৫৬ শতাংশ যুক্তরাজ্যবাসী ইসরাইলে অস্ত্র রফতানির বিপক্ষে

যুক্তরাজ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

সাঈদ চৌধুরী

জনপ্রিয় পোলিং ফার্ম ‘ইউগভ’ (YouGov) দ্বারা পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ ভোটার ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করার পক্ষে। এক্সক্লুসিভ এই সমীক্ষায় ৫৬ শতাংশ গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলে অস্ত্র রফতানির বিরুদ্ধে মতামত জানিয়েছেন। এটা দেশটির প্রতি ব্রিটেনের জনগণের সমর্থন হারানোর সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। জরিপে ৫৯ শতাংশ ভোটার বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।

রাজনৈতিক দলের মধ্যে অস্ত্র রফতানি নিষেধাজ্ঞার পক্ষে রয়েছেন ৭১ শতাংশ লেবার ভোটার। একইভাবে লিবারেল ডেমোক্র্যাট ভোটারদের ৭০ শতাংশ অস্ত্র রফতানি নিষেধাজ্ঞার পক্ষে। তবে কনজারভেটিভ পার্টির ৩৮ শতাংশ নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করে এবং ৩৬ শতাংশ অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে।

ইসরায়েল মূল মিত্র রাষ্ট্রগুলিতে জনসমর্থন হারাচ্ছে কিনা তার প্রথম আপ-টু-ডেট মূল্যায়নের এই গবেষণাটি প্রমান করে যে, যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন ইসরায়েল সরকার গাজায় অব্যাহত ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে।

এই জরিপটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় সাতজন সাহায্য কর্মী নিহত হওয়ার আগে পরিচালিত হয়েছিল। এখন জনগণ আরো বেশী ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

যারা মারা গেছেন

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে জনসমর্থন হারানো ইসরাইলকে শঙ্কিত করবে, কারণ দেশটি সবসময় যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী সমর্থনের উপর নির্ভর করে। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পাশাপাশি এখন ব্রিটিশ, পোলিশ, কানাডিয়ান এবং অস্ট্রেলিয়ান সাহায্য কর্মীদের মৃত্যু পশ্চিমা শক্তির জন্য মারাত্বক বিষয়ে পরিনত হয়েছে।

গাজা সংঘাতে পশ্চিমা জনমত এমনভাবে গুরুত্বপূর্ণ যেটা কখনো অন্য যুদ্ধে হয় না। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন যে হামাসকে একটি যুদ্ধ শক্তি হিসাবে ধ্বংস করার জন্য দেশটির প্রচেষ্টার দৈর্ঘ্য পশ্চিমা সমর্থন অব্যাহত রাখার উপর নির্ভরশীল।

অনেক সিনিয়র ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ আন্তর্জাতিক সমর্থনের ক্রমশ ক্ষয় নিয়ে আলোচনা করেন, কেউ কেউ প্রকাশ্যে ভয় পান যে ইসরায়েল এমন একটি বেকায়দায় চলে যাচ্ছে, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদে মোকাবেলা করতে হবে।

লেবার দলের প্রাক্তন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মন্ত্রী পিটার হেইন বলেছেন, “রক্ষণশীল সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তার বাধ্যবাধকতা অব্যাহত রাখতে উত্সাহিত করেছে, যাদের প্রাথমিক মানবিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

“লেবার দলের দাবি করা উচিত সরকারের কাছে ইসরায়েলে সমস্ত অস্ত্র ও যন্ত্রাংশ রপ্তানি বন্ধ করা। এটি মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়ানো, আন্তর্জাতিক নিয়ম-ভিত্তিক ব্যবস্থা এবং এমন একটি পরিবেশে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, যেখানে নিরপরাধ জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।”

অ্যাকশন ফর হিউম্যানিটির প্রধান নির্বাহী ওসমান মোকবেল বলেছেন, “অ্যাকশন ফর হিউম্যানিটি-সহ এইড এজেন্সিগুলি মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য তাদের জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে, সাহায্য কনভয় এবং পরিষেবার স্থানগুলিকে ‘অবিরোধপূর্ণ’ হিসাবে চিহ্নিত করা সত্ত্বেও সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে।

“যুক্তরাজ্যকে অবশেষে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানকারীদের রক্ষা করার জন্য কাজ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহি করতে হবে।” সুত্র: দ্যা গার্ডিয়ান ও আল-জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *