বেসামরিক নাগরিকদের বিচার সামরিক আদালতে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সেনাবাহিনীর হাতে আটক দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শতাধিক সমর্থকের বিচার কার্যক্রম আটকে দিয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে বলা হয়, সেনানিবাস ও সামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগে গ্রেফতারদের সামরিক আদালতে বিচার পাকিস্তানের সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তাই সুপ্রিম কোর্ট গ্রেফতারদের বিচার বেসামরিক আদালতে করার নির্দেশ দিচ্ছে।
সোমবার পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ইজাজ উল আহসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মুনিব আখতার, বিচারপতি ইয়াহিয়া আফ্রিদি, বিচারপতি সৈয়দ মাজার আলি আকবর নাকভি এবং বিচারপতি আয়শা মালিক।
গত ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজিরা দিতে গিয়ে আদালত চত্বর থেকেই গ্রেফতার হন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খান। তার গ্রেফতারের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পিটিআইর ক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা দেশটির চার প্রদেশ ও তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন সেনানিবাস ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালান। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পিটিআইর শতাধিক কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেফতারকৃতদের বিচার করা হবে সামরিক আদালতে। সামরিক বাহিনীর এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করেছিল পাকিস্তানের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও পিটিআই নেতা আইতজাজ হাসান সামরিক বাহিনীর এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন। সোমবার সেই আপিলের ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
এই রায়কে অভিনন্দন জানিয়ে আইতজাজ হাসান বলেন, আজকের এই রায় খুবই তাত্পর্যপূর্ণ এবং এর মাধ্যমে পাকিস্তানের সংবিধান, আইন ও বেসামরিক প্রতিষ্ঠান আরো একবার শক্তিশালী হলো।