ব্রিটেনের ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। লেবার এমপি এমা রেনল্ডসকে সে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে টিউলিপ সিদ্দিক’র নাম আসার পর থেকেই তার ওপর পদত্যাগের চাপ বাড়ছিল। সম্প্রতি বাংলাদেশে দুর্নীতির একটি মামলায় তার মা, ভাই বোন ও খালার পাশাপাশি তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ছোটবোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে উপহার পাওয়া দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য গোপন সহ আর্থিক কেলেংকারি বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে রক্ষণশীল নেতা কেমি ব্যাডেনোচের কাছ থেকে তাকে মন্ত্রী পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
রাশিয়ার অর্থায়নে বাংলাদেশে পরিচালিত একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগে টিউলিপ ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গত ডিসেম্বরে দুর্নীতির এই অভিযোগের তদন্তে যুক্ত হয় টিউলিপ সিদ্দিকের নাম। তদন্তকারী কর্মকর্তারা দেশের বড় ব্যাংকগুলোকে সিদ্দিকের সাথে সম্পর্কিত অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিবরণ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেটের লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের স্ট্যান্ডার্ডস উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে পুরো ঘটনা তুলে ধরেছিলেন। সেই সাথে জোর দিয়েছিলেন যে তিনি কোনও ভুল করেননি।
টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৫ সালে উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেইট আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন, যে আসনটি প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের আসন হবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাসের লাগোয়া।
মন্ত্রী হিসাবে টিউলিপ সিদ্দিকের দায়িত্ব ছিল যুক্তরাজ্যের আর্থিক বাজারে দুর্নীতি মোকাবেলা করা। গত মাসে তার পরিবারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ব্যয় থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে নাম প্রকাশ করা হয়।
তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি আওয়ামী লীগের প্রধান। গত বছর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। লন্ডনে তার খালার সহযোগীদের সাথে সম্পর্কিত সম্পত্তি ব্যবহারের কারণে সিদ্দিক তীব্র তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন।
দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে বাংলাদেশে তদন্ত শুরুর পর চাপের মুখে অবশেষে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক।
৪৭ বছর বয়সী নতুন ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার এমা রেনল্ডস ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ওয়াইকম্ব নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য। বিবিসি ও স্কাই নিউজ