মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নে সতর্ক করার পর ইরানের সাথে বিরোধের ফলে ইসরায়েল একটি সম্ভাব্য বড় ধরণের হামলার আশংকা মোকাবেলায় প্রস্তুত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, ইসরায়েলি সামরিক এবং সরকারি সাইটগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হতে পারে। ইরান থেকে সরাসরি ইসরাইলে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালানো হবে বলে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলায় দেশটির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার পর থেকেই ইরানের সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলা নিয়ে উদ্বেগ চলছে। ইসরায়েলি মন্ত্রীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তেহরান যদি সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নেয় তবে তারা ইরানের ভূখণ্ডে তাদের নিজস্ব হামলার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাবে, যা মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণ-স্কেল আঞ্চলিক যুদ্ধের দরজা খুলে দেবে।
ব্লুমবার্গের এই সপ্তাহে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নে বলা হয়েছে যে ইরান ইসরায়েলের অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন ব্যবহার করে উচ্চ-নির্ভুল হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত হতে পারে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলাটি ‘খুব সম্ভবত ইসরাইলের মাটিতে’ হবে।
বিবিসি বলছে, ইসরায়েলে ইরানের হামলা এখন একটি ‘বাস্তব ও গ্রহণযোগ্য’ হুমকি হয়ে উঠেছে বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। তেহরান শিগগির ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে শঙ্কার মধ্যে শুক্রবার এ কথা বলেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে ইরান শুধুমাত্র ইসরায়েলের সামরিক ও সরকারি স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা তৈরি করছে, যার মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্ট হবে কিরিয়া, তেল আবিবের ইসরায়েলি সামরিক সদর দফতর। অন্যান্য সম্ভাব্য লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে বিমান ঘাঁটি, যেমন মধ্য ইস্রায়েলের পালমাচিম বা উত্তরে মেরন, সেইসাথে নেসেট [সংসদ] এবং জেরুজালেমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জানায়, উত্তর বা দক্ষিণ ইসরাইলে সম্ভাব্য হামলা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল। তবে এতে ইরান সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, তেহরান এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে আরো বলা হয়, মার্কিন সরকার ইসরাইলে অবস্থিত তাদের কর্মী এবং তাদের পরিবার সদস্যদের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মধ্য ইসরাইল, জেরুসালেম এবং বীরসেবার বাইরের এলাকায় ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে।
ইসরাইলি মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য মতে, ইসরাইলে যেসব স্থাপনাকে ইরান টার্গেট করতে পারে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দিমোনার পরমাণু স্থাপনা ও হাইফার বিমানবন্দর।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি শুক্রবার বলেছেন, কোন আকারে, কোন মাত্রায় এবং কোন সুযোগ নিয়ে হামলা হতে পারে, তা আমি বলতে পারছি না। তবে ইরানের হামলার হুমকি ‘কার্যকর’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওয়াশিংটন খুব নিবিড়ভাবে বিষয়টি দেখছে। সুত্র: বিবিসি, দ্য টেলিগ্রাফ, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও আল জাজিরা