বিপ্লব কি! কাকে বলে বিপ্লব?
প্রশ্নটি নিয়ে গেলাম আইনের বাড়ি
জিজ্ঞেস করলাম- কাকে বলে বিপ্লব?
গলা খাঁকিয়ে আইন মশাই বললেন-
নিয়মের রশি কানে পেঁচিয়ে নিজস্ব এজেন্ডা উদ্ধারই হলো বিপ্লব!
বিস্ময়ে হা হয়ে আমি ভাষাহীন
চললাম স্বরাষ্ট্রের কুটিরে
তিনি আইনি পোশাকধারীদের নিশ্ছিদ্র পাহারায় দিব্যি সহাস্য!
বললাম- জানতে চাই, বিপ্লবের সাথে দেখা হয়েছে আপনার?
বললেন- হুম দেখা হয়েছে তো বটে! সেই তো বলে দিলো-
সবচেয়ে বড় অপরাধীদের পালানোর পথ নির্বিঘ্ন করে কম অপরাধীদের জেলে পুরার তরিকা!
আমি তখনও ভাষাহীন!
গেলাম বাণিজ্যের বাড়ি
একটিই জিজ্ঞাসা- আপনার বাড়ি এসেছে বিপ্লব?
বললেন- এখানে বিপ্লবের কাজ কি!
নিত্যপণ্যের শরীরে আগুন যেনো ক্রমাগত উত্তাপ ছড়ায়
এবং মধ্যস্বত্তভোগীরা কর্ম সম্পাদনে যেনো চমৎকার নিরাপদ থাকে
এটিই তো পেয়েছি বিপ্লবের উসিলায়!
সংস্কৃতির নিবাসে গেলাম
বললাম- বিপ্লব কি এসেছিলো সংস্কৃতির বাড়ি?
বললেন- এখানে বিপ্লবের কি দরকার!
সংস্কৃতির খোলা বাজারে আমাদের ক্রেতা বিক্রেতা নির্দিষ্ট!
যে যেখানেই থাকি আমাদের লেজ এক জায়গায় বাঁধা!
বিশ্বাস অবিশ্বাসের ধার আমরা ধারি না।
গেলাম বিপ্লব চব্বিশের এক দৃষ্টিহীনের বাড়ি
বললাম- বিপ্লব কি দেখতে আসে আপনাকে?
বললেন- আমার দৃষ্টি নিয়ে সেই যে চলে গেলো বিপ্লব আর আসেনি কোনোদিন!
মনটি বড় গুমরে উঠলো
আমি এখন কোথায় খুঁজি বিপ্লবের চেতনাধারী দুঃসাহসী কাউকে!
এক এক করে ক্ষমতার চেয়ারগুলো দেখলাম!
না কোনো চেয়ারই বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ কিংবা উজ্জীবিত অথবা সতর্ক নেই!
প্রতিটি চেয়ারই একধরণের আয়েশি ভঙ্গিতে উদাস!
ভগ্নহৃদয়ে চললাম সংবিধানের বাড়ি
বাড়িটি চকচকে হলেও বড়ই ঠুনকো
সারা শরীরে কাটাকুটির দাগ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মৃত আত্মা
তবুও জিজ্ঞেস করলাম- বিপ্লব কোথায় ?
না, মুখে কোনো জবান নেই তার
একটি ভাঁজ করা পোস্টার মেলে ধরলো
আমার চোখের সম্মুখে
পরিস্কার লেখা – এ সংবিধানই হলো বিপ্লবের কবর!
আমার তনু মনে তখন নতুন জিজ্ঞাসা-
তাহলে কি বহাতে হবে আরেকটি বিপ্লবের হাওয়া!