প্রখ্যাত নজরুল সঙ্গীতশিল্পী ইয়াসমিন মুশতারী একটি সাংস্কৃতিক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। যেখানে সাহিত্য, কবিতা, সংবাদ এবং সঙ্গীতের পরিবেশ ছিলো। তিনি শৈশব থেকে আজ অব্দি সঙ্গীতচর্চা, সঙ্গীত শিক্ষাদান ও পরিবেশনায় ব্যস্ত আছেন। ছোটবেলা হতে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ নানান প্রতিযোগিতায় নিজ যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। এবার শিল্পী ০৮ই সেপ্টেম্বরে তার জন্মদিন উপলক্ষে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত ভক্ত, দর্শক-শ্রোতা, বন্ধু, শুভাকাঙ্খিদেরকে উপহার হিসেবে দিলেন ‘ডিজিটাল আর্কাইভ অব ইয়াসমিন মুশতারী’। শিল্পী ইয়াসমিন মুশতারীর দীর্ঘ বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের সকল কিছু এই ওয়েব প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হলো। দেশ-বিদেশের দর্শক-শ্রোতারা ভিজিট করলে যা পাবেন- শিল্পীর জীবনী, সকল গান, অডিও, ভিডিও, শিল্পীর পুরস্কার, অর্জনের তথ্য, সকল অ্যালবামের তথ্য, সকল গানের তথ্য, গুরুত্বপূর্ণ স্থিরচিত্র, প্রকাশিত সংবাদ, সাক্ষাৎকার, মিডিয়ার কার্যক্রম, শিল্পীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিভিন্ন কার্যক্রম ও অনুষ্ঠানের তথ্য, যে কোন অনুষ্ঠানের জন্য যোগাযোগ করার মাধ্যম ইত্যাদি থেকে শুরু করে সবকিছুই পাচ্ছেন ‘ডিজিটাল আর্কাইভ অব ইয়াসমিন মুশতারী’ এই ওয়েব প্ল্যাটফর্মে। ‘ডিজিটাল আর্কাইভ অব ইয়াসমিন মুশতারী’ ওয়েব প্ল্যাটফর্মটির কনসেপ্ট ও ডেভেলপমেন্ট করেছে আইটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি ‘ভার্সডসফট লিঃ’।
ডিজিটাল আর্কাইভ নিয়ে ইয়াসমিন মুশতারী বলেন, “আমি মূলত গানের মানুষ। সেই ছোটবেলা থেকে গান নিয়েই আছি। সংগীতসাধনা, পরিবেশনা, প্রশিক্ষণ প্রদান, নতুন নতুন গানের রেকর্ডিং নিয়েই আমার ব্যস্ত সময় কাটে। এতো এতো ব্যস্ততার ভেতর দিয়ে আমার নিজের বিষয়ে ভাবার খুব একটি সময় পাই না। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে মনের ভেতর একটি সুপ্ত বাসনা ছিলো ভবিষ্যতের জন্যে হলেও নিজের কর্ম ও অর্জনগুলোকে কোথাও সংরক্ষণ করা জরুরি। যদিও আমার অধিকাংশ কর্ম ও অর্জনের হার্ডকপি সংরক্ষণ করার পরও অনেক কিছুই বিনষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমি লক্ষ্য করলাম, আজকাল ইন্টারনেটে নামের বানান থেকে শুরু করে প্রচুর ভুল তথ্য থাকে। যা আমার মতো যে কোন পরিচিত মানুষের জন্য বিরাট বিড়ম্বনার কারণ হতে পারে। এমন তথ্যের কারণে কোনটা আসল আর কোনটা নকল তা বুঝা দুষ্কর। এমন অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্য থাকে যে এক পর্যায়ে সকল কিছুই নকল মনে হয়। আর আজকাল ফ্রি এসকল সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মকে সচেতন মানুষ খুব কম বিশ্বাস করে। ভুল তথ্যের কারণে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু নিজস্ব ওয়েব প্ল্যাটফর্মে যখন সঠিকভাবে সকল তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা থাকে এবং আমার অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলো কানেক্টেড থাকবে তখন ভুল তথ্য প্রচারের সুযোগ নেই এবং অবিশ্বাসেরও কোন সুযোগ থাকেনা। আবার অনেক সংবাদ, তথ্য, ছবি একসময় অনলাইনে থাকলেও পরে আর তা খুঁজেও পাওয়া যায় না। ঠিক এমন সময়ে সংগীতশিল্পী ফাহিম ফয়সাল আমাদেরকে ডিজিটাল আর্কাইভের কনসেপ্টটি দেয়। আমি ও আমার হাসব্যান্ড মুশতাক আহমাদ তার প্রেজেন্টেশন দেখে বেশ মুগ্ধ হই। তাদের সাথে বিস্তারিত আলাপ করে