অনুবাদ:মাসুম খলিলী
এক. প্রতিদিন প্রায় ৭০ হাজার চিন্তা আমাদের মাথা ভরিয়ে দেয়। ভালো ও মন্দ উভয় ধরনের। আপনাকে তা থেকে বেছে নিতে হবে- ক্রোধ, বিদ্বেষ, হিংসা অথবা ইতিবাচক ও শান্তির ভাবনা। এ জন্য সাবধান হোন, সতর্ক থাকুন।
দুই. আপনি যখন অন্যদের আন্তরিক প্রশংসা করেন, অন্যের জন্য অনুপ্রেরণার বাণী উচ্চারণ করেন অথবা শুধুমাত্র একটি উষ্ণ হাসি দেন, তখন এর মাধ্যমে আপনি তাদের জন্য পৃথিবীকে আরও ভালো করে তুলছেন। আপনি তাদের মধ্যে প্রশংসিত ও মূল্যবান মনে হবার বোধ তৈরি করছেন। এতে আপনি নিজেও আরও পরিপূর্ণ বোধ করবেন কারণ আপনি এমন কিছু করেছেন যাতে অন্য কারও জীবন আরো ভালো হয়ে ওঠে।
পূনশ্চঃ
এক. আপনার সবচেয়ে বড় শত্রুকেও মিথ্যা বলতে দেবেন না অপনাকে। শয়তান আপনাকে বিশ্বাস করতে প্রতারণা করবে যে জিনিসগুলি পরিবর্তন হবে না এবং আপনি জীবনের জন্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছেন। সে আপনার মনে এটাই রিপ্লে করতে থাকবে। মনে রাখবেন, আপনি যা কিছুর মুখোমুখি হন না কেন, সর্বশক্তিমান তাৎক্ষণিকভাবে সেটিকে ঘুরিয়ে দিতে পারেন।
দুই. লোকেরা আপনাকে পছন্দ করে না বলে তা নিয়ে চিন্তা করবেন না। তারা তাদের মনে আপনার যে চিত্র তৈরি করেছে তার দায়িত্ব তাদের, আপনার নয়। সর্বশক্তিমানের আশীর্বাদের সাথে নিজের সেরা সংস্করণ হওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের সাথে শান্তিতে থাকুন।
তিন. প্রতিদিন প্রায় ৭০ হাজার চিন্তা আমাদের মাথা ভরিয়ে দেয়। ভালো ও মন্দ উভয় ধরনের। আপনাকে তা থেকে বেছে নিতে হবে। ক্রোধ, বিদ্বেষ, হিংসা অথবা ইতিবাচক ও শান্তির ভাবনা। এ জন্য সাবধান হোন, সতর্ক থাকুন।
চার. আপনার প্রতি আশীর্বাদে অতিউচ্ছসিত হবেন না। আপনি যত বেশি কৃতজ্ঞ, ততই বেশি কিছু মহান আল্লাহ আপনার পথে প্রেরণ করবেন। এগিয়ে যাওয়ার উপায় হ’ল আপনার ইতিমধ্যে যা আছে তা লালন করা। তাঁর উপহারের প্রশংসা করতে শিখুন। কৃতজ্ঞতা হ’ল প্রতিটি বিষয়ে কৃপা চাওয়া। এটি একটি শক্তিমান দৃষ্টিভঙ্গি!
পাঁচ. এই মুহূর্তে যদি আপনি হতাশ এবং নিরাশ হয়ে পড়ে থাকেন তবে আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে যে আপনি অপ্রত্যাশিত এবং অস্বাভাবিক উপায়ে সর্বশক্তিমানের অনুগ্রহ পেতে চাইছেন। যতক্ষণ আপনি তাঁর প্রতি আস্থা রাখেন ততক্ষণ তিনি আপনার কষ্ট, চ্যালেঞ্জ এবং দুঃখকে আপনার অনুকুলে এনে দেবেন। প্রতিকুলতায় সবর করুন!
ছয়. অনেক সময় কেবল আমাদের দুর্বলতা দেখার জন্য পরীক্ষা করা হয় এমন নয়। সর্বশক্তিমান জানেন এবং চান আপনি নিজের শক্তি আবিষ্কার করুন। ধৈর্যধারণ করুন। মাঝে মাঝে মনে হতে পারে বিষয়টি কত কঠিন আর সর্বশক্তিমান আপনার প্রার্থনায় সাড়া দিচ্ছেন না। তাতে হতাশ হবেন না। তাঁর প্রতি আস্থা রাখুন।
সাত. বলুন, পরাক্রমশালী। এই দিনটিতে, ধৈর্য দিন, পূরণ করুন আমাদের হৃদয়কে। ভাবুন, এখন যে অন্ধকার দেখা যাচ্ছে তারপর নতুন ভোর অপেক্ষা করছে। আপনি শিগগিরই স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে পাবেন!
দৃষ্টব্যঃ
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না। নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে। (সূরা বনি ইসরাইল : ৩৬)
পরিণামে আল্লাহ তাদের শাস্তিস্বরূপ তাদের অন্তরসমূহে মুনাফিক্বী (কপটতা) স্থায়ী করে দিলেন তাঁর সাথে তাদের সাক্ষাৎ হওয়ার দিন পর্যন্ত। যেহেতু তারা আল্লাহর সাথে নিজেদের কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছিল এবং তারা মিথ্যা বলত। (সূরা তওবা : ৭৭)
তাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন ও তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাচারী। তাদেরকে যখন বলা হয়, ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না’, তারা বলে, ‘আমরা তো শান্তি স্থাপনকারীই।’ সাবধান! এরাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু এরা তা অনুভব করতে পারে না। (সূরা বাকারা : ১০-১২)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, সত্যবাদিতা হচ্ছে শুভ কাজ। আর শুভ কাজ জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। আর বান্দা যখন সত্য বলতে থাকে, এক সময় আল্লাহর কাছে সে সত্যবাদী হিসেবে পরিচিত হয়। আর মিথ্যা হচ্ছে পাপাচার, পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়, বান্দা যখন মিথ্যা বলতে থাকে, আল্লাহর কাছে এক সময় সে মিথ্যুক হিসেবে গণ্য হয়। (বুখারি : ৫৭৪৩, মুসলিম : ২৬০৭);
রাসূল (সা.) বলেন, মানুষ যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন মিথ্যার দুর্গন্ধে ফেরেশতারা মিথ্যাবাদী থেকে এক মাইল দূরে চলে যায়।’ (তিরমিজি : ১৯৭২)
রাসূল (সা.) বলেন, কারও কাছে কোনো কথা শোনামাত্রই তা বলে বেড়ানো মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট। (মুসলিম : ৯৯৬)
* মুফতি মনক (ডক্টর ইসমাইল ইবনে মুসা মেনক) ইসলামি স্কলার ও জিম্বাবুয়ের প্রধান মুফতি
