আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট, অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টাকে অপসারণসহ তিন দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আট দল। তাদের দাবির মধ্যে আরো রয়েছে প্রশাসনের রদবদলে নিরপেক্ষ ও জবাবদিহি আওয়াতায় থাকতে পারে- এমন মনোভাবের লোকদের নিয়োগ করতে হবে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে আট দলের সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হারিম ও এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ ফজলে বারী মাসুদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মোঃ তোফাজ্জল হোসাইন ও মাওলানা জহিরুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমাদ আলী কাশেমী ও মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন এবং যুগ্ম মহাসচিব জনাব আবদুল জলিল, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার ও অর্থ সচিব মোঃ আনোয়ারুল কবির, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন এর সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ তৌহিদুজ্জামান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র (জাগপা) ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক নাঈম।
সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের বলেন, ‘একটি দল শুরু থেকেই রাষ্ট্র সংস্কারের বিরোধিতা করেছে। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন না হয়ে একটি বিশেষ দলের স্বার্থ গুরুত্ব পেয়েছে। এই ভাষণের পর গণভোটে জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে জটিলতায় ফেলে দিলো। ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো একটি দলের বিরুদ্ধে যাওয়ায় গণভোট নিয়ে তারা আতঙ্কে রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনের আগে গণভোট হলে দলটির চিন্তা চেতানার বিপরীতে যাবে। সে আশঙ্কা থেকে বলছে গণভোট হলে জীবনেও মানবে না। কিন্তু সরকার তাদের দাবির ওপর নতি স্বীকার করে একইদিনে গণভোট করার ঘোষণা দিয়েছে। এতে সংস্কারের বিষয়টি গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। কারণ, নির্বাচনের দিন নিজ দলের পক্ষে ভোট পাওয়ার জন্য সবাই মনোযোগী হবে। পরে গণভোটে ভোট কম পড়লে, যারা সংস্কার চাচ্ছে না তারাই বলবে- এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। আমরা মনে করি এটা একটা ফাঁদ। বুঝে হোকো আর না বুঝে হোকে সরকার সেই ফাঁদে পা দিয়েছে।’
এ সময় তিনি তিনজন উপদেষ্টাকে অপসারণ করার দাবি জানান। তিনি জানান, আপাতত তিনি সেই তিন উপদেষ্টার নাম বলবেন না, তবে ব্যবস্থা না নিলে প্রকাশ করে দেবেন। তিন উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টাকে নানাভাবে বিভ্রান্তক করছে। তাকে ভুল বুঝিয়ে একটি বিশেষ দলকে সুযোগ দেয়ার চেষ্টা চলছে। জনগণ গত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। কিন্তু আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কি না তা নিয়ে আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি। সম্প্রতি প্রশাসনে যে রদবদল হচ্ছে সেখানেও একটি দলকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবার কোনো সম্ভাবনা নেই।
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, আমরা আট দলসহ আরো কিছু দল চাই, ফেব্রুয়ারি মাসে রোজার আগে নির্বচন সফল হক। এর জন্য আমরা মাঠে কাজ করছি। কিন্তু যেই কারণে জনগণ ১৫ বছর ভোট থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, আবারো সেই অবস্থা তৈরি হয়েছে। আরেকটি পরিকল্পিত নির্বাচন হতে যাচ্ছে কি না, তা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

