আশ্বিনের মেঘের মতন সাদা ধবধবে বিছানায় বসে-শুয়ে থাকেন আমার পিতা। অনেক রাত্তিরে কোনো এক ডাকে ধড়ফড় করে ঘুম ভেঙে চেতনা আসলে মনে হয় তার বেড সফেদ মেঘের নাও হয়ে উড়ে চলেছে মৃত্যুর রহস্যপুরীতে। রোগীদের গোঙানি কান্নার বেদনা জানালা পেরিয়ে বাতাসে মিশে যায় সান্তনার সজীব ভাষায়। টিপটিপ বৃষ্টির মতন স্যালাইন ঝরে রক্তের ধারায়; জীবনের আয়ু কমতে কমতে শেষ হতে থাকে ইনজেকশনের মতন। দেহঘরে জীবাণুর বংশবৃদ্ধি নিরাশার দিনলিপি আঁকে মনে। ওষুধের গন্ধে মরণের ছায়ারা নিঃশ্বাস ফেলে দেয়ালে দেয়ালে; নার্সের পাথর হৃদয়ের দ্বারে মুমূর্ষুর আকুতি নিষ্ফল হয়ে ঘুরেফিরে হাসপাতালের বারান্দায়। দীর্ঘ আয়ুর আশায় আব্বা ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলেন যন্ত্রণা সয়ে সয়ে। রাতদিন স্বজনের সেবা হৃদয়ে জাগায় উদ্দীপনা। অন্য দিকে চোরের মতন ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা মৃত্যুর কীটাণু সব প্রতিরোধ ভেঙে মেতে ওঠে জয়োল্লাসে।