মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর (রাহ.) এক অবিস্মরণীয় নাম

প্রবাসী যুক্তরাজ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

সাঈদ চৌধুরী

সৈয়দপুর আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক উপাধ্যক্ষ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উপদেষ্টা মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর (রাহ.) স্মরণে ব্রিটেনের জনপ্রিয় ‘ইকরা টিভি’ আয়োজিত আলোচনা ও দোওয়া মাহফিলে বক্তারা বলেছেন, সত্যের পথে দৃঢ়চেতা এক সংগ্রামী সাধক ছিলেন মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর (রাহ.)। ইসলামী শিক্ষা এবং তাহযীব-তামাদ্দুনের বিকাশে তিনি আজীবন সাধনা করেছেন। কোন ধরণের লোভ-লালসা, অলসতা ও বিলাসিতা তাঁর ধার ঘেষতে পারেনি কখনো। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বরাবর আপোষহীন মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর অজেয় মনোভাবের অধিকারী ছিলেন। সাদাকে সাদা এবং কালোকে স্পষ্টভাবে কালো বলার ক্ষেত্রে ছিলেন নির্ভয়, নির্ভীক। এজন্য ইতিহাসে তিনি অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

সোমবার (২৯ এপ্রিল ২০২৪) সন্ধ্যায় ইস্ট লন্ডনের ইক্বরা বাংলা কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বরেণ্য উলামায়ে কেরাম, জনপ্রতিনিধি, অধ্যাপক, আইনজীবী, সমাজসেবী-সহ বিপুল সংখ্যক কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহন করেন।

অনুষ্ঠানে লন্ডন বারা অব টাওয়ার হ্যামলেটসের জননন্দিত নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর-সহ অংশ গ্রহন করেন। তিনি মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। হৃদয় নিংড়ানো বক্তব্যে তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস-সহ লন্ডনের ধর্মীয় ও সামাজিক কর্ম প্রয়াসে মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর (রাহ.)-এর মহৎপ্রাণ সন্তানদের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।

শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুর রহমান মনোহরপুরীর সভাপতিত্বে এবং ইকরা বাংলা টিভির উপস্থাপক মুফতি সালেহ আহমদ এবং মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর (রাহ.)’র সন্তান হাফিজ মাওলানা নাঈম আহমদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন সৈয়দ কাসিম আহমদ।

সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন আন্তর্জাতিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘আল খায়ের ফাউন্ডেশন’ ও ইকরা টিভি গ্রুপের চেয়ারম্যান ইমাম কাসিম রশিদ আহমদ। তিনি ইসলামী শিক্ষা ও সমাজ বিনির্মাণে অকুতোভয় মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর (রাহ.)’র অবদান বিষদভাবে উল্লেখ করেন। মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তাঁর মেধাবী ও মননশীল সন্তানদের ইলম ও আমলের প্রশংসা করে ইমাম কাসিম আলোকিত এই পরিবারের আরো ঔজ্জ্বল্য ও সমৃদ্ধির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে সাহায্য কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে মরহুমের জীবনের সাধনা ও প্রেরণা-সঞ্চারক ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জামেয়াতুল খাইর আল ইসলামিয়া সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক মাওলানা মুফতি আবদুল মুনতাকিম।

সভায় মরহুমের সততা, নৈতিকতা ও দৃঢ়চেতা স্বভাবের ঘটনাবহুল জীবন থেকে স্মৃতিচারণ করেন- কাউন্সিল অফ মস্ক টাওয়ার হ্যামলেটসের চেয়ারম্যান মাওলানা হাফিজ শামসুল হক, বাংলাদেশী উলামা-মাশায়েখ লন্ডনের সভাপতি মাওলানা মওদুদ হাসান, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব কেএম আবুতাহের চৌধুরী, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সভাপতি মাওলানা শুয়াইব আহমদ, মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওত লন্ডনের সভাপতি মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, ইউরোপ জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা সৈয়দ আশরাফ আলী, খেলাফত মজলিস ইউকের সভাপতি মাওলানা সাদিকুর রহমান,

মাজাহিরুল উলূম লন্ডনের প্রিন্সিপাল শায়খ ইমদাদুর রহমান আল মাদানী, মদীনাতুল খাইরির চেয়ারম্যান মাওলানা শায়খ ফয়েজ আহমদ, ইউরোপ জমিয়তের মহাসচিব মুফতি মওসূফ আহমদ, খেলাফত মজলিস নেতা কাউন্সিলর আলহাজ্ব সদরুজ্জামান খান, লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদ রিজেন্ট পার্কের ইমাম ও খতিব শায়খ কাজী লুৎফুর রহমান, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র মায়ূম মিয়া, টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক স্পিকার কাউন্সিলর সাফি চৌধুরী, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ জুবায়ের, সৈয়দপুরের বিশিষ্ট মুরব্বি মাস্টার ফররুখ আহমদ, সমাজসেবী শেখ নূর, কর্মবীর সৈয়দ জুনেদ মিয়া, সৈয়দপুর শামছিয়া সমিতি লন্ডনের সভাপতি পীর আহমদ কুতুব, জামেয়া মাদানিয়া বিশ্বনাথের সহকারী পরিচালক হাফিজ হুসাইন আহমদ, সাপ্তাহিক জনমতের নির্বাহী পরিচালক জুনেদ চৌধুরী, জনমতের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আমীরুল ইসলাম চৌধুরী, মরহুম মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর (রাহ.)’র সন্তান মাওলানা মুফতি সৈয়দ রিয়াজ আহমদ প্রমুখ।

পরিবারের পক্ষ থেকে শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আবেগঘন বক্তব্য রাখেন মরহুমের সন্তান জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সাবেক মহাসচিব ও মাদরাসাতুন নূর লন্ডনের পরিচালক মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ।

দোয়া মাহফিলে বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয়-বক্তা মাওলানা শাহিদুর রহমান মাহমুদাবাদী, হাসানা একাডেমীর পরিচালক মাওলানা সাব্বির আহমদ, মাওলানা আব্দুল করিম মামরখানি, শায়েখ কাজী আব্দুর রহমান, মাওলানা শাহনুর খান, মাওলানা মিসবাহুজ্জামান, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন, ইকরা বাংলা টিভির দায়িত্বশীল ইমাম হোসাইন শাহিন ও রানা হামিদ, হাফীজ জিয়াউদ্দিন, হাফীজ রশিদ আহমদ, মাওলানা নাজমুল হাসান, মাওলানা শামসুল ইসলাম, হাফিজ মাওলানা মাসুম আহমদ, মাওলানা তায়ীদুল ইসলাম, মাওলানা আসাদ, মাওলানা আব্দুল বাসীত, জুবায়ের আহমদ চৌধুরী, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, মাওলানা আব্দুল হাই আল হাদী, আরিফুল ইসলাম, এআইটির সভাপতি ছালেহ ভূইয়া, কবি আবু সুফিয়ান চৌধুরী, সৈয়দপুর যুব কল্যাণ পরিষদের সেক্রেটারি মোঃ সোহেল আহমদ, সহ-সভাপতি সাজিদুর রহমান, সহ-সভাপতি সৈয়দ সোয়াইব আহমেদ, হাফিজ মিফতাহুর রহমান, মাওলানা রাশেদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানাধীন ঐতিহ্যবাহী সৈয়দপুর গ্রামে হযরত শাহ সৈয়দ শামসুদ্দিন (রাহ.)-এর বংশে জন্মগ্রহণ করেন মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর। তাঁর পিতা মরহুম সৈয়দ ইসহাক আলী ছিলেন একজন দ্বীনদার ব্যক্তিত্ব। মাতা সৈয়দা ইনসাফ বিবিও ছিলেন ধর্মপ্রাণ মহীয়সী মহিলা। শিক্ষাজীবনের প্রারম্ভে তিনি সৈয়দপুর হুসাইনিয়া হাফিজিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় মক্তব ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। তাঁর এক মামা হাফিজ মাওলানা শায়খ সৈয়দ মনজুর আহমদ তখন ঢাকাউত্তর রানাপিং হুসাইনিয়া মাদরাসায় অধ্যয়নরত ছিলেন। সেই সুবাদে মামার সাথে তিনিও রানাপিং মাদরাসায় ভর্তি হন। সেখানে ছাফেলা ১ম বর্ষে অধ্যয়ন করেন। সেখান থেকে তিনি ক্বায়িদুল উলামা আল্লামা আব্দুল করিম শায়খে কৌড়িয়া (রাহ.)’র পিতার প্রতিষ্ঠিত জামেয়া আব্বাসিয়া কৌড়িয়া মাদরাসায় ভর্তি হয়ে নাহুমীর ও হেদায়াতুন্নাহ পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসায় ছয় বছর অধ্যয়ন করে ১৯৬৭ সালে কামিল পাশ করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদরাসা থেকে ফেক্বাহ বিভাগে আবারো কামিল পাশ করেন।

কর্ম জীবনে মাওলানা সৈয়দ আব্দুন নূর ১৯৬৯ সালে সৈয়দপুর সৈয়দিয়া শামছিয়া আলিয়া মাদরাসায় সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত শিক্ষক হিসেবে কৃতিত্বের সাথে দায়িত্ব আঞ্জাম দেন। এ সময় তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আলিম ও ফাজিল ক্লাস চালু হয়। ১৯৮২ সালে তিনি সৌদি আরবে সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন এবং ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে সৈয়দপুর আলিয়া মাদরাসায় উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়ে ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেন। একজন আদর্শ শিক্ষক ও সফল উপাধ্যক্ষ হিসেবে সর্ব মহলে তিনি প্রশংসিত হন। এলাকার জনগনের শ্রদ্ধা ভালোবাসায় সাত বছর তিনি সৈয়দপুর শাহী ঈদগাহের ঈদের জামাতে ইমামতির করেন।

রাজনৈতিক জীবনে মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর ১৯৬৮ সালে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট জেলা শাখার অফিস সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আজীবন জমিয়তের সামগ্রিক কর্মকান্ডে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ১৯৮১ সালে দারুল উলূম দেওবন্দের সদসালা দস্তারবন্দী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। তখনকার সফরসঙ্গী ছিলেন সৈয়দ আব্দুল মুক্তাদির (জিলু মাস্টার)। সেই সময় মাদানী মঞ্জিলে শতাধিক উলামা-মাশায়েখের সাথে তিনিও মেহমান ছিলেন। সেখানে একদিন ফজরের নামাযের ইমামতিও করেছেন। এই সফরে তিনি থানাবন হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কীর ইমদাদিয়া খানক্বা পরিদর্শন ও হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী (রাহ,)’র কবর জিয়ারত করেন। মুম্বাই সফরে মাস্টার নজরুল ইসলাম সাহেবের ঘরে অনুষ্ঠিত মাহফিলে ভারতের খ্যাতিমান আলেম শায়েখ আব্দুল জলিল বদরপুরী ও শায়েখ আহমদ আলী বাঁশকান্দির সাথে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন। এছাড়া মাওলানা শফিকুল হক আকুনী ও মাওলানা গৌছ উদ্দিন সাহেবের সাথে তিনি কলকাতা আলিয়া মাদরাসা পরিদর্শন ও শায়খুল হাদীস মাওলানা তাহির আহমদের সাথে মিলিত হন।

খ্যাতিমান সাহিত্যিক ও বহু গ্রন্থপ্রণেতা, মাসিক মদীনার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিন খানের সাথে ঘনিষ্ট ছিলেন মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর। ২০০৪ সালে তিনি স্ব-পরিবারে যুক্তরাজ্য সফর করেন। সে সময়ে মাওলানা মুহিউদ্দিন খান এবং মর্দে মুজাহিদ মাওলানা আমিন উদ্দিন শায়খে কাতিয়া, শায়খুল হাদীস মাওলানা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী প্রমুখ যুক্তরাজ্য সফর করেন এবং তাদের সাথে তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন। ইউরোপে জমিয়তের কাজের প্রসারে তখন বিশেষ অবদান রেখেছেন।

আধ্যাত্মিক জ্ঞান সাধনার অংশ হিসেবে মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর কুতবুল আলম সাইয়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানী (রাহ.)’র সুযোগ্য সাহেবজাদাহ ফেদায়ে মিল্লাত সায়্যিদ আসআদ মাদানীর কাছে বায়আত গ্রহণ করেন। সায়্যিদ আসআদ মাদানীকে প্রথমবারের মতো সৈয়দপুরে নিয়ে আসতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এ সফরে দেশ-বরেণ্য প্রায় সতের জন উলামা সৈয়দপুর সফর করেন।

পারিবারিক জীবনে মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর একই গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বড়বাড়ির আলহাজ মাস্টার সৈয়দ সাদ উদ্দীন আহমদের প্রথম কন্যা সৈয়দা আফিয়া খাতুনের সাথে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে মাওলানা সৈয়দ মছরুর কাসেমী জামেয়া দারুল হাদীস সৈয়দপুরের সিনিয়র মুহাদ্দিস ও নাযিমে তালিমাত, হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামিম আহমদ জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সাবেক মহাসচিব, হাফিজ মাওলানা সৈয়দ সালিম আহমদ কাসেমী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগরের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, হাফিজ মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সেক্রেটারী, মুফতি মাওলানা সৈয়দ রিয়াজ আহমদ জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ-সেক্রেটারী হিসেবে ইসলাম প্রচারে সক্রিয় রয়েছেন।

মরহুমের ছেলে হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ ও হাফিজ মাওলানা সৈয়দ সালিম আহমদ কাসেমীর প্রচেষ্টায় সিলেট শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘শায়খুল ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল জামেয়া’। হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ, হাফিজ মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ ও মুফতি মাওলানা সৈয়দ রিয়াজ আহমদের প্রচেষ্টায় ‘মদীনাতুন নূর’ নামে একটি সেবামূলক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে অসহায় মানুষকে আর্থিক ও মানবিক সহযোগিতা করা হয়। এই সংস্থার অধীনে যুক্তরাজ্যে ‘মাদরাসাতুন নূর লন্ডন’ নামে একটি বিশেষ একাডেমী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মাওলানা সৈয়দ আবদুন নূর আটবার হজব্রত পালন করেছেন। ১৯৮৪ সালে স্ত্রী ও ছোট ছেলে মাওলানা মুফতি সৈয়দ রিয়াজ আহমদকে নিয়ে হজ্ব করেছেন। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় ছেলে হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ ও তাঁর পরিবারের সাথে উমরাহ পালন করেন। ৮৩ বছর বয়সে গত ২৪ মার্চ ২০২৪ মোতাবেক ১৩ রমযান রোববার ভোর পাঁচটা দশ মিনিটের সময় কালেমা তায়্যিবা পাঠ করে করে তিনি নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। ইন্না-লিল্লা-হি ওয়াইন্না- ইলাইহি রা-জিউ’ন।

ইন্তেকালের সংবাদ মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়লে পরিচিত মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। এই বরেণ্য আলেমের জন্য দেশে এবং প্রবাসে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসায় তাৎক্ষণিকভাবে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। এছাড়া তাঁকে শেষবারের মতো দেখার জন্য অসংখ্য আলেম-উলামা এবং আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহীরা ছুটে যান সৈয়দপুর গামে। বড়গোল ময়দানে তাঁর জানাজায়ও অংশ নেন অসংখ্য শোকার্ত মানুষ। জানাযায় ইমামতি করেন মরহুমের বড় ছেলে মাওলানা সৈয়দ মাছরুর আহমদ কাসিমী। সবশেষে বাড়ির সামনের মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমিন!

* সাঈদ চৌধুরী সময় সম্পাদক, কবি ও কথাসাহিত্যিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *