প্রবাল পাথর না প্রাণী !

অন্যান্য
শেয়ার করুন

পাথরের মতোই শক্ত। তবে কোরাল বা প্রবালেরাও সাগরের অ্যানিমোন, জেলি মাছ আর হাইড্রার মতো একধরনের প্রাণী। প্রবাল প্রাণীরা কিন্তু অদ্ভুত। প্রাণী হলেও ওদের কোনো মাথা নেই, ঘিলু নেই, মগজ নেই; কিন্তু অনুভূতি ওদের ঠিকই আছে। একটা কেন্দ্রীয় অক্ষকে ঘিরেই চার দিকে সমানভাবে গড়ে ওঠে ওদের দেহ। তবে মাথা না থাকলে কী হবে, মুখ কিন্তু আছে। অমেরুদণ্ডী এ প্রাণীদের মুখে চার দিক থেকে ফুলের মতো ছড়িয়ে পড়ে নানা রকমের আঁকড়ি।

জীবন্ত প্রবালেরা সাগরের তলে পাথরে পাহাড়ে আটকে থাকে। দেহটা যেন থলের মতো, মুখের চার দিক থেকে বলয়ের মতো আঁকড়ি নড়তে থাকে। প্রবালেরা কিন্তু খুব বেশি বড় হয় না। বৃহত্তম প্রবাল ফানজিয়ার ব্যাস মাত্র ২৫ সেন্টিমিটার বা ১০ ইঞ্চি আর ছোটটি? মাত্র এক মিলিমিটার আকারের প্রবালও আছে।

আমরা যে মরা প্রবাল পাথরের মতো দেখি তা আসলে অনেক প্রবালের সমষ্টি। ওই একটুকরোই যেন প্রবালদের একটা পাড়া। তবে এই পাড়া কিন্তু অনেক বড় হতে পারে। একটা প্রবালপাড়া বা কলোনি, স্টার প্রবালের কথাই ধরো না ওটার একটা তোমাদের ঘরে ধরবে না, প্রায় চার মিটার উঁচু। লাল, সাদা, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, বেগুনি কি রঙের প্রবাল নেই? থুজাগাছের পাতার মতো বাদামি রঙের প্রবাল, কী নাম যেন ট্রি কোরাল বা নিডিল কোরাল ছবিতে দেখা যায়, কত্ত সুন্দর! এ পর্যন্ত অন্তত ৯ হাজার প্রজাতির প্রবালের কথা জানা গেছে। যেসব সাগরের পানি বেজায় ঠাণ্ডা, বরফ জমে; সেসব সাগরে কিন্তু প্রবাল জন্মাতে পারে না।
প্রবালদের কি বাচ্চা হয়? কেমন করে বাড়ে ওরা? সত্যি বড্ড বিচিত্র জীব ওরা। প্রবালদের মধ্যেও আছে মেয়ে প্রবাল, ছেলে প্রবাল। আবার কোনো প্রবালের মধ্যে আছে মেয়ে ও ছেলের দুটো বৈশিষ্ট্যই। তাই ওরাও ডিম দেয়, ডিম ফুটে বাচ্চা বেরিয়ে সাঁতার কাটে। তারপর সেগুলো এক জায়গায় বসে বাড়তে শুরু করে। তবে সব প্রবালই যে এমন করে, তা কিন্তু নয়। কেউ কেউ তাদের দেহ টুকরো টুকরো করে। সেসব টুকরো থেকে নতুন করে বংশ বাড়াতে থাকে। ধীরে ধীরে মেলতে থাকে ডালপালা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *