সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনে ভোট গণনা ছাড়াই নাহিদ সুলতানা যুথীকে সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন আইনজীবী সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের।
নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার অভিযোেগে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এস আর সিদ্দিকী সাইফ। মামলায় তাঁকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনেছেন। সেখানে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথীকে প্রধান এবং রুহুল কুদ্দুসকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়।
এই মামলার এজহারভুক্ত বেশ কয়েকজন আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরমধ্যে রয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিষ্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, আসামি আইনজীবী কাজী বশির আহমেদ, অ্যাডভোকেট তুষার, অ্যাডভোকেট তরিকুল, অ্যাডভোকেট সুমন এবং অ্যাডভোকেট উসমান।
নাহিদ সুলতানা যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী। মামলা হওয়ার পর নাহিদ সুলতানাকে গ্রেপ্তারে কয়েক দফায় তাঁর ধানমন্ডির বাসায় অভিযান চালালেও তাঁকে পাওয়া যায়নি বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নির্বাচন পরিচালনা বিষয়ক সাব কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের এক লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, সম্পাদক পদে যুথীকে বিজয়ী ঘোষণার বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে আইনানুগভাবে ভিত্তিহীন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্যাডে নির্বাচন পরিচালনা সাব কমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি গণমাধ্যমে পাঠান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাতে ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও সেদিন সারা রাত আইনজীবীদের মধ্যে দফায় দফায় হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী আহত হন। পরে ভোট গণনা না করেই সম্পাদক পদে নাহিদ সুলতানা যুথীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান।
তবে যুথীকে সম্পাদক পদে বিজয়ী বলে ঘোষণা করার জন্য বহিরাগত মাস্তানেরা নির্বাচন কমিটির প্রধান আবুল খায়েরের ওপর চাপ প্রয়োগ করে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচন ২০২৪-২৫-এর সম্পাদক পদে ফলাফল বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় আমার নামে প্রচারিত ঘোষণাটি আইনানুগভাবে ভিত্তিহীন।’
এতে আরও বলা হয়, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভোট গণনার পূর্বেই দুঃখজনকভাবে বহিরাগত মাস্তান শ্রেণি আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে তা লিখিত দিতে বাধ্য করে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যদিও এটি অর্থহীন ঘোষণা, তবু কূটতর্ক নিরসনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তা উপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’ ভোট গণনা শেষেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।