দেখে আসুন সিরাজগঞ্জের চায়না বাঁধ

পর্যটন ফিচার
শেয়ার করুন

ফয়সাল আমিন কাজি (ফাহিম ফয়সাল): একটু চোখ বন্ধ করে ভাবুন, আপনি বসে আছেন সবুজ ঘাসের গালিচায়, উপরে খোলা আকাশ আর দুইপাশে নদী। তাহলে আপনার মন নিশ্চয়ই প্রশান্তিতে ভরে উঠবে।

এমনই একটি দৃষ্টিনন্দন স্থান হচ্ছে বাংলাদেশের চায়না বাঁধ। এটি নদীর বুকে জেগে উঠা কোন চর নয়! জায়গাটির নাম চায়না বাঁধ, যা সিরাজগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। ছবিগুলো দেখুন, এগুলো সরকারিভাবে বাঁধের জন্য তোলা হয়েছিল উপর (ড্রোন দিয়ে) থেকে, তুলেছেন সাদাত মোস্তফা সাদাফ। অসাধারণ একটি বিকেল কাটাতে চাইলে আপনিও প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সিরাজগঞ্জের চায়না বাঁধ থেকে।

সিরাজগঞ্জের এই জায়গাটিতে ঘুরে আসুন যে কোনো এক ছুটির দিনে। যাওয়ার পথটিও খুব সহজ। ঢাকা থেকে দূরত্ব ১২৭ কিলোমিটার।

অবস্থান: সিরাজগঞ্জ জেলা শহর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড যমুনা নদীর কূলে এই বাঁধ নির্মাণ করে। চায়না বাঁধের অন্য নাম ক্রসবার-৩। সিরাজগঞ্জ শহরের সাথেই এই চায়না বাঁধ। বাঁধের মূল গেইট থেকে যমুনা নদীর ২ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত বাঁধের উপর দিয়ে চলে গেছে কালো পিচ ঢালা রাস্তা। আর এই রাস্তা ধরে বাঁধের শেষ প্রান্তে যাওয়া যায়। চারদিকে শুধু পানি আর পানি দেখলেই মন জুরিয়ে যায়। যমুনা নদীর এই বাঁধে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বেড়াতে আসে। বাঁধে বসে থাকতে ভালো লাগবে, ভালো লাগবে আশেপাশের পরিবেশ উপভোগ করতে। আর নদীতে নৌকা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তো এক কথায় অসাধারণ।যেভাবে যাবেন: সিরাজগঞ্জ যাওয়ার জন্য মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত প্রতি ৩০ মিনিট পরপর অভি এবং এসআই এই কোম্পানির বাস ছাড়ে। ভাড়া ২৫০ টাকা জনপ্রতি। তবে যারা এসি বাসে যেতে চান তারা মিরপুর ২ এ চলে যাবেন। ওখান থেকে ঢাকা লাইন/ এস আই কোম্পানির এসি বাস ছাড়ে। ভাড়া ৩৫০ টাকা। এছাড়া আপনি উওরবঙের যেকোন বাসেই যেতে পারেন, তবে আপনাকে নামতে হবে কড্ডার মোড়ে অথবা সিরাজগঞ্জ রোডে। ট্রেনে আসতে চাইলে ক্যাপ্টেন মনসুর আলী স্টেশনে নামবেন। তারপর সিএনজি নিয়ে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন আসবেন। ওখান থেকে চায়না বাঁধের রিক্সা ভাড়া ২৫/৩০ টাকা। রাতে যেতে চাইলে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে যেতে পারেন। ট্রেন বিকেল ৫ টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে রাত ১০.৩০ এ সিরাজগঞ্জে যায়। সে ক্ষেত্রে ভোরের জন্য সারা রাত কোন পরিচিতজনের বাড়ি বা হোটেলে অপেক্ষা কেতে হবে।

খাবার-দাবার: সিরাজগঞ্জ সদরে বিভিন্ন মানের বেশকিছু খাবারের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। আপনার চাহিদা পূরণে সমর্থ্য এমন যেকোন রেস্টুরেন্ট থেকেই প্রয়োজনীয় খাবার খেয়ে নিতে পারবেন। এর মধ্যে জনপ্রিয় খাবার হোটেলের মধ্যে ফুড ভিলেজ, বসুন্ধরা রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করতে পারেন।
ঢাকায় ফেরা: এরপর আপনি চাইলে সিরাজগঞ্জ শহরটা ঘুরে দেখতে পারেন। ছোট শহর। ব্যাটারি চালিত রিক্সায় ১ ঘন্টাতেই শেষ করতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে শেষ বাস ছাড়ে সন্ধ্যা ৭ টায়। অবশ্য আপনি চাইলে কড্ডার মোড়ে গিয়ে ঢাকাগামী যেকোন বাসে করেই ঢাকায় ফিরতে পারবেন।

যা করা থেকে বিরত থাকবেন: যে কোন দর্শনীয় স্থান ঘুরতে গেলে সবসময় মনে রাখবেন, কোন ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করা যাবেনা। এছাড়াও থুতু, পানের পিক এগুলো যেখানে সেখানে ফেলা থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এগুলো রোগ জীবানু ছড়ায় ও পরিবেশ দূষণ করে। এছাড়াও স্থানীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *