বি-ইসলামীকরণ ।। ড. আবদুল লতিফ মাসুম

প্রবন্ধ-কলাম
শেয়ার করুন

বি-ইসলামীকরণ (DE-ISLAMIZATION) একটি তাত্ত্বিক ধারণা। ব্যক্তি, রাষ্ট্র ও সমাজে ইসলামের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও শিক্ষা-সংস্কৃতিকে বিযুক্তকরণ বা নিষ্ক্রিয়করণ এর আলোচ্য বিষয়। আরও সুনির্দিষ্ট করে ধর্ম নিরপেক্ষকরণ, আধুনিকায়ন এবং পাশ্চাত্যকরণ বলা যেতে পারে। বিষয়টি ইতিহাসের মতই পুরোনো। অতি সাম্প্রতিককালে এটি নতুন বাস্তবিকতা ও রাজনৈতিক বিষয় হিসেবে উপস্থাপিত হচ্ছে। মধ্যযুগ থেকে উপনিবেশিক সময়ে উত্তরণের পর্যায়ে এর ব্যাখ্যা ও বাস্তবায়ন ছিলো নির্মম, নিষ্ঠুর ও নির্যাতনের। এটি সেই সময়ের কথা যখন আন্দালুসিয়া বা স্পেন পর্তুগাল থেকে মুসলিম জনগোষ্ঠী একরকম নিশ্চিহ্ন করা হয়।

ইউরোপীয় উপনিবেশিক শক্তিগুলো প্রাচ্য কিংবা পাশ্চাত্যে একই ধারা অনুসরণ করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ১৫শ’ শতাব্দীতে ফিলিপাইনে মুসলিম জনসংখ্যা ছিলো ৭৫ শতাংশ। ডাচদের ক্রমাগত অন্যায় অত্যাচারে এখন সেখানে মুসলিমদের সংখ্যা মাত্র ৫ শতাংশ। সময় যত গড়িয়েছে উপনিবেশিক শক্তিগুলোর কৌশল ততই পরিবর্তিত, পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত হয়েছে।

আমাদের এই জনপদ ব্রিটিশ শাসনের প্রায় দুশো বছরে বিসর্জিত হয়েছে ইসলামের শিক্ষা, দীক্ষা ও অনুশাসন। এডওয়ার্ড সাইদের ভাষায় আমাদের ভাবতে বাধ্য করা হয়েছে তাদের মতো করে। ফলে মেকলের প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থায় তৈরি হয়েছে ব্রিটিশ মানসে ‘ব্রাউন ব্রাদার’স’। তাদের গায়ের রং বাদামী কিন্তু মন মগজে, আচার আচরণে ও শিক্ষা সংস্কৃতিতে তারা ব্রিটিশ। সুদীর্ঘ কালের শাসন ও ত্রাসনে বিতাড়িত হয়েছে ইসলাম। সেই কবে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়েছে। কিন্তু তাদের শাসন ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা ও রাজনীতি উত্তরাধিকারসূত্রে অব্যাহত রয়েছে।

উপনিবেশিক শাসন অবসানের পর সেই পুরোনো ধারার বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া পরিত্যাক্ত হয়েছে। তার বদলে নতুন কলাকৌশল অনুসৃত হয়েছে। ইসলামের নামধারী ‘বাদামী ব্রিটিশরা‘ বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়াকে দিয়েছে নতুন নাম, ধাম ও পরিচয়। ইসলামের পরিচয়কে মনে করা হয়েছে প্রগতির প্রতিবন্ধক হিসেবে। কামাল আতাতুর্করা ইসলাম বিতাড়নকে তাদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সোপান হিসেবে গ্রহণ করেছে।

গোটা মুসলিম বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন হলেও মন ও মগজে অধীন থেকে গেছে। ইসলামের শিক্ষা ও ব্রিটিশদের দীক্ষা মুসলিম মানুষকে জগাখিচুড়ির রূপ দিয়েছে। পাশ্চাত্যের টাই-কোটের উপরে স্থান পেয়েছে মাথার টুপি। পোশাক পরিচ্ছদে যেমন, তেমনি আজব অবস্থা ভাষা, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও প্রশাসনে। কোন কোন সমাজতত্ত্ববিদ মুসলিম বিশ্বের এই দুরবস্থার জন্য এই ‘ওয়েস্টমিনিয়া’কে দায়ী করেছেন।

পৃথিবীর সমাজ ও সভ্যতা যতই এগিয়েছে ততই বেড়েছে এই দ্বন্দ্ব ও বৈপরিত্বের সংঘাত। পুরোনো উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ এর বদলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নয়া সাম্রাজ্যবাদ। তারা মুসলিম বিশ্ব সরাসরি শাসন করে না, কিন্তু প্রভুত্ব তাদের ষোলো আনা। দ্বৈত বৈশ্বিক ধারণার অবসান হয়েছে। মার্কিন সোভিয়েত ঠান্ডা যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটেছে।

আর নতুন করে জেঁকে বসেছে নয়া বিশ্ব ব্যবস্থা (NEW WORLD ORDER)। এই একক বৈশ্বিক ব্যবস্থায় মুসলিম বিশ্বের অবস্থা হয়েছে আরও শোচনীয়। দখল হয়েছে আফগানিস্তান। অধিকৃত হয়েছে ইরাক। প্রভুত্বের প্রতিযোগিতায় নতজানু হয়েছে অনেক আরব রাষ্ট্র। যাদের কেউ কেউ দাবী করেন ইসলামের অভিভাবক তথা পবিত্র নগরীদ্বয়ের খেদমতগার। ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও শিক্ষা সংস্কৃতিকে ঝেড়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু ক্ষমতার স্বার্থে তারা ইসলামের শত্রুদের সাথে করছেন গলাগলি আর মিত্রদের সাথে লড়ছেন পাঞ্জা। গাজা বা ফিলিস্তিনে ইসলামের শত্রু ইসরাইলের নির্মম আক্রমণ তাদের তেমন করে বিচলিত করে না। এটাই বি-ইসলামীকরণের ফলাফল।

পাশ্চাত্য তথা একক বিশ্বের দাবীদাররা মুসলিম বিশ্বের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও জীবন বোধের পরিবর্তে ধর্ম নিরপেক্ষকরণ বা ইসলাম পরিহারকে আজকাল রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করেছে। ইসলামের বিপরীতে সুন্দর সুন্দর শব্দাবলীর আড়ালে জনগণকে ইসলাম বিমুখ করার পরিকল্পনা নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এগুচ্ছে তারা। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের ধ্বজাধারীরা মুসলিম বিশ্বের দেশসমূহের মূলনীতি পরিবর্তনে শক্তি প্রয়োগ ও চাপ প্রয়োগের অপকৌশল অবলম্বন করছে। তারা ইসলামের নতুন ব্যাখ্যা আবিষ্কার করছে। তারা ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদকে ইসলামের পরিপূরক, গণতন্ত্রকে ইসলামের সমরূপ এবং মানবাধিকারকে ইসলামের অংশ বলে তাদের মতো করে ব্যাখ্যা করছে। এভাবে গোটা মুসলিম বিশ্বব্যাপী দ্বৈধতা সৃষ্টি করছে। ইহুদী বুদ্ধিজীবী এস পি হান্টিংটন যার নাম দিয়েছেন ‘সভ্যতার দ্বন্দ্ব (CLASH OF CIVILIZATIONS)।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশ এই সভ্যতার দ্বন্দ্বের প্রকৃষ্ট প্রমাণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ এর সংকটের ধারাবাহিকতায় পাশ্চাত্য বাংলাদেশে ইসলামীকরণের আপদ বিপদে আতঙ্কিত হয়। তখনকার ক্ষমতাসীন সরকারে প্রধান ইসলামী দলের অংশগ্রহণে তাদের গা জ্বালা শুরু হয়। তখনকার বিরোধী দল অর্থাৎ আজকের ক্ষমতাসীনরা সে আতঙ্কে তথ্য উপাত্ত ও গবেষণা দিয়ে ঘি ঢেলে দেয়। বাংলাদেশে উত্থিত স্লোগান ‘আমরা সবাই তালেবান বাংলা হবে আফগান’ তাদেরকে হস্তক্ষেপের মওকা তুলে দেয়। প্রতিবেশী এতে রূপ রস গন্ধ ঢেলে দিয়ে জাতীয়তাবাদী ও ইসলাম প্রভাবিত সরকারের পরিবর্তন অনিবার্য করে তোলে।

২০০৭ সাল থেকে প্রতিবেশী ও দূরবর্তী একক বৈশ্বিক শক্তির প্রযোজনায় বাংলাদেশে বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া শক্তভাবে এগিয়ে চলেছে। কখনো নীরবে অথবা কখনও সরবে বার বার জানান দিচ্ছে তাদের প্রত্যাশিত পরিকল্পনার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তাদের ‘প্যাকেজ ডিল’ এর ক্রমশ বাস্তবায়নের প্রমাণ দিচ্ছেন।

১. প্রধান ইসলামী দলকে নিশ্চিহ্ন করবার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ২. সংবিধানে জিয়াউর রহমান সংযোজিত ‘আল্লাহর উপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাস’ বাতিল করা হয়। এর পরিবর্তে পরিত্যক্ত ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ ফিরিয়ে আনা হয়। ৩. শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে প্রচলিত ব্যবস্থাকে বাতিল করে বস্তুবাদী ও পাশ্চাত্যমুখী শিক্ষানীতি আরোপ ও বাস্তবায়ন করা হয়। ৪. তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের আড়ালে নাস্তিক ও ইসলাম বিরোধী শক্তির সাময়িক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। ৫. অনিবার্য প্রতিবাদ হিসেবে উত্থিত হেফাজতে ইসলামকে নির্মম রক্তপাতের মাধ্যমে পরাজিত করা হয়। ৬. মেকিয়াভেলিয়ান কৌশল অবলম্বন করে পরাজিত হেফাজতে ইসলামকে অবশেষে গণভবনে ডেকে নেয়া হয়। ৭. মদিনার সনদ আর কওমী জননীর খেতাব নিয়ে লাঠি ও মুলোর কৌশলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতারিত করা হয়। ৮. ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর হত্যা ও নিপীড়নের নায়ক যখন বাংলাদেশে আসে তখন আলেম সমাজের প্রতিবাদের কারণে তাদের উপর অত্যাচারের স্টিম রোলার চালানো হয়। ৯. মসজিদের শহরকে মূর্তির শহরে পরিণত করা হয়। ১০. অর্থ ও ভীতির বিনিময়ে ইসলামী শক্তিকে নির্বাচনে বিভাজন করা হয়।

এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। ২০২৪ সালের ০৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের পর পূর্ব কথিত ‘প্যাকেজ ডিল’ এর আওতায় মার্কিন-ভারত নীল নকশায় বাংলাদেশের ইসলাম ও মুসলিম সংস্কৃতির উপর পরিকল্পিতভাবে আঘাত করা হচ্ছে। প্রথমত- পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে এদেশে প্রচলিত ও ধারণকৃত ইসলামী মূল্যবোধের সংস্কৃতি নির্মূলের অপচেষ্টা করা হয়। মোদি সরকার মুসলমানদেরকে যেমন আক্রমণকারী ও বহিরাগত বলে প্রমাণ করতে চায়! এখানেও পাঠ্য পুস্তকে বখতিয়ার খলজিকে আক্রমণকারী ও মন্দির ধ্বংসকারী বলে অভিহিত করা হয়।

দ্বিতীয়ত-সমাগত রমযান উপলক্ষে সর্বত্র সব সময়ে আহূত ইফতার কালচার বন্ধের মাধ্যমে বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়। রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে ইফতার মাহফিল না করার আবেদন জানিয়ে প্রতিবেশী দেশের প্রতিধ্বনি করা হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে ইফতার পার্টি না হতে পারে সেজন্য শাসক দলের শিক্ষার্থী অংশকে লেলিয়ে দেওয়া হয়। শিবিরের নাম দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় অনুভূতিকে অপমান করা হয়।

তৃতীয়ত- স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রমযান মাসে সাধারণত ছুটি থাকে। সামান্য ব্যাপারকে আদালতে নিয়ে তারা অন্যায় ও অসামান্য সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়।

চতুর্থত-দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অন্যত্র ছাত্রীদের হিজাব খুলতে বাধ্য করে তারা ভারতের সমান হতে চায়।

পঞ্চমত- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরআন শিক্ষা ক্লাস বন্ধ করে তারা বি-ইসলামীকরণের উদাহরণ রাখে।

প্রাথমিক আলোচনায় প্রমাণিত হয়েছে যে, বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া একটি দীর্ঘমেয়াদী অপকৌশল। সম্প্রতি বাংলাদেশে বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা কর্ম একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত গবেষণা পত্রের শিরোনাম INVENTING ISLAM (ISM): DE-ISLAMIZATION UNDER SECULAR AUTHORITARIANISM IN BANGLADESH. গবেষণা কর্মের লেখক মোঃ আশরাফ আজিজ ইশরাক ফাহিম বাংলাদেশে বি-ইসলমীকরণ প্রক্রিয়ার আদি অন্ত তুলে ধরেন। তিনি এটিকে ইসলাম ও ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীদের দ্বন্দ্ব বলেও প্রমাণ করেন।
বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ কর্তৃত্ববাদী করকারের দ্বিমুখী নীতি ও কৌশল সম্পর্কে আলোকপাত করেন। কিভাবে সমাজ রাজনীতি ও সংস্কৃতি বি-ইসলামীকরণ প্রকৌশলে পরিচালিত হচ্ছে তার প্রমাণ রাখেন।

গবেষক গণতন্ত্রের নামে অবৈধভাবে নির্বাচনকে জনবিচ্ছিন্ন বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া বলেও অভিহিত করেন। তিনি আশংঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এ ধরনের বি-ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। প্রতিবেশী ও দূরের প্রভুদের পরিকল্পনা মোতাবেক বাংলাদেশের মৌলিক পরিচয় মুছে দিয়ে কৃত্রিম পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস নেয়া হবে।

বাংলাদেশসহ গোটা মুসলিম বিশ্ব এই ক্ষতিকারক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা একমত যে, মরক্কো থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত মুসলিম বিশ্বের প্রায় সবটুকুই উপনিবেশিক জাঁতাকলে নিষ্পেষিত হয়েছে। সেই প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া আজও বহমান এই কারণে যে, এসব জাতি স্বকীয় সত্তার সন্ধানে ব্যর্থ হয়েছে।

ইসলাম মুসলিম জাতিকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিপরীতে স্বকীয় আদর্শ ও পরিচয় দিয়েছে। এই স্বকীয় আদর্শ ও পরিচয়কে ধারণ করে দেশজ ভাষা ও সংস্কৃতির সংমিশ্রণে গড়ে উঠতে পারে নিজস্ব একান্ত জাতিসত্তা। সেই মঞ্জিলে মকসুদে পৌঁছাতে হলে জনগণের প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন। নির্বাচনের মতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সেই ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে। গোটা জাতি সেই লক্ষ্যে পরিচালিত হোক সেটিই সকলের প্রত্যাশা।

* ড. আবদুল লতিফ মাসুম অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় Mal55ju@yahoo.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *