৮৬ বছর পর ফের আয়া সোফিয়া ফাতিহ মাদরাসা উদ্বোধন

আন্তর্জাতিক ধর্ম ও দর্শন শিল্প-সংস্কৃতি সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

বন্ধ হয়ে যাওয়া তুরস্কের ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া ফাতিহ মাদরাসা ফের চালু করা হয়েছে। ৮৬ বছর আগে মাদরাসাটি বন্ধ করে দেয়ার পর ফের তা চালু হলো।

শুক্রবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান আনুষ্ঠানিকভাবে মাদরাসাটি উদ্বোধন করেন। এটি এখন থেকে সুলতান মোহাম্মদ আল ফাতিহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি শিক্ষা গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে পরিচালিত হবে। মাদরাসাটির পুনঃনির্মাণ ও প্রস্তুতে তত্ত্বাবধান করেছে তুরস্কের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

মাদরাসাটি ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া মসজিদের পাশে অবস্থিত। মাদরাসার ভবন নির্মিত হয়েছে পুরনো সেই মাদরাসার ধ্বংসাবশেষের ওপরে। যেটি ১৯৩৬ সালে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। যখন আয়া সোফিয়াকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়।

ঐতিহাসিক ও পুরনো মাদরাসার ভবনের প্রয়োজনীয় স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ করে বিশেষ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে নতুন ভবন পুনঃনির্মাণ করা হয়।

শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রজব তাইয়েব এরদোগান বলেন, ‘আমরা আমাদের মহান অতীতকে বর্তমান ও ভবিষ্যতের সাথে জুড়েছি। আমাদের জনগণের সাথে তাকে একত্রিত করার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ইস্তাম্বুল বিজয়ের পর, শহরের প্রথম মাদরাসা হিসেবে আয়া সোফিয়ার পাশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই ফাতিহ মাদরাসা।

এরদোগান বলেন, মাদরাসাটি ১৯২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত এবং নির্মাণের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে যারা দেশের ঐতিহ্যের ইতিহাস মুছে ফেলতে চেয়েছিল। তারাই এই মাদরাসা ভেঙে দিয়েছিল। সেই ঐতিহাসিক মাদরাসা নতুন করে পথ চলা শুরু করল।

এরদোগান বলেন, মাদরাসাটি আবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র পরিণত হবে। এই মাদরাসা পরিচালিত হবে সুলতান মোহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে।

মাদরাসার অবদান তুলে ধরে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, এই আয়া সোফিয়া ফাতিহ মাদরাসা প্রায় সাড়ে চার শতাব্দী ধরে অগণিত আলেম তৈরি করেছে। ফের এই এটি অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। আমি আশা করি এখন থেকে এই মাদরাসা থেকে বের হবে আগামী দিনের খ্যাতনামা আলেম, বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী এবং গবেষক।

মাদরাসাটির নাম ফতেহ অর্থাৎ বিজেতা থেকে নেয়া হয়েছে। সুলতান দ্বিতীয় মোহাম্মদ ১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপল জয় অর্থাৎ ফাতাহ করেছিলেন। আর এর মাধ্যমে তিনি হয়েছিলেন ফাতিহ। এখান থেকেই মাদরাসার নাম ফাতিহ রাখা হয়।

ফাতিহ মাদরাসার নতুন ভবনটি কাঠের এবং ধাতব স্থাপত্যের মিশ্রণে তৈরি। কাঠের গার্ডার এবং লোহার সাহায্যে এই কাঠামো বানানো হয়েছে। এর সম্মুখভাগটি পাথরের আচ্ছাদন দিয়ে নির্মিত। ১৪৭৩ বর্গ মিটার অর্থাৎ ১৫৮৫৫ বর্গফুট জায়গার ওপর নির্মিত মাদরাসাটি। এখানে তিনটি চত্বর রয়েছে। প্রতিটি চত্বরে রয়েছে কাঠের ওয়াকওয়ে। তবে পুরানো মাদরাসার অবশিষ্টাংশগুলিও খুব সুন্দরভাবে সংরক্ষিত আছে। সূত্র : টিআরটি ও আরটি ডট এজেন্সি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *