ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রতি সেহরিতে প্রার্থনা করুন : মুফতি মেনক

ধর্ম ও দর্শন সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

অনুবাদ:মাসুম খলিলী

এক. অনুস্মারক: ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রতিটি সেহরিতে প্রার্থনা করুন এবং প্রতিটি ইফতারের সময় সত্যিই খুব বরকতময় সময় যখন প্রার্থনা শোনা হয় এবং কবুল হয়। দু’আ বা প্রার্থনার শক্তিকে কখনই অবমূল্যায়ন করবেন না। সারা বিশ্বে যারা কষ্ট পাচ্ছে তাদের জন্য প্রার্থনা করুন। মহান আল্লাহ তাদের সহায় হোন। আমীন

দুই. আপনার কথা ও কাজ দেখুন। আপনি সাবধান না হলে মানুষকে কষ্টে ফেলা বেশ সহজ। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিৎ লোককে গড়ে তোলা। তাদের নিরাপত্তাহীনতা দূর করা। তাদের সক্ষমতার কথা মনে করিয়ে দেয়া। একটি ভাল শব্দ বলা। একটু হাসি দেয়া। প্রায়শই ম্লান এবং নিঃশব্দ হয়ে থাকা বিশ্বে তাদের জন্য উজ্জ্বল আলো হয়ে উঠা।

পূনশ্চঃ

এক. চোখের পানি ফেলতে ভয় পাবেন না। সর্বশক্তিমান চান আপনি সব সময় কাঁদুন। এটা ধার্মিকদের একটি গুণ। চোখের পানিও প্রার্থনা। এসব তাঁর কাছে যায় যখন আমরা এত আবেগে পরাস্ত হই যে আমরা বলার জন্য সঠিক শব্দ খুঁজে পাই না। তিনি সেরা শ্রোতা।

দুই. আপনার কোন প্রকৃত বন্ধু আছে? যারা টাকা,পদমর্যাদা,অহংকার দ্বারা চালিত হয় না? সত্যি কথা বলতে কি, আজকাল এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তারা বিদ্যমান রয়েছে, তবে অল্প এবং অনেক দূরে। সুতরাং আপনি যদি একজনকে জানেন তবে আপনি সত্যিই ধন্য। তাদের সম্মান করুন। তাদের কাছে রাখুন।

তিন. দয়াশীল হন। ক্ষমাশীল হন। শুধু নিজের জন্য নয়, অন্যের প্রাপ্তির জন্যও খুশি থাকুন। সর্বশক্তিমান আপনার পথে পাঠিয়েছেন এমন সব অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞ হন। তিনি আপনাকে যাই পাঠান না কেন সেই পরীক্ষাকে গ্রহণ করুন। আপনি যদি সেটিকে খোলা মনে রাখেন তবে দেখবেন এর মধ্যে শিক্ষা ও কল্যাণ রয়েছে।

চার. নিশ্চিত করুন যে আপনি তাদের সাথে আছেন যারা আপনার হৃদয় স্পর্শ করে এবং আপনার আত্মাকে পুষ্ট করে। আশেপাশে এমন মানুষ খুব বেশি নেই। তাই বিজ্ঞতার সাথে আপনার সাহচর্য নির্বাচন করুন।

পাঁচ. এই অধিকার পেতে দিন। সর্বশক্তিমান কখনও কিছু শুনতে অতি বেশি ব্যস্ত থাকেন না। তিনি সব সময় আমাদের জন্য আছেন। কিন্তু আমরা পার্থিব জিনিসগুলি নিয়ে অব্যাহতভাবে বিভ্রান্ত এবং ফোকাসহীন হয়ে আছি। এটাই বাস্তবতা। তাঁর সাথে কথা বলতে খুব ব্যস্ত হবেন না। আর স্বাচ্ছন্দ্যের সময়ে তাঁকে ভুলে গিয়ে কেবল প্রয়োজনের সময় তাঁকে ডাকবেন না।

ছয়. আমাদের যাত্রা বেদনাদায়ক হতে পারে তবে এটি আমাদের অভিজ্ঞতা, যা আমাদেরকে সহানুভূতিশীল, দয়ালু ও বুদ্ধিমান মানুষে রূপায়িত করতে পারে। যখন আমরা লোকসান, ব্যর্থতা, বেদনা ও যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাই, তখন সর্বদা সর্বশক্তিমানের কাছাকাছি আসার সুযোগ থাকে। এ সুযোগের অপচয় করবেন না!

দ্রষ্টব্য:

হে রাসূল! যখন আমার বান্দা আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করে, তখন বলে দিন- আমি বান্দার খুব কাছেই আছি। সে যখনই আমার কাছে দোয়া করে, আমি তার দোয়া কবুল করি (সূরা বাকারা:১৮৬)

রাসূল (সা.) বলেছেন, দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না। (তিরমিজি:২১৩৯)

রাসূল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে বেশি মর্যাদাময় আর কোনো আমল নেই। (তিরমিজি:৩৩৭০)

রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তার ওপর রাগ হন। (তিরমিজি:৩২৯৫)

রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমাদের প্রভু খুবই লজ্জাশীল। বান্দা যখন দোয়ার জন্য হাত উঠায়, সে হাত খালি ফিরিয়ে দিতে আল্লাহ লজ্জা পান। (আবু দাউদ:৩৩৭০)

* মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি

* মাসুম খলিলী সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *