প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে একটা সনদ তৈরি করা। সেটাই হবে জুলাই সনদ। সনদ তৈরির পর বাস্তবায়নের পথ বের হয়ে যাবে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকটি শুরু হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হালদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, গণ ফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির নেতারা এসেছেন।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
বৈঠকে কমিশন আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ ছাড়াও কমিশন জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা সভাপতিত্ব করেন।
অধ্যাপক ইউনূস গভীর সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘সংস্কারটা গভীরভাবে হতে হবে। আপনারা (রাজনৈতিক দল) বলবেন- আমাদের প্রস্তাবে আপনারা একমত। অথবা কোন প্রস্তাবের সংশোধনী চান বা কোন কোন প্রস্তাবে একমত হলেন না। যাতে করে একটা জুলাই সনদ তৈরি করা যায়। সবাই মিলে একমত হয়ে গেলে বাস্তবায়নের পথ বের হয়ে যাবে।’
জুলাই সনদ তৈরি করা ছাড়া আমাদের মুক্তি নেই উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংলাপের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে প্রস্তাবের পেছনে এতগুলো দল একমত। পরে সনদ যখন হয়ে যাবে তখন সেটা প্রকাশ করা হবে। যাতে মানুষ জানতে পারে কোন রাজনৈতিক দল কতগুলো প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এই সনদকে আমরা যাদুঘরে সংরক্ষণ করব বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, ঐকমত্য কমিশনের অফিসে একাধিক টেলিফোন রাখা হবে। যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো কতগুলো প্রস্তাবে আমরা সবাই রাজী আছি সেটা ঠিক করা। আমরা আপনাদের মতামতগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে আসতে চাই। আমাদের এটা করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কারের বিষয়ে একমত না হলে আমাদের মুক্তি নেই। সারাদেশের মানুষ বলবে- তোমরা সনদে সই করলে না, সংস্কার করলে না- আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে গেলে। সংস্কার প্রতিদিনের অনুভব করার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংস্কার আসমান থেকে আসা কোনকিছু না। এটা প্রতিদিন অনুভব করছি। সেই জায়গা থেকে আপনারা আপনাদের মতামত জানান। বাসস