এবং আমার ডিজিটাল আর্কাইভ নিয়ে তাদের পরিকল্পনা শোনার পর আমাদের সবকিছু ভালো লেগে যায়। আমরা তখনই সিদ্ধান্ত নেই আমার এই ওয়েবসাইটটি ডেভেলপমেন্ট করার। এখন থেকে আমার সকল কিছুই এই ওয়েব প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থাকবে। আমার ডিজিটাল আর্কাইভের প্রযুক্তিগত সকল কিছুর দায়িত্বে রয়েছে ‘ভার্সডসফট লিঃ’। তাদের নিষ্ঠা, কর্মস্পৃহা, দক্ষতা, আন্তরিকতা, একাগ্রতায় আমি মুগ্ধ। তারা আমার সকল তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি তা যথাযথভাবে ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করছে। তারা সংগীতশিল্পী ও মিডিয়া সংশ্লিষ্ট মানুষের জন্য বেশ আন্তরিক। এখন থেকে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত আমার প্রিয় দর্শক-শ্রোতা, বন্ধু, ভক্ত, শুভাকাঙ্খী এবং গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সকলেই এই ডিজিটাল আর্কাইভে ভিজিট করে আমার সকল আপডেট ও সঠিক তথ্য পেয়ে যাবেন।”
‘ডিজিটাল আর্কাইভ অব ইয়াসমিন মুশতারী’র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ভার্সডসফট লিঃ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংগীতশিল্পী ফাহিম ফয়সাল বলেন, “আমি দীর্ঘদিন থেকে গণমাধ্যমে কাজ করছি। গান গাওয়া, কপিরাইট ও ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি সচেতনতামূলক নানান কাজ, মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট ও গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা, আইটি উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছি। নানান শাখায় আমার পদচারণার সময়ে আমি অনুভব করি আমাদের অধিকাংশ শিল্পী বা মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের নিজস্ব কোন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম নেই। অথচ এটি এখন যুগের ডিমান্ড। সে চিন্তা থেকেই আমি ডিজিটাল আর্কাইভ এর কনসেপ্টটি নিয়ে কাজ শুরু করি। কোন কোন সেক্টর নিয়ে কাজ করলে আমাদের মিডিয়া ও ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রির ডেভেলপমেন্ট হবে আমি প্রতিনিয়ত সেটি নিয়ে রিসার্চ করি। সেই রিসার্চের একটি প্রতিফলন হচ্ছে ইয়াসমিন মুশতারী আপার ডিজিটাল আর্কাইভ। আমাদের প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগীতশিল্পীদের জন্য ডিজিটাল আর্কাইভ ডেভেলপমেন্ট করার পাশাপাশি সকল প্রকারের প্রযুক্তিগত সাপোর্ট দিয়ে আসছে। আমি মনে করি প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই সময়ে সকলকেই সঠিক তথ্য দিয়ে নিজেকে আপডেট রাখা জরুরি। এবং মিডিয়ার সাথে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানেরই এমন একটি নিজস্ব ও প্রফেশনাল ওয়েব প্ল্যাটফর্ম থাকা উচিত। এতে নিজের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নানান ধরনের সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁঁকি কমে যায়। একটি কথা না বললেই নয়, এই ধরনের ডিজিটাল আর্কাইভ ডেভেলপমেন্ট করার পাশাপাশি নিয়মিত মেনটেইন্যান্স করতে হয়। আর এতে প্রচুর সময়, শ্রম, মেধা, গবেষণা ও ধৈর্য্যের প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অনেক ডাটারও প্রয়োজন হয়। মূলত মেনটেইন্যান্সের মাধ্যমেই আর্কাইভটি সমৃদ্ধ হতে থাকে। ইয়াসমিন মুশতারী সকল প্রকারের ডাটা আমাদেরকে নিয়মিত সরবরাহ করে আসছেন। যা আমাদের টিম যথাযথভাবে নিয়মিত ডিজিটাল আর্কাইভে আপডেট ও সংরক্ষণ করছে।”
ইয়াসমিন মুশতারীর ডিজিটাল আর্কাইভে ভিজিট করার ওয়েব লিংকঃ www.yasminmushtari.com