হুমায়ূন রশিদ চৌধূরী, সিলেট
এবার স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পর সিলেট ও সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। বিশেষ করে উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে ব্যবসা যেন একেবারে বসে পড়েছে। একেতো বন্যার পানিতে মালামাল ভিজে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে বন্যাপরবর্তী সময়েও আবার বেচাবিক্রিও নেই। ব্যবসায়ীরা জানালেন, বন্যার কারণে গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। তাই বেচাবিক্রিও অর্ধেকের নিচে চলে এসেছে।
বিভিন্ন শপিংমলসহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন. বিদ্যুৎ বিলও তুলতে পারছেন না তারা এখন। লোকসানের আশঙ্কায় তারা।
আধুনিক টেইলারিং শপের মালিকরা জানালেন, কাজ কমে গেছে। কারিগর ধরে রাখা দায়।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকজন গ্রোসারি দোকানের মালিক জানালেন, পুঁজির অভাবে, তারা দোকানে মালামালও উঠাতে পারছেন না। তাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য সরকার থেকে প্রণোদনার দাবি জানালেন তারা। বানিভাসি মানুষের হাতে টাকা নেই। প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কেনা-কাটা করতে পারছেন না। চাল-চুলা হারা নিঃস্ব মানুষের বন্যা পরবর্তী সংকটের যেন শেষ নেই। খাদ্য, বাসস্থানসহ নানা সমস্যা লেগেই আছে। এর মধ্যে এখন ভয়াবহ বন্যার পর তপ্ত রোদে পুড়ছে সিলেট। গরমে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি, গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দিয়েছে।
পর্যটন ব্যবসায়ও ধস
গত ঈদুল ফিতরে সিলেটে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের ঢল নেমেছিল। ঈদের ছুটিতে পর্যটনখাতে ব্যবসা হয়েছিল শত কোটি টাকার। কিন্তু ওই সময়ে জাফলংয়ে টোল আদায় নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সিলেটে পর্যটক আসা অনেকটা কমে যায়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই বন্যা শুরু হয়। ঈদুল ফিতরের পরপর সিলেটজুড়ে দু’দফা বন্যায় হওয়ায় মারাত্মক ধস নামে পর্যটনখাতে। বন্যার কারণে এবার সিলেটমুখী হননি পর্যটকরা। ফলে ঈদের ছুটিতে পর্যটক শূন্য সিলেটের সবকটি পর্যটনকেন্দ্র। টাঙ্গুয়ার হাওরে কয়েকটি নৌকায় করে পর্যটকরা এসেছিলেন। কিন্তু উচ্চস্বরে মাইক বাজানোসহ বিধি ভঙের কারণে জরিমানা গুনেছেন তারা।পর্যটক না আসায় সিলেটের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। বিশেষ করে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা বেশি হতাশ। পর্যটক আকর্ষণ করতে ঈদের আগেই তারা হোটেল-মোটