অতি সামান্য দুর্নীতির পেছনে সময় ব্যয় না করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উঠা যে কোনো দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগেরও অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় ঘোষণা করে।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছে, সার্বিক পরিস্থিতিতে আদালতের কাছে এটা স্পষ্টত প্রতীয়মান হয় যে, দুদক হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ৫০০ বা ৫ হাজার টাকার অতি সামান্য দুর্নীতির পেছনে জনগণের লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছে। পত্র-পত্রিকায় এটি দেখা যাচ্ছে যে, ৫ হাজার টাকার একটি মামলার জন্য দুদকের ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। ৫ হাজার টাকার একটি দুর্নীতির মামলার জন্য জনগণের করের টাকা এভাবে ব্যয় করা কতটুকু সমীচীন তা ভেবে দেখা দরকার।
রায়ে আরো বলা হয়েছে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও দুর্নীতির তথ্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশ পাচ্ছে। এই বড় বড় দুর্নীতির সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নামও উঠে আসছে। এ ধরনের দুর্নীতির অনুসন্ধান ও তদন্ত সবার আগে শুরু করতে হবে। যখন এ ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া না যাবে তখনই সামান্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাতে হবে দুদককে।
মাত্র ৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির টেকনিশিয়ান আব্দুর রহিমকে দেওয়া বিশেষ আদালতের সাজা বাতিলের রায়ে হাইকোর্ট এ নির্দেশনা দেয়।
ক্যাডার সার্ভিসের মাধ্যমে দুদকে নিয়োগ দেওয়া উচিত
হাইকোর্ট রায়ে বলেছে, দুদকের মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত কর্মকর্তাদের অবশ্যই ক্যাডার সার্ভিসের মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া উচিত। নিম্ন আদালতে যে প্রক্রিয়ায় বিচারক নিয়োগ হয় সে ধরনের একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুদকের সব কর্মকর্তা নিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছে আদালত। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্য নিয়োগ করা উচিত সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ থেকে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিগণের মধ্য থেকে। যারা বিচার আসনে কর্মরত থাকাকালে যোগ্যতা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।