‘বেইলি রোডে বিভীষিকার রাত, আগুনে মৃত্যু ৪৫’

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে আগুন লাগার ঘটনা নিয়ে প্রধান শিরোনাম করেছে আজকের বেশিরভাগ সংবাদপত্র। ভয়াবহ আগুনের ছবিসহ কালের কন্ঠের প্রধান শিরোনাম – বেইলি রোডে আগুন মৃত্যু বিভীষিকার রাত। খবরে বলা হয়, ৪৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে এতে এবং আশঙ্কাজনক অবস্থা ২২ জনের। তাদের অনেকের কণ্ঠনালি পুড়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

দগ্ধদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত অন্তত ২০ জনের চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। লাশ নেওয়া হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল মর্গে।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ৫১ মিনিটের দিকে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে রাত ৯টা ৫৬ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। পরে আরো চারটি ইউনিট যুক্ত হলে মোট ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

প্রথম আলো লিখেছে– ভয়াবহ আগুনে ৪৩ জন নিহত। তাদের খবরে বলা হচ্ছে গতকাল রাতে বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি সাততলা। এতে নানারকম খাবারের দোকান রয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনটি প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পর তা ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ক্রেনের সাহায্যে ভবনের সপ্তম তলা ও ছাদে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের নামিয়ে আনতে থাকেন তাঁরা।

ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের শিরোনাম – At least 43 killed as fire burns Bailey Road building. ভবনটি যেন এক অগ্নিচুল্লি – কালবেলা বলছে বেইলি রোডের ব্যস্ততম এলাকায় ওই ভবনে ছিল না কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা। জরুরি অবস্থায় বের হওয়ারও কোনো ব্যবস্থা ছিল না।

আগুনে পুড়ে যত না মানুষ মারা গেছে, তার চেয়েও বেশি মারা গেছে ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে। তিনতলায় ছিল কাপড়ের দোকান। বাকি সব ছিল রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যে কারণে আগুনের তীব্রতা ছড়িয়েছে ভয়াবহভাবে।

সংসার খরচে যোগ হচ্ছে ১৫০০ – দেশ রুপান্তরের শিরোনাম। বলা হচ্ছে ফের বাড়লো বিদ্যুতের দাম, আবাসিকে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৩৮ পয়সা থেকে ১ টাকা ৩৫ পয়সা। এর ফলে আবাসিক (বাসাবাড়ি) গ্রাহকদের শ্রেণি বিবেচনায় বিদ্যুতের ব্যবহারভেদে মাসিক ব্যয় ২২ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়বে। আনুপাতিক হারে ব্যয় আরও বাড়বে কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যিক ও অন্যান্য শ্রেণির গ্রাহকদের।

এবারও গণশুনানি ছাড়াই সরকার নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করেছে। একইভাবে এর আগে গত বছর ২৫ মার্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ঘনমিটারপ্রতি ৭৫ পয়সা হারে বাড়ানো হয়েছে। গত ১৪ বছরে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৩ দফা বৃদ্ধি করেছে সরকার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনজীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। বিশেষ করে রোজার আগে মূল্যবৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাবে। বিদ্যুৎ খাতে অপরিকল্পিত উন্নয়ন, অযাচিত ব্যয়ের কারণেই এভাবে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করতে হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকির যে অঙ্কের কথা বলা হচ্ছে, তা নিয়েও বিতর্ক আছে।

বিদ্যুতের দাম বাড়া ও সেটি কার্যকর হওয়া নিয়ে ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের শিরোনাম – Power prices go up again অর্থাৎ বিদ্যুতের দাম আবারও বাড়লো।

ভোক্তাদের দু:স্বপ্ন সত্যি হয় বৃহস্পতিবার এক সরকারি আদেশে, খুচরা ও শিল্প পর্যায়ে গড়ে ৮.৫ শতাংশ ও ৬ শতাংশ পর্যন্ত। আর এই নতুন দাম কার্যকর হচ্ছে ফেব্রুয়ারি থেকেই। ডলার সংকটে গত দুই বছর ধরেই বিদ্যুৎসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়তির মুখে থাকায় দিশেহারা ভোক্তারা। রাত দশটায় এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করে সরকার।

বাড়ছে মন্ত্রিসভার আকার আজ সন্ধ্যায় শপথ – দৈনিক সমকালের শিরোনাম এটি। বলা হচ্ছে বর্তমান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের সঙ্গে আরও যোগ হতে পারেন সাত থেকে আটজন। এবার পূর্ণ মন্ত্রীর চেয়ে প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীই বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এর মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে তিন-চারজন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন। আওয়ামী লীগ ও সরকারের সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, আজ বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

আমরা রাজনীতিশূন্য অবস্থায় আছি, এর কাফফারা দিতে হবে এই রাজনীতির পরিবর্তন দরকার – মানবজমিনের প্রধান শিরোনাম এটি। নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সাক্ষাৎকার থেকে এমন শিরোনাম করেছে পত্রিকাটি। দেশের চলমান রাজনীতি, গণতন্ত্র, নির্বাচন, মানবাধিকার, আইনের শাসন নিয়ে খোলামেলা মত দিয়েছেন। বলেছেন, আমরা রাজনীতিশূন্য অবস্থায় আছি, এ থেকে পরিত্রাণ না হওয়া পর্যন্ত দেশের মুক্তি নেই।

ব্যাংক ঋণের সুদহার আরও বাড়ছে – যুগান্তরের শিরোনাম এটি। মূল্যস্ফীতির উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহার আরও বাড়ানো হয়েছে। এই দফায় সুদ সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ থেকে সর্বনিম্ন দশমিক ৬৪ শতাংশ বাড়বে। ফলে সব ধরণের ঋণের সুদহার বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে বাড়বে আমানতের সুদ হারও। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ হার বাড়ানোর ফলে পণ্যমূল্য আরও বেড়ে যাবে। ফলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কৌশল কতটুকু কাজে আসবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

Cops want more power, benefits – ডেইলি স্টারের এই শিরোনামে বলা হচ্ছে পুলিশ আরও বেশি ক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধা চায়। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক বৈঠকে শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি জানান তারা দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ এবং বিআইডব্লিউটিএ-তে নিয়োগ সুবিধা চান। এছাড়া পুলিশের আইজির হাতে এসপি পদ পর্যন্ত প্রোমোশনের ক্ষমতা, বিদেশ ভ্রমণের জন্য ছুটি এবং অতিরিক্ত এক মাসের বেতন চান যেহেতু পুলিশ কম ছুটি পায় বলে দাবি করেন তারা।

কাজের আগ্রহ দেখালেও বাংলাদেশ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের ‘টেস্ট কেস’ – মানবজমিনের আরেকটি শিরোনাম। এতে বলা হয় সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখালেও বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি।

বাংলাদেশের মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের ওপর দৃষ্টি দেয়ার বিষয়টি অব্যাহত থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের। ঢাকা এখনো ওয়াশিংটনের মূল্যায়নভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতিতে ‘টেস্ট কেস’ হিসেবে রয়ে গেছে। অনলাইন দ্য ফরেন পলিসিতে বিভিন্নভাবে এ কথাটিই বলেছেন উইলসন সেন্টারে সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান।

ইউরোপে আশ্রয়প্রার্থীদের তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশ– নয়া দিগন্তের শিরোনাম এটি। বলা হচ্ছে ইইউ প্লাস অঞ্চলের দেশগুলোতে আশ্রয় আবেদনের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ৪০ হাজারেরও বেশি নাগরিক ইউরোপের দেশগুলোতে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। যা বিগত বছরগুলোর সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

গত বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা এজেন্সি ফর অ্যাসাইলামের (ইইউএএ) প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। ওই পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত বছর বাংলাদেশ থেকে ইইউ প্লাস অঞ্চলে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন ৪০ হাজার ৩৩২ জন। তাদের মধ্যে ওই বছরের শুধু জানুয়ারি থেকে জুন মাসে আবেদন করেন ২০ হাজার ৯২৬ জন বাংলাদেশী। এর পর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আরো আবেদন করেছেন ১৯ হাজার ৪০৬ বাংলাদেশী।

ইইউ প্লাসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ ছাড়াও নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ড। বাংলাদেশীদের ওই অঞ্চলে আশ্রয় আবেদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্যান্য খবর

গাজায় ত্রাণের লাইনে ইসরাইলের হামলা নিয়ে ইত্তেফাক শিরোনাম করেছে– দাঁড়িয়ে ছিল খাদ্যের আশায় গুলিতে গেল শতাধিক প্রাণ।

গাজায় গত চার মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি আগ্রাসন অব্যাহত আছে। চারদিক থেকে অবরূদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইল। এই পরিস্থিতিতে সেখানে সৃষ্টি হয়েছে দুর্ভিক্ষ। গাজার আল রশিদ স্ট্রিটে খাবারের ট্রাকের সামনে কয়েকশ’ মানুষ অপেক্ষমান ছিলেন। এরই মধ্যে আকস্মিকভাবে ইসরাইলি বাহিনী সেখানে প্রকাশ্যে গুলি চালায়। অধিকাংশই গুলির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কয়েকজন মানুষের পায়ের চাপায় প্রাণ হারান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোট ১০৪ জন নিহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

আজ বিপিএল ফাইনাল, সে খবরও এসেছে পত্রিকায়। জনকন্ঠের শিরোনাম কুমিল্লা-বরিশাল শিরোপা লড়াই আজ। অবশেষে পর্দা নামছে আজ দশম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল)। এবারের আসরে বড় ধরনের কোনো বিতর্ক ছাড়াই পরিচ্ছন্নভাবেই ৪৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুরো আসরে একমাত্র শাস্তির ঘটনা লিটন কুমার দাসের ১৫ শতাংশ ম্যাচ ফি কর্তন। সেই লিটনই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করার সামনে দাঁড়িয়ে। তার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল ও তার দল ফরচুন বরিশাল।

সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে লড়াই। বরিশাল এর আগে দুইবার ফাইনালে উঠে কুমিল্লার কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। প্রথম শিরোপা জিততে উন্মুখ হয়ে আছে বরিশাল। -বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *