তাজিকিস্তানে মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ উদ্বোধন

আন্তর্জাতিক এশিয়া সময় সংবাদ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে ইমাম আবু হানিফা গ্র্যান্ড মসজিদ চালু হয়েছে। গত ৮ জুন মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম এই মসজিদ উদ্বোধন করেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে সানি ও তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমাম আলী রহমান। কাতার সরকারের অর্থায়নে মসজিদটি নির্মাণে সময় লাগে প্রায় ১৪ বছর। এতে প্রায় এক শ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়।

নতুন মসজিদটির নির্মাণকাজ ২০০৯ সালের অক্টোবরে শুরু হয়। মসজিদের নকশা করেছেন তাজিকিস্তান এবং কাতারের পেশাদার স্থাপত্যকুশলীরা। নকশায় রয়েছে পুরনো মুসলিম ঐতিহ্যের ছাপ। মসজিদের চারপাশে রয়েছে চারটি বড় মিনার। এর মধ্যে দুটির উচ্চতা ৭৪ মিটার এবং অন্য দুটির উচ্চতা ২১ মিটার। রয়েছে একটি বড় প্রধান গম্বুজ এবং ২০টি ছোট গম্বুজ রয়েছে। মসজিদে একসঙ্গে লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদটি দুশানবের উত্তরের উপকূলে অবস্থিত। মসজিদ কমপ্লেক্সে একটি গ্রন্থাগার, একটি সংগ্রহশালা ও বড় সভাকক্ষ রয়েছে। মসজিদের মূল কাঠামোর আয়তন ৬২ হাজার বর্গ মিটারের চেয়ে বেশি।

এখানে একসঙ্গে এক লাখ ৩৩ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। এর মধ্যে মসজিদের ভেতরে ৬২ হাজার মুসল্লির ধারণক্ষমতা রয়েছে।

তাজিকিস্তানের ধর্মবিষয়ক কমিটির প্রধান সুলাইমান দাওলাত জাদাহ বলেন, রাজধানী দুশানবের ইমাম আবু হানিফা মসজিদ মধ্য এশিয়ার সর্ববৃহৎ মসজিদ। কাতার সরকারের অর্থায়নে তৈরি মসজিদটি বিভিন্ন দেশের কাতারের ধর্মীয় ও মানবিক সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে এবং শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

প্রসঙ্গত, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা প্রজাতন্ত্রগুলোর মধ্যে এটিই একমাত্র দেশ, যেখানে ইসলাম ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় ধর্মের মর্যাদা লাভ করেছে।

১৯২৯ সালে এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গ হয়ে যায়। ১৯৯১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ফের স্বাধীনতা লাভ করে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের হিসাব মতে, দেশটির জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ মুসলমান, যাদের ৯৫ শতাংশ সুন্নি ও ৩ শতাংশ শিয়া। দেশটিতে কিছু সুফিবাদ চর্চাকারীও রয়েছে। সুন্নিদের অধিকাংশই হানাফি মাজহাবের অনুসারী।

সপ্তম শতাব্দীতে আরবদের মাধ্যমে তাজিকিস্তানে ইসলামের প্রচার-প্রসার ঘটেছে। সে সময় থেকেই ইসলাম তাজিক সংস্কৃতির অংশে পরিণত হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর সেখানে ধর্মচর্চার ব্যাপক প্রসার লাভ করে। প্রতি বছর পবিত্র রমজান মাসে রোজা পালনকারীর সংখ্যা ৯৯ শতাংশে গিয়ে পৌঁছায়। তাজিকিস্তানের জনগণ ধর্মভীরু। তারা নিজেদের মতো ধর্মচর্চা করার সুযোগ পান।

তবে ২০০৫ সালে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেক্যুলার স্কুলগুলোয় মেয়েদের হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দেশটির নারীরা নিজেদের ঐতিহ্য হিসেবে হিজাব পরে থাকেন।

পামির মালভূমির দেশ তাজিকিস্তান, স্থলবেষ্টিত দেশটির উত্তরে কিরগিজস্তান, উত্তর ও পশ্চিমে উজবেকিস্তান, পূর্বে গণচীন ও দক্ষিণে আফগানিস্তান। দেশের সর্ববৃহৎ শহর ও রাজধানী দুশানবে। দেশটির মোট আয়াতন ১ লাখ ৪৩ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটার।

সূত্র: আলজাজিরা মুবাশির

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *