ভারতে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ভারতের হিন্দুরা এবার বারানসিতে জ্ঞানবাপী মসজিদকে টার্গেট করেছে। তারা দাবি করছে, বারানসিতে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির সংলগ্ন জ্ঞানবাপী মসজিদস্থলে আগে হিন্দুদের মন্দির ছিল।
বিবিসি বাংলায় শুভজ্যোতি ঘোষ লিখেছেন, এ দেশে পর্যবেক্ষকরা সবাই প্রায় একবাক্যে বলে থাকেন বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার ঘটনা যেমন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের ভিতেই সমূলে আঘাত করেছে, তেমনি রামমন্দির আন্দোলনের সূত্রেই দেশের শাসনক্ষমতায় হিন্দুত্ববাদী শক্তির আসার পথ প্রশস্ত হয়েছে।
অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরীর প্রচারণা চলার সময় থেকেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বিজেপির টার্গেট ছিল কাশীর জ্ঞানবাপী ও মথুরার শাহি ঈদগাহ। এখন তারা সে পথেই অগ্রসর হচ্ছে।
মসজিদ চত্বর জরিপ করার নির্দেশ দিয়েছিল বারানসি জেলা আদালত। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) জরিপের প্রতিবেদনে হিন্দুদের দাবির পক্ষে তথ্য পাওয়া গেছে বলে তাদের আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন।
জৈনের দাবি, যে কাঠামোর ওপর মসজিদ তৈরি হয়েছে তাতে হিন্দুদের মন্দিরের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। মন্দির তৈরির সময় থামের চরিত্রে কিছুটা বদল ঘটানো হয়েছিল। একই থাম ও প্লাস্টার মসজিদ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়েছে।
আইনজীবী জৈন দাবি করেছেন, জরিপের সময় কাঠামোতে যেসব লিপির সন্ধান পাওয়া গেছে, সেগুলো সাধারণত প্রাচীন হিন্দু মন্দিরে দেখা যায়। সে রকম মোট ৩৪টি লিপির সন্ধান পাওয়া গেছে বলে তিনি দাবি করেন। সেগুলো দেবনগরী, তেলুগু, কন্নড়ের মতো ভাষায় লেখা। তাতে জনার্দন, রুদ্র, উমেশ্বর (শিব) প্রভৃতি দেবতার নাম নাকি পাওয়া গেছে।
বারাণসীর জেলা বিচারকের কাছে এএসআই এই রিপোর্ট জমা দিয়েছে। কিন্তু তিনি এই রিপোর্ট প্রকাশ করেননি। জানিয়েছেন, রিপোর্ট খুবই সংবেদনশীল। তাই এই রিপোর্ট নিয়ে কোনো ভুল তথ্য প্রচারিত হোক, তা তিনি চান না।
কিন্তু আইনজীবী বিষ্ণু জৈন বলেছেন, এই রিপোর্ট তিনি হাতে পেয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি রিপোর্টের কিছু অংশ পড়েও শুনিয়েছেন।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের পর বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে এই রিপোর্টে ভারতের মুসলিম সমাজে ব্যাপক উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।