ইসরাইলি হামলায় শহীদ হয়েছেন ইরানের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার সৈয়দ মৌসাভি

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

সোমবার সিরিয়ার দামেস্কের উপকণ্ঠে ইসরায়েলি বোমা হামলায় শহীদ হয়েছেন ইরানের শীর্ষস্থানীয় সেনা কমান্ডার সৈয়দ রাজি মৌসাভি। ইরান এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রতিশোধ গ্রহণের সংকল্প ব্যক্ত করেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মৌসাভিকে সিরিয়ায় রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের সবচেয়ে অভিজ্ঞ উপদেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, দামেস্কের উপকণ্ঠের জেইনাবিয়া জেলায় ‘ইহুদিবাদী’ হামলায় সৈয়দ রাজি মৌসাভি প্রাণ হারিয়েছেন। সিরিয়ায় ইরানের শীর্ষ কমান্ডার হিসেবে তিনি সিরিয়া ও ইরানের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মৌসাভির ওপর হামলাকে ‘ইহুদিবাদী শাসকদের’ হতাশার বহিঃপ্রকাশ বলেছেন। এর মধ্য দিয়ে আঞ্চলিকভাবে ইসরায়েল কোণঠাসা হয়ে পড়ার বিষয় প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। ইসরায়েলকে এজন্য অবশ্যই মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।

এক পৃথক বিবৃতিতে রাষ্ট্রীয় টিভিতে আইআরজিসি জানায়, এই অপরাধের জন্য জায়নবাদী সরকারকে মূল্য দিতে হবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে নিয়মিত সম্প্রচার স্থগিত করে মুসাভির নিহত হওয়ার খবর প্রচার করে তাকে সিরিয়ায় সবচেয়ে অভিজ্ঞ আইআরজিসি উপদেষ্টা হিসেবে অভিহিত করা হয়।

শহীদ মৌসাভি সিরিয়া ও লেবাননে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সবচেয়ে পুরোনো কমান্ডারদের একজন। ওই এলাকায় আশির দশক থেকে কাজ করছেন। সেখানে মিত্রশক্তিগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে খুবই প্রভাবশালী ছিলেন।

আগেও বেশ কয়েকবার মৌসাভিকে হত্যার চেষ্টা করেছিল ইসরায়েল। ইরান ও ইরাক থেকে সিরিয়া এবং সেখান থেকে লেবাননে হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্রের চালান পৌঁছানোর নেটওয়ার্কে মৌসাভি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিলেন বলে অভিযোগ ইসরায়েলের।

ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের এলিট বাহিনী কুদস ফোর্সের সাবেক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানির অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন মৌসাভি। ২০২০ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় সোলাইমানি শহীদ হন। ইরানের আঞ্চলিক তৎপরতা সমন্বয়ের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করতেন সোলাইমানি।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল কয়েক বছর ধরে সিরিয়ায় ইরান সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে আসছে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদকে সমর্থন দিয়ে আসছে ইরান। তখন থেকে দামেস্কের ওপর তেহরানের প্রভাব বেড়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ইরান জানিয়েছিল, সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। তাঁরা সিরিয়ায় সামরিক পরামর্শক হিসেবে কাজ করছিলেন।

গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সাথে ইসরাইলের যুদ্ধটি বৃহত্তর আঞ্চলিক সঙ্ঘাতে রূপ নিতে পারে- এমন আশঙ্কায় এই হামলা হলো। ইতোমধ্যেই দক্ষিণ লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর সাথেও ইসরাইলের লড়াই চলছে। সূত্র : আল জাজিরা, ইরনা, ফ্রান্স২৪ ও অন্যান্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *