তুর্কি জনগণ অশুভ প্রচারণার জবাব দিয়েছেন

প্রবন্ধ-কলাম সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

হামিদ আজাদ

একটি নির্বাচন যা সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, একজন নেতা যিনি তার নিজ দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বময় কোটি কোটি মানুষের দোয়ায় সিক্ত হয়েছেন।

রবিবার (১৪ই মে ২০২৩) তুরস্কে রাষ্ট্রপতি এবং সংসদীয় নির্বাচন হয়ে গেল। অন্যান্য নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচন ছিল ব্যতিক্রমী। এ নির্বাচন সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একই সময়ে অনুষ্টিত অন্য যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে এই নির্বাচন নিয়েই পশ্চিমা মিডিয়াগুলো বেশি আগ্রহী ছিল।

কিছু মিডিয়া রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান এবং তার একে পার্টিকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে একটি নির্লজ্জ প্রচারণা চালানোকে তাদের অন্যতম দায়িত্ব হিসাবে বেছে নিয়েছিল এবং এখনও করে যাচ্ছে। তারা জনাব এরদোগানকে “শক্তিশালী, “স্বৈরশাসক”, “সুলতান”, “অত্যাচারী” এসব বিভিন্ন ব্যঙ্গাত্নক নামে আখ্যায়িত করে কুপ্রচারনা চালিয়ছে এবং চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্বাচনে কারচুপি, অনিয়মের কাল্পনিক স্বপ্ন দেখে এবং এসব কল্পনা প্রসূত misguiding মেসেজ দিয়ে ভোটারদেরকে এবং সারা বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাতে থাকে।

এই সমস্ত অশুভ প্রচারনা ও অভিযানের মুখে জনাব এরদোগান ছিলেন সদা শান্ত, ধৈর্যশীল এবং আপন কর্তব্য পালনে মনোযোগী।

যথাসময়ে নির্বাচন হয়েছে। তুর্কি জনগণ খুব স্মার্ট এবং মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে এই সমস্ত অশুভ প্রচারণার জবাব দিয়েছেন। তারা তাদের ঐতিহাসিক মর্যাদা ও ব্যক্তিত্বপূর্ণ চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েম মাথা উঁচু করে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে যে “আমরা আমাদের নেতাকে চিনি, আমরা জানি আমাদের কি করতে হবে, আমরা ঔপনিবেশিক ও ইবলিসি প্রচারণার কাছে মাথা নত করি না।”

সমস্ত ভবিষ্যদ্বাণী ভুল প্রমাণ করে তুরস্কের জনগণ সংসদ নির্বাচনে একে পার্টি এবং তার জোটকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছে এবং জনাব এরদোগানের প্রতি তাদের আনুগত্য ও সম্মান প্রদর্শন করেছে তাকে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে।

এটা প্রায় স্পষ্ট যে আগামী ২৮শে মে তরিখে অনুষ্চিতব্য রানঅফ ভোটে জনাব এরদোগান টানা তৃতীয় মেয়াদে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন এবং বিশ্ব রেকর্ড বইয়ে একটি নতুন ইতিহাস লিখতে চলেছেন যে, একজন সৎ নেতা ২০ বছরেরও বেশি ক্ষমতায় থেকে জনপ্রিয় থাকতে পারেন এবং শত অপপ্রচার ও বৈরী শক্তির পর্বত প্রমান চ্যালেন্জের মুখেও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধকে সম্মান করে মানুষের আস্তা ধরে রাখতে পারেন।

জনাব এরদোগানের নেতৃত্বের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল যে তিনি তুরস্কের নেতা হয়েও আপন দেশের সীমানা ডিংগিয়ে সারা বিশ্বের কোটি কোটি ইন্সাফ ও শান্তিপ্রিয় মানুষের মনের মনিকেটায় স্হান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। শুধু নিজের দেশে নয় সারা দুনিয়ায় কোটি কোটি মজলুম বনি আদম এবং মুসলিম উম্মাহ তার সাফল্যের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দেয়া করছে এবং করছে।

যখন পশ্চিমা মিডিয়া সংস্থাগুলো তার প্রতি ক্রমাগত ঘৃণার পাথর ছুঁড়ে মারছে, তখন সমগ্র ন্যায় ও ন্যায্যতাপ্রিয় বিশ্ব নীরবে তার এবং তার দলের সাফল্যের জন্য বিশেষ প্রার্থনা করেছে এবং এখনও করছে।

এতে বুঝা যায়, যখন হতাশা এবং অন্ধকার সমগ্র বিশ্বকে, বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বকে গ্রাস করে চলছে তখন জনাব এরদোগান হতাশাগ্রস্ত কোটি কোটি মানুষের মনের আকাশে আশার দ্রূবজ্যোতি নিয়ে এসেছেন । তিনি বিশ্বব্যাপী উম্মাহ এবং সাধারণভাবে নিপীড়িতজনতার জন্য অনুপ্রেরনার উৎস হয়ে দাঁডিয়েছেন।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হোন, তাঁকে হেফাজত করুন এবং তাঁর দেশ এবং উম্মাহকে আস্থা, দক্ষতা এবং খোদাভীরুতার সাথে সেবা করার জন্য তাকে তৌফিক দান করুন, আমীন।

“এবং বল, সত্য সমাগত এবং মিথ্যা অপসৃত।মিথ্যার পতন অনিবার্য।” আল-কুরআন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *