সরকার সাঈদীর মতো খালেদা জিয়াকেও মারতে চায়: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

আওয়ামী লীগ সরকার মাওলানা সাঈদীর মতো খালেদা জিয়াকেও মারতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার দুপুরে বগুড়া সদরের এরুলিয়া হাটখোলায় বগুড়া থেকে রাজশাহীর রোড মার্চের কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের রাজশাহী বিভাগে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন এ কর্মসূচি পালন করছে। বগুড়া থেকে শুরু করে সান্তাহার, নওগাঁ হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটারের এ রোডমার্চের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধী দল যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সে জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে জেলে রেখেছে। তার সঠিক চিকিৎসা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি আজ মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন। সরকার জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে জেলে ঢুকিয়ে মেরে ফেলেছে। তেমনি তারা খালেদা জিয়াকেও মারতে চায়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, স্বৈরাচার সরকারকে পরাজিত করতে ক্ষুব্ধ তরুণ সমাজ জেগে উঠেছে। সে কারণেই রোড মার্চ করছে তরুণদের তিন সংগঠন। তিনি বলেন, মানুষের বুকের উপর চেপে বসা জগদ্দল পাথর সরাতে রাজপথে নেমে আসুন। সরকারকে বিদায় না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের পর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পরিস্কার করে বলতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করেন। তা না হলে সকল দায়-দায়িত্ব আপনাদেরকে নিতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের কথা পরিস্কার, এখন এক দফা এক দাবি পদত্যাগ করো, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করো। আজকে সমগ্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এক হয়েছে। আসুন জনগণকে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। আজকের এই সমাবেশ থেকে এই বার্তা বাংলাদেশের জনগণকে দিতে চাই, আসুন জেগে উঠুন, পরাজিত করুন এদেরকে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখন চালের দাম কত? ৭০/৮০ টাকা তাই না। কত খাওয়াবে বলছিলো? ১০ টাকা। পাইছেন। না। চাল, ডাল, তেল, লবন, আলু প্রত্যেকটা জিনিসের দাম আকাশচুম্বি। মা- বোনেরা তাদের ছেলে-মেয়েদের ডিম দিতে পারে না। দ্রব্যের মূল্য কমানোর ব্যাপারে সরকারের কোনো খেয়াল নাই। বলে দাম তো ফিক্সড করে দিয়েছি। দাম ফিক্সড করলে কি দাম কমানো যায়। চুরি তো করো তোমরা। চুরি করে বিদেশে পাঠায়। আর বলো দাম ফিক্সড করে দিয়েছি।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভোট চুরির প্রকল্প আবারো হাতে নিয়েছে সরকার। ভোট চুরির সাথে জড়িতদের শুধু বিদেশি স্যাংশন নয়, এদেশেও তাদের বিরুদ্ধে স্যাংশন দেয়া হবে। চুরির সাথে জড়িত আ.লীগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগের একাংশের তালিকা করুন। তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তাদের তালিকা জন সম্মুখে প্রকাশ করা হবে। যে দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় বসবে সে দিন থেকে আমাদের আন্দোলন বন্ধ হবে।

প্রধান বক্তা যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু বলেন, সবাই ওইক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। রোড মার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান ও হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু।

জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের রোড মার্চ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন বগুড়া থেকে রাজশাহী অভিমুখী রোড মার্চ কর্মসূচির উদ্বোধনী পথসভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ইয়াসিন আলী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা প্রমুখ। পথসভা শেষে মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে রোড মার্চের গাড়িবহর রাজশাহী অভিমুখে রওনা দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *