তাজমহল ‘মন্দির’ ছিল, দাবি নিয়ে আদালতে বিজেপি

এশিয়া সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

জগতজোড়া খ্যাতি রয়েছে ভারতের আগ্রাই অবস্থিত তাজমহলের। সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজের স্মরণে নির্মাণ করেছিলেন এই দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। তবে দেশটির কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর দাবি এটি ছিল মূলত ‘তেজো মহালয়’ নামে একটি মন্দির। সেই দাবি নিয়ে এবার আদালতে গিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।

বারাণসীর বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসদিজ ও মথুরায় শাহি মসজিদও আগে মন্দির ছিল বলে দাবি করে আদালতে গিয়েছে বিজেপি। এরই মধ্যে আদালত এটি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। শনিবারও সেখানে চালানো হয়েছে ভিডিয়োগ্রাফি এবং পর্যবেক্ষণের কাজ। এই প্রক্রিয়া চলার সময় বিরাট নিরাপত্তাবাহিনী গোটা এলাকা ঘিরে রাখে।

এবার তাজমহল কোনোদিন ‘তেজো মহালয়’ নামে মন্দির ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি তথ্য অনুসন্ধানী দল গড়ার আর্জি নিয়ে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চে আবেদন করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন দলটি।

দলের অযোধ্যা শাখার মিডিয়া ইনচার্জ বলে দাবি করা রজনীশ সিংহ নামে এক ব্যক্তি ওই আবেদনে তাজমহলের বন্ধ থাকা কক্ষগুলো খুলে তা খতিয়ে দেখারও আর্জি জানিয়েছেন।

এদিকে উত্তরপ্রদেশেরই কৃষ্ণ জন্মভূমিতে ১৬৬৯-৭০ সালে আওরঙ্গজেবের আমলে গড়ে তোলা শাহি মসজিদ ইদগাহ সরানো নিয়ে আবেদনের রায় স্থগিত রেখেছে আদালত। বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে দায়রা আদালতের বিচারক ১৯ মে রায়দানের ঘোষণার কথা জানিয়েছেন।১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার সময়েই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা স্লোগান দিয়ে ঘোষণা করেছিল, ‘ইয়ে তো স্রিফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়’। নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফেরার পরই হিন্দুত্ববাদীরা কাশী ও মথুরার ধর্মস্থানে মসজিদ সরানোর দাবি তুলে আসরে নামে। বিষয়টি নিয়ে মামলা গড়ায় আদালতে।

হিন্দুত্ববাদীদের দাবির তালিকায় এবারে জুড়ে গেল মোঘল স্থাপত্যের অন্যতম সৌধ তাজমহলও। এদিকে বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির বক্তব্য, ১৯৯১ সালের ধর্মস্থান সংক্রান্ত আইনে বলা রয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার দিন যেখানে যে ধর্মস্থান রয়েছে, সেখানে তা থাকবে। বাবরি ধ্বংসের এক বছর আগে তৈরি ওই আইন মানলে কাশী বা মথুরা মন্দিরের লাগোয়া মসজিদ সরানোর দাবি অনৈতিক।

বিরোধীদের অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিক্রি, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাকে আড়াল করতেই ধর্মীয় উত্তেজনা তৈরি করে বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদি সরকারের ব্যর্থতা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতেই এই বিষয়গুলো নিয়ে হাওয়া গরম করে ফায়দা তুলতে চাইছে তারা। সূত্র: আনন্দবাজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *