। ওই গ্রেনেড বাস্ট করে বাকি সবাই একসঙ্গে মারা যায়। রাসেল নিচে আসেনি। আলাদা করে তাকে কেউ মারেনি।

রাশেদ চৌধুরী মনে করেন, মুজিবের মৃত্যু তার নিজের কারণেই হয়েছে। তার ৪৪ মাসের শাসনে দেশের যে অবস্থা হয়েছিল, সে কারণেই তার মৃত্যু অনিবার্য ছিল। আর শেখ মুজিবকে জীবিত রেখে কোনো পরিবর্তন আনা সম্ভব ছিল না বলে তখন সবাই মনে করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *