গ্যাস না পাওয়ায় দৈনিক ক্ষতি ৩ কোটি টাকা

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদ, চট্টগ্রাম থেকে

চট্টগ্রামে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) পরিচালিত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (সিইউএফএল) ৬ মাস ধরে উৎপাদনে যাওয়ার অপেক্ষায়। দৈনিক আর্থিক ক্ষতি গুনছে ৩ কোটি টাকা। ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত এই কারখানার ফার্নেস বা চুল্লি মেরামত শেষে কারখানাটির উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের গত ২৭ মার্চ। কিন্তু চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) কাছ থেকে গত প্রায় ছয় মাস মেলেনি গ্যাস। কেন গ্যাস মেলেনি—প্রশ্ন করা হলে সিইউএফএল কর্মকর্তারা বলেন, এই প্রশ্ন কেজিডিসিএল কর্মকর্তাদের করুন।

সিইউএফএল কর্মকর্তারা বলেন, আমাদের এই কারখানাটি দৈনিক ৪০ থেকে ৪২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পেলেই স্বাচ্ছন্দ্যে চালু হয়ে উৎপাদনে যেতে পারে। বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত চুল্লি মেরামতের পর ট্রায়ালের জন্য সাময়িক গ্যাস মিলেছিল। তারপর গত ২৭ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত এক ফোঁটা গ্যাস মেলেনি কারখানাটি চালু করতে। এই গ্যাসহীনতায় আমরা ১ হাজার ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী গত প্রায় ছয় মাস ধরে বসে আছি উৎপাদনহীনতায়। তারা বলেন, এরকম কোনো রসায়ন শিল্প-কারখানা যদি লাগাতার উত্পাদনহীন বসিয়ে রাখা হয় তাহলে সেই কারখানার যন্ত্রপাতি ব্যাপকভাবে নষ্ট হয়ে যায়। অথচ আমরা প্রস্তুত। গ্যাস পেলেই যেতে পারব পূর্ণ উৎপাদনে।

সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, সিইউএফএলের ফার্নেস বিস্ফোরণের কারণে প্রথম দফা কারখানাটি বন্ধ হয়েছিল ২০২২ সালের নভেম্বরে। এরপর টানা অচলাবস্থা শেষে ফার্নেসের মেরামত সম্পন্ন করে গত ২৭ মার্চ থেকে উৎপাদনের জন্য আমরা প্রস্তুত হয়েছিলাম। তারপর এখনো পর্যন্ত গ্যাস পাইনি। ইতিমধ্যে ছয় মাস সময় অতিক্রান্ত হতে চলেছে। গ্যাস কেন পাব না—এই প্রশ্নের কোনো উত্তরও দিচ্ছে না কেজিডিসিএল কর্মকর্তারা। শুধু বলছেন, ওপর থেকে বরাদ্দ নেই। মিজানুর রহমান বলেন, পাশের গ্যাস কারখানা কাফকো গ্যাস পেয়ে দিব্যি উৎপাদনে আছে। ঐ কারখানার মতো আমাদেরও কেজিডিসিএলের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি আছে, যেখানে বলা আছে চাহিদামাফিক গ্যাস দিতে না পারলে গ্যাস কোম্পানিকে সিইউএফএলের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।

কেজিডিসিএলের ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের জেনারেল ম্যানেজার সফিউল আজম খান বলেন, দেখুন তাদের মাতৃপ্রতিষ্ঠান বিসিআইসি থেকে আমরা এযাবৎ কোনো নির্দেশনা পাইনি যে সিইউএফএলকে গ্যাস দিতে হবে। প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে পেট্রোবাংলা, চুল্লিতে গ্যাস প্রজ্বালনকারী দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিল্পকারখানার জন্য ত্রৈমাসিক বরাদ্দ দিয়ে থাকে। সে হিসাবে চাহিদাপত্র বা রিকুইজিশন অনুসারে বিসিআইসিকেও পেট্রোবাংলা ত্রৈমাসিক বরাদ্দ দিয়ে থাকে। এখন বিসিআইসির নির্দেশনা বা পরামর্শপত্রে যেসব প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস প্রদানের কথা থাকে সেসব প্রতিষ্ঠানকেই কেজিডিসিএল গ্যাস সরবরাহ দিয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *