জল পাথরের এক অপূর্ব ভূমি ‘বিছনাকান্দি’

পর্যটন ফিচার সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

বর্ষায় প্রকৃতি তার রূপ মেলে ধরে। বৃষ্টির পানিতে নতুন পাতা গজিয়ে উঠে। তাইতো মানুষ প্রকৃতির মাঝে হারিয়েেযেতে ছুটে চলে আজানার উদ্দেশে। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে যেমন আছে সাগর, তেমনি রয়েছে নদী-নালা, ঝর্ণা, খাল-বিল, হাওড়। রয়েছে পাহাড়ের অপূর্ব সমারোহ। প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে তাই ভ্রমণ করতে হবে। পাহাড় ও ঝর্ণার সান্নিধ্যে এসে প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতে হলে আপনেকে যেতে হবে জল পাথরের ভূমি ‘বিছনাকান্দি’।

ছবির মতোই সুন্দর অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্যে ঘেরা প্রকৃতির এক চমৎকার দান ‘বিছনাকান্দি’। যেখানে গেলে মনেই হবেনা আপনি বাংলােদেশ রয়েছেন। তাইতো কবি বলেছেন, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।।

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ‘বিছনাকান্দি’। পাশেই বয়ে চলা স্বচ্ছ শীতল পানির পাহাড়ি নদী পিয়াইন। ছোট বড় পাথরের মাঝে পিয়াইন নদীর মায়াবী স্রোত। আপনাকে করবে শান্ত। বিছনাকান্দির মূল আকর্ষণ হচ্ছে ভারতের উঁচু পাহাড়ের ঝর্ণা থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ শীতল জলধারা এবং দূরের আকাশচুম্বী পাহাড়ের সৌন্দর্য। পানির গভীরতা বেশি নয় বলে পরিষ্কার পানিতে উঁচু-নিচু পাথরগুলোকে দেখা যায়। নদীটির দুই পাশেও রয়েছে পাথরের সারি। সামনের দিকে তাকালে ঝর্ণা এবং উঁচু পাহাড়ের আঁকাবাঁকা সারিগুলো আপনার মন কাড়বে। তবে এই সবগুলো পাহাড় এবং ঝর্ণার অবস্থানই ভারতে।

পাথরপূর্ণ নদী, নদীর দুই পাশে পাথরের স্তূপ, মাঝখানে পাথরগুলোর বুক ছুঁয়ে শীতল পানির বয়ে চলা আর সম্মুখে উঁচু পাহাড়ের মনহরণকারী সুন্দরের সমাহার, এসব কিছু মিলে প্রকৃতি যেন এক জলপাথরের স্বর্গ রচনা করেছে এখানে। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের মাঝে কিছুটা সময় কাটাতে পারলে আপনার কেমন লাগবে একটু ভেবে দেখুন তো। একটু সময় করে আপনিও বিছনাকান্দির এই সৌন্দর্য দেখে আপনার চোখ জুড়িয়ে আসতে পারেন, পাশাপাশি শীতল পানির স্রোতের গা ভিজিয়ে মনে জাগিয়ে তুলতে পারেন অন্যরকম ভালোলাগা।যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সিলেটে আপনি ট্রেনে বা বাসে করে যেতে পারেন। সিলেট শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে রিজার্ভ করা সিএনজি নিয়ে জেতে হবে হাদারবাজার, ভাড়া নেবে বড়জোর ৫০০ টাকা। সিলেটের আম্বরখানা থেকেও যাওয়া যায় আলাদাভাবে। সেখানে প্রতি সিএনজিতে চারজন করে নেয়া হয় হাদারবাজার পর্যন্ত। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মত। হাদারবাজার নেমে নৌকা ঠিক করতে হবে বিছনাকান্দি পর্যন্ত। ভাড়া নেবে ৪০০-৫০০ টাকা আপ ডাউন। দামাদামি করে উঠবেন, কারণ হাদারবাজার থেকে বিছনাকান্দির দুরত্ব খুব একটা বেশি না। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যেতে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট লাগে। শুকনা মৌসুমে বিছানাকান্দি হেঁটে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু এই বর্ষায় হাদারবাজার থেকে হেঁটে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। কেননা, পথ কম হলেও বেশ কয়েকটি পাহাড়ি নদী পার হতে হয়।

ব্যক্তিগত গাড়িতে গেলে: সিলেট শহর হতে ৬০ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে বিছানাকান্দি গ্রাম। সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক ধরে সালুটিকর বাজারের ডান দিকে গাড়ী নিয়ে গোয়াইনঘাট লিঙ্ক রোডে হয়ে দেড় ঘন্টা গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন বিছনাকান্দি।

সাথে যা রাখবেন:
বিছাকান্দি ভ্রমণের উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল ও বেশি শীত পড়ার আগে আগে। তাই সঙ্গে ছাতা, রেইনকোট নিতে ভুলবেন না।

যেখানে থাকবেন: বিছনাকান্দি ও আশপাশে থাকার ভালো ব্যবস্থা নেই। বিছনাকান্দিতে দিনে গিয়ে দিনে ফেরা যায় সিলেট শহর থেকে। তাই সিলেট শহরেই থাকতে পারেন। সিলেট শহরে এখন অনেক উন্নতমানের হোটেল রয়েছে।

যা করবেন না: বিছনাকান্দি সীমান্তে কাঁটাতার নেই। একটি সাদা পতাকাই বাংলাদেশ-ভারতকে আলাদা করেছে। কিন্তু অতি উৎসাহী বা সাহসী হয়ে সীমান্ত পার হবেন না। আর খাবার-দাবার ওখানে না খাওয়াই ভালো। কারণ আমরা প্রকৃতি ধ্বংসে কয়েক ধাপ এগিয়ে।

অতএব বেড়িয়ে আসুন জল পাথরের ভূমি ‘বিছনাকান্দি’ থেকে। এতে আপনার শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে।

আরও পড়ুন
কোথাও আগুন লাগলে সতর্কতার জন্য যা করবেন, যা করবেন না
আগুনে পুড়লে মৃত ব্যক্তির মর্যাদা ও আগুন লাগলে যে দোয়া পড়বেন
দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স; প্রয়োজন সতর্কতা
দেহকে সুস্থ রাখবে অ্যালোভেরা
বসন্তের বাতাসে অ্যালার্জির প্রবণতা, একটু গাফিলতি হলেই মারাত্মক বিপদ
রাসূল সা: প্রবর্তিত খাদ্যবিজ্ঞান । ডা: মো: তৌহিদ হোসাইন
তরমুজের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
যে খাবারে শিশুর উচ্চতা বাড়ে
ইন্ডাস্ট্রির সকলের স্বার্থে কপিরাইটের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিঃ ফাহিম ফয়সাল
অতিরিক্ত আবেগ মনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে
আক্ষেপ প্রকাশ করলেন ‘ছুটির ঘণ্টা’র নির্মাতার মেয়ে বিন্দি
ওজন কমাতে সাহায্য করে যে সকল খাবার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *