অনুবাদ : মাসুম খলিলী
এক. যে হৃদয় কঠিন হয়ে গেছে তার থেকে সাবধান। তওবা করতে থাকুন। সর্বশক্তিমানের নিকটবর্তী হন। আপনি যে পাপ করেছেন তার জন্য ভয়ে কাঁদুন। পরম করুণাময় সর্বদা ক্ষমা করার জন্য অপেক্ষা করেন।
দুই: আপনি যাদের আঘাত করেন তাদের সম্পর্কে সচেতন হন। মনে রাখবেন, তারা প্রার্থনা করতে পারেন এবং সর্বশক্তিমান তাদের পক্ষে কাজ করেন… মাঝে মাঝে দ্রুত। একা এই চিন্তাই যেন আপনাকে মানুষকে আঘাত করা থেকে বিরত রাখে। সবসময় সদয় থাকুন।
পূনশ্চঃ
এক. আপনার সহ্য করা প্রতিটি ব্যথার জন্য, আপনার হৃদয় আঁকড়ে থাকা প্রতিটি ভয়ের জন্য, প্রতিটি উদ্বেগের জন্য যা আপনাকে জাগ্রত রাখে, প্রতিটি ক্ষতির জন্য যা আপনার শোকের কারণ হয়, আপনি চালনায় অক্ষম এমন কিছু এবং সবকিছু, ছেড়ে দিন বিশ্বজগতের প্রতিপালকের উপর । তিনিই সেরা নিষ্পত্তিকারী আমাদের সব বিষয়ের ।
দুই: আপনি মনে করেন আপনার সবচেয়ে খারাপ দিনগুলির মধ্যে একটি পার করছেন। মনে রাখবেন, আপনার সবচেয়ে খারাপ দিনগুলো হতে পারে আপনার ভালো দিনে পরিবর্তনের সূচনা। আমাদের যা প্রয়োজন ঠিক তার জন্য আমাদের প্রস্তুত করার একটি উপায় জীবনে রয়েছে। আশাবাদ জীবিত রাখুন।
তিন. সর্বশক্তিমান। আমরা আন্তরিকভাবে আপনার কাছে প্রার্থনা করছি যে গতকালের চেয়ে আজ আমাদের আরও ভাল মানুষ করে তুলুন। ইচ্ছা এবং শৃঙ্খলার মধ্যে যুদ্ধ জয় করতে আমাদের সাহায্য করুন, যাতে আমরা আপনার কাছাকাছি যেতে পারি। নেতিবাচক লোকদের ছেড়ে যেতে সাহায্য করুন, যাতে আমরা ভাল চরিত্র ও আচরণের অধিকারী হয়ে আরও ইতিবাচক এবং কৃতজ্ঞ হতে পারি।
চার. সব পরিস্থিতিতেই প্রার্থনা করুন। কখনও বিশ্বজগতের পালনকর্তার সাথে সম্পর্ক পরিত্যাগ করবেন না। তিনি সব কিছু দেখেন, সব কিছু জানেন। এমনকি যখন আপনার ঠোঁট আর প্রার্থনার জন্য কথা বলতে পারবে না, তখন তিনি আপনার হৃদয়ের কথা শুনবেন। যেখানে তিনি উদ্বিগ্ন, সেখানে আপনার কান্নাসহ সমস্ত কিছুই কথা বলে। বিশ্বাস রাখুন দৃঢভাবে!
পাঁচ. এই জীবন কত সংক্ষিপ্ত এবং কতটা ভঙ্গুর! নিজেকে আজ স্মরণ করিয়ে দিন বিশেষভাবে আপনার চারপাশে যা কিছু ঘটছে সেসব। কোন কিছু এবং কেউই যে থাকবে তা নিশ্চিত নয়। সমস্ত কিছুর জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রশংসা করুন, যে কোনও পরিস্থিতিতে আপনার পক্ষে যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। হাল ছেড়ে না দেয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আপনার অন্তরের শান্তি বজায় রাখুন!
ছয়: জিনিসগুলো যেভাবে হয় তার একটি কারণ থাকে। বেঁচে থাকার জন্য এটি ভালো টিপস। সবকিছু একটি কারণে ঘটে; এমনকি যেগুলো আমাদের বিষণ্ন করে সেগুলোরও সব পরিস্থিতিতে এক একটা শিক্ষা রয়েছে। এগুলো থেকে শিখুন এবং সর্বশক্তিমানের কাছে কৃতজ্ঞ হন।
দ্রষ্টব্য:
অপবিত্র (মুনাফিক) কে পবিত্র (মু’মিন) হতে পৃথক না করা পর্যন্ত তোমরা যে অবস্থায় রয়েছ, আল্লাহ সে অবস্থায় বিশ্বাসিগণকে ছেড়ে দিতে পারেন না। অদৃশ্য সম্পর্কে তোমাদের অবহিত করা আল্লাহর (নিয়ম) নয়। অবশ্য (তার জন্য) আল্লাহ তাঁর রসূলগণের মধ্যে যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে বিশ্বাস কর। বস্তুতঃ তোমরা বিশ্বাস করলে ও সাবধান (পরহেযগার) হয়ে চললে, তোমাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। (সূরা আলে ইমরান : ১৭৯)
আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে, আমার আদেশ তো একটি কথায় নিষ্পন্ন, চোখের পলকের মতো। (সূরা কামার : ৪৯-৫০)
আর তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে রুযী দান করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করবে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই। আল্লাহ সবকিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা। (সূরা তালাক : ৩)
যমীনে বা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপৰ্যয়ই আসে তা সংঘটিত হওয়ার পূর্বেই আমি তা কিতাবে লিপিবদ্ধ রেখেছি নিশ্চয় আল্লাহর পক্ষে এটা খুব সহজ। এটা (ভাগ্য নির্ধারণ) এ জন্য যে, তোমরা যা হারিয়েছ তাতে যেন তোমরা বিমর্ষ না হও এবং যা তিনি তোমাদের দিয়েছেন তার জন্য হর্ষোত্ফুল্ল না হও। আল্লাহ পছন্দ করেন না উদ্ধত ও অহংকারীদের। (সূরা হাদিদ : ২২ ও ২৩)
* মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি
