মানিব্যাগ | মোহাম্মদ আজহার

গল্প-উপন্যাস সময় সাহিত্য
শেয়ার করুন

মাথাটা ভনভন করছে। চোখেমুখে সবকিছু ঝাপসা দেখছি। বাসা থেকে বের হবো কি হবো না সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। অথচ আজ একটা পরীক্ষাও আছে। গত কয়েকদিন পড়বো পড়বো করে পড়া হয়নি। কারণটা অগোচরেই থাক। হতে পারে পড়ায় মনোযোগ উঠে গেছে। অথবা বইটাও কেনা হয়নি। অথবা পড়ার মত মানসিক সাপোর্ট পাইনি। কতকিছুই তো হতে পারে।

সে যাই হোক। পরীক্ষার জন্য বের হবো।

কিন্তু এর আগে প্রবল সন্দেহ হচ্ছিলো; মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও শুয়ে পড়েছি। চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি। ঘুমের কোনো নামগন্ধ নেই। চোখেও প্রচণ্ড ব্যথা করছিলো।

ইতোমধ্যে নাহিদ মানে আমার রুমমেট পরীক্ষার জন্য বেরিয়ে গেছে। সকাল ৮টার ট্রেনে ক্যাম্পাসে যাবে নাহিদ। সঙ্গে সাকিব সিনথিয়া- ওরাও নিশ্চয়ই আছে। সবাই পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে। অজানা কারণে এই প্রথম কোন পরীক্ষা নিজ ইচ্ছায় না দিয়ে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। কিন্তু ঘুমাতেও তো পারছি না।

কয়েকদিন হলো পকেটে হাত খরচের টাকা একেবারেই নেই। শেষ কয়েকদিন বন্ধুদের সুবাধে নাস্তা-পানির চিন্তা করতে হয়নি। কিন্তু এভাবে আর ক’দিন? আজও পকেটে একটা দুই টাকার নোট আর একটা পাঁচ টাকার কয়েন ছাড়া কিছুই নেই। বাসায় তো সকালে রান্না হয় না। ক্যাম্পাসে গিয়েই কিছু না কিছু খেতে হবে। নাহ! আজ বড্ড লজ্জা হচ্ছে। তাই আজ ক্যাম্পাসে যাবো না। এটাই ফাইনাল সিদ্ধান্ত। তাছাড়া পরীক্ষার যে খুব ভালো প্রস্তুতি আছে, তাও না।

হঠাৎ সাকিবের ফোন;

কিরে! তোর সমস্যা কি?
👉ডায়নামিক ওয়েবসাইট দিয়েই গড়ে তুলুন আপনার প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি। সেবা দেয়ার জন্য সবসময় আপনার পাশে আছে ‘ভার্সডসফট’।

প্রস্তুতি নাই দোস্ত।

তোর প্রস্তুতি ছিলো কবে?

কথা বেশি না বলে পরের ট্রেনে চলে আয়। আমরা আছি, শর্টকার্ট কিছু শীট পড়ে পরীক্ষাতে অ্যাটেন্ড কর।

কেমন যেন একটা ভরসা পেলাম। দৌড়ে বেরিয়েছি। একই ট্রেনেই গিয়েছিলাম। পরীক্ষাটাও তেমন ভালো হয়নি। সেদিন দু’বার নাস্তার বিল দু’বার রিকশা ভাড়া সব টাকাই কেউ না কেউ দিয়ে দিয়েছে। মনটা স্বাভাবিক হলো। ভাবলাম যেভাবেই হোক আরও একটা দিন কেটে গেল।

মানিব্যাগে সেই সাত টাকার পুরোটাই রয়ে গেছে। সারাদিনের সবকিছুর ব্যবস্থা উপরওয়ালা কি নিখুঁতভাবেই না করে দিয়েছেন। তবুও মানিব্যাগের ওপরেই আমাদের যত ভরসা। কি অদ্ভুত!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *