পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে দুদক চেয়ারম্যান ও সচিব-সহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালা উদ্দিন রিগ্যান রিটটি দায়ের করেন। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে এর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, তারা রিটের কপি হাতে পেয়েছেন। সেখানে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এর আগে রোববার বেনজীরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চেয়ে দুদকে আবেদন করেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তার আয়ের তুলনায় অসম। লিখিত ওই আবেদনে সাবেক আইজিপির দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চান সুমন। পাশাপাশি দুদক কোনো ব্যবস্থা না নিলে, উচ্চ আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।
সম্প্রতি কালের কণ্ঠ পত্রিকা তারা লিখেছে, “পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ তাঁর অপকর্ম নিয়ে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলোর বিষয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন। আজ মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল ২০২৪) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে কিসের ইঙ্গিত দিলেন তিনি? বেনজীর আহমেদের নানা অপকর্ম ও দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করেছে কালের কণ্ঠ। গত রবিবার ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’, ‘মেয়ের বিশ্রামের জন্য সাড়ে তিন কোটি টাকার ফ্ল্যাট’ এবং আজ মঙ্গলবার ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’, ‘সেন্ট মার্টিন কক্সবাজারেও ভূ-সম্পত্তি’ শিরোনামে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলো দেশে-বিদেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একজন সরকারি কর্মকর্তা কিভাবে এত সম্পদের মালিক বনে গেছেন, তা নিয়ে কড়া সমালোচনা করছেন অনেকে।
আবার কেউ কেউ অবৈধ ও অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদের মালিক হওয়ায় বেনজীর আহমেদকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে বেনজীরের সঙ্গে একাধিকবার বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করে কালের কণ্ঠ। কিন্তু বেনজীরের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অবশেষে মঙ্গলবার তিনি এ বিষয়ে মুখ খোলেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন বেনজীর আহমেদ। সেখানে তিনি লেখেন, দু একজন অনেক ক্ষিপ্ত, খুব ই উত্তেজিত হয়ে এক্ষুনি সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, প্রবন্ধ লিখে ফেলছেন। দয়া করে সামান্য ধৈর্য্য ধরুন। ঘোষণাই তো আছে, “কুৎসার কিসসা আভি ভি বাকি হ্যায়। তবে সেই পোস্টটিকে ইতিবাচকভাবে নেয়নি নেটিজেনরা। বেশির ভাগ মানুষই তাঁর পোস্টে পাল্টা প্রশ্ন করে দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে আবার তাঁর আরো দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ আছে কি না, সে বিষয়েও জানতে চেয়েছেন।”
প্রকাশিত সংবাদকে অসত্য বলে দাবি করেছেন বেনজীর আহমেদ। ফেসবুকে তিনি বলেছেন, চাকরিকালীন সময় বিগত ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী কর্তৃক অবিরত এবং ক্রমাগত অপপ্রচার এবং ব্যক্তিগত চরিত্রহননের অপচেষ্টার শিকার হয়েছি। .. আমার পরিবার ও আমার নামে অসত্য প্রকাশিত হয়েছে। তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।