গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে আইসিজের নির্দেশ

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরায়েলের প্রতি বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এই আদেশ দেন।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি নির্বিচার হামলায় ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন। যার বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আইসিজে আদেশের পর গণহত্যা বন্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাও এক মাসের মধ্যে জানাতে ইসরায়েলের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতের আদেশে বলা হয়, গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা সনদের আওতায় গণহত্যা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে। ইসরায়েলের সেনারা যাতে গাজায় গণহত্যার মতো কোনো কিছু না করে, সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অনুমতি দিতে হবে।

গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরে আইসিজেতে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। চলতি মাসের শুরুর দিকে আইসিজেতে দুই দিনের শুনানি হয়। এরপর আজ আদালত সাময়িক এই আদেশ দিলেন।

আইসিজেতে শুনানির সময় দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে গাজায় জরুরি ভিত্তিতে ইসরায়েলি অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিতে আবেদন জানানো হয়েছিল। তবে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেননি।

আইসিজে ইসরায়েলকে যেসব ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলো এই আদালতের বিচারকদের ভোটে পাশ হয়েছে। ১৫ জন বিচারক পক্ষে এবং দুজন বিপক্ষে ভোট দেন। দুজনের মধ্যে একজন সবগুলো বিষয়ের বিপক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন। আরেকজন দুটি বিষয়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেছিলেন।

আইসিজের বিচারক প্যানেলের প্রেসিডেন্টের পদে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জোয়ান ডানেহিউ। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন রাশিয়ার কিরিল গেভোরজিয়ান। বিচারক প্যানেলের ১৩ জন স্থায়ী সদস্য হলেন ১৩টি দেশ থেকে– স্লোভাকিয়া, ফ্রান্স, মরোক্কো, সোমালিয়া, চীন, উগান্ডা, ভারত, জ্যামাইকা, লেবানন, জাপান, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রাজিল। এদের সঙ্গে এই মামলায় অ্যাডহক হিসেবে বিচারক প্যানেলে মামলার বাদী দক্ষিণ আফ্রিকা ও বিবাদী ইসরায়েল থেকে একজন করে দুজন যুক্ত হয়েছিলেন। বিচারক প্যানেলের সদস্যদের মধ্যে ইসরায়েলের আহারন বারাক এবং উগান্ডার জুলিয়া সেবুটিন্ডে বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।

আইসিজের ৬ নির্দেশনা: ১. গাজায় গণহত্যা প্রতিরোধে ইসরায়েলকে নিজেদের ক্ষমতার মধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ২. ইসরায়েলি বাহিনী যেন গাজায় গণহত্যা না চালায় সেটা ইসরায়েলকে নিশ্চিত করতে হবে ৩. গাজা উপত্যকায় গণহত্যার প্রত্যক্ষ উসকানি প্রতিরোধ ও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে ইসরায়েলকে ব্যবস্থা নিতে হবে ৪. গাজা উপত্যকায় মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করতে ইসরায়েলকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে ৫. গণহত্যার যে অভিযোগ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে উঠেছে তার সব প্রমাণ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে ৬. আদালতের আদেশ দেওয়ার পর কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা জানিয়ে এক মাসের মধ্যে ইসরায়েলকে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। সুত্র: আল জাজিরা, আরব নিউজ ও রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *