বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার ও তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সারা দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ করছে। জনগণ এই কর্মসূচিতে রাজপথে নেমে আসছে। প্রতিদিনই পুলিশ নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করছে, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে, তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালাচ্ছে, নেতা-কর্মীদের না পেয়ে তাদের বাবা-ভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অবরোধ রুখতে পারছে না। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, এসব করে এবার সরকার পার পাবে না, এসব করে অবৈধ ক্ষমতাকে আর এক্সটেনশন করা যাবে না, জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে দমানো যাবে না।
অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ফকিরাপুলের কাছে মিছিল শেষে রুহুল কবির রিজভী একথা বলেন। সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন- নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে এবং তাদের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। এর বাইরে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।
এই সময়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলসহ ছাত্র দল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা ছিলেন। মিছিলকারীরা ‘এক তরফা তফসিল মানি না, মানব না’, ‘অবরোধ চলছে, অবরোধ চলবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সরকারের পদত্যাগ ও ‘একতরফা’ তফসিল বাতিলের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে সকালে রাজধানীর ফকিরাপুল, মতিঝিলসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় ফকিরাপুল সড়কে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে এই মিছিল বের হয়।
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে রাজধানী ঢাকায় মিছিল হয়েছে। এছাড়া পান্থপথে স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াছিন আলী ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান এবং মেরুল বাড্ডায় ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ধোপখোলার কাঠের পোলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার নেতৃত্বে ‘ঝটিকা’ মিছিল হয়েছে। তারা ‘ভোট চোর ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট চোর, ‘এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা তুই কবে যাবি’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সরকার পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবি ও নির্বাচন কমিশনের ‘এক তরফা’ তফসিল বাতিলের দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলের এটি ষষ্ঠ দফা অবরোধ কর্মসূচি। গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে নেতা-কর্মীদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান চালায়। এরপর গ্রেফতার করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে। এরপর থেকে গ্রেফতার-দমনপীড়নের প্রতিবাদে বিএনপি হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যায়। এই পর্যন্ত অবরোধের পাশাপাশি তারা দুই দফা হরতালও করেছে। ষষ্ঠ দফায় ৪৮ ঘণ্টার এই অবরোধ শেষ হবে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৬টায়।
