‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ লন্ডন মহানগর শাখার অভিষেক ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রিন্সিপাল মাওলানা শায়খ ইমদাদ আল মাদানী বলেছেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের নৈতিকতা বিবর্জিত এবং ধর্ম বিধ্বংসী প্রস্তাবনা বাংলাদেশের জনসাধারণ কখনো মেনে নেবে না। অনতিবিলম্বে ইসলাম বিরোধী এই প্রস্তাব বাতিল করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের খ্যাতিমান আলেম ও ইসলামিক স্কলারগণ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ইসলাম ও সমাজ বিদ্বেষী বিতর্কিত প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এই কমিশনের শাহবাগী মানসিকতা সম্পন্ন সদস্যরা ঘূণ্য বেশ্যাবৃত্তি ও পতিতাবৃত্তির পক্ষে তাদের কুৎসিত মনোভাব প্রদর্শন করেছেন। এটা সমাজে অনাচার ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকার জন্য তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দৃঢ় সতর্কতার আহবান জানান। বক্তারা বলেন, নারী বিষয়ক এই সংস্কার কমিশন বিলুপ্ত করে ঐতিহ্য সমৃদ্ধ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিদের এসব গুরৃত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
সোমবার (২১ এপ্রিল ২০২৫) বিকেলে পূর্ব লন্ডনের ফোর্ডস্কয়ার জামে মসজিদের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। লন্ডন মহানগর হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামনূন মহি উদ্দিন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাওলানা মিছবাহুজ্জামান হেলালী, সহ-সাধারন সম্পাদক মাওলানা মুখতার হোসাইন ও হাফেজ মাওলানা আশরাফ মৌলার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মহাগ্রন্থ আল কোরান থেকে তেলাওয়াত করেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ক্বারী শায়খ আহমদ হাসান ও হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুহাইমিন সুন্নাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম যুক্তরাজ্যের সভাপতি শায়খুল হাদিস আব্দুর রহমান মনোহরপুরী। তিনি হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠা ও সংগ্রামী ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, ইসলাম ও কোরান সুন্নাহ বিরোধী তৎপরতা বন্ধের লক্ষ্যে হেফাজতের জন্ম হয়েছে, নাস্তিক মুরতাদদের যথাপোযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য। কোন অপশক্তি হেফাজতকে দমিয়ে রাখতে পারবে না।
সভাপতির বক্তব্যে লন্ডন মহানগর হেফাজতের সভাপতি ও লন্ডন মাযাহিরুল উলুম মাইলেন্ড’র প্রিন্সিপাল শায়খ ইমদাদ আল মাদানী অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে লিখিত প্রস্তাবনা পেশ করেন। এতে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত নারি বিষয়ক সংস্কার কমিটির ইসলাম এবং মুসলমান বিরোধী প্রস্তাব অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রস্তাবিত প্রতিবেদনের “বহুত্ববাদ” বাতিল করে সংবিধানে এক আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করতে হবে। এছাড়া ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি এবং ভারতীয় মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ এবং ‘ওয়াক্বফ সম্পত্তি’ নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধের জন্য সরকারিভাবে জোর দাবী জানাতে হবে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার ব্যারিস্টার সায়েফ উদ্দিন খালেদ, কাউন্সিলর একাউন্টেট আয়াছ মিয়া, শায়খ মাওদুদ হাসান, মাওলানা ফয়েজ আহমদ, মুফতি মাওসুফ আহমদ, মাওলানা শাহ মিজানুল হক, মাওলানা সৈয়দ আশরাফ আলী, হাফেজ মাওলানা মোবারক আলী, মাওলানা সৈয়দ মোশাররফ আলী, মাওলানা শাহনূর আহমদ, মাওলানা আতাউর রহমান, হাফেজ মাওলানা নাজির উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা আশরাফুল মৌলা, মাওলানা সাইফুর রাহমান, হাফেজ মাওলানা নোমান হামিদী, মাওলানা মঈনুল হক চৌধুরী, হাফিজ আব্দুল কাদির, মাওলানা আব্দুল হাদী, মাওলানা সালেহ আহমদ ভূঁইয়া, মাওলানা মঈন খান, মাওলানা আব্দুল বাসিত, মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা জসীম উদ্দীন, মাওলানা শেখ রুম্মান আহমদ, হাফেজ মাওলানা মাসুম আহমদ, মাওলানা দিলোয়ার হোসাইন, হাফেজ মাওলানা নাসির উদ্দীন, হাফেজ আব্দুল হক, মাওলানা জাকারিয়া, মাওলানা হাফেজ রশিদ আহমদ,মাওলানা সামসুল হক ছাতকী, মাওলানা আবু বাক্কার, হাফেজ মাওলানা রশীদ আহমদ নোমান, হাফেজ ওয়ালিদুর রহমান, মাওলানা ফখরুল আমিন হোসাইন, মাওলানা আনোয়ার হোসেন রাব্বানী, হাফেজ হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
বিশ্বশান্তি এবং ফিলিস্তিন ও ভারত-সহ মজলুম মুসলমানদের জন্য দোয়া পরিচালনা করেন শায়খুল হাদিস আব্দুর রহমান মনোহরপুরী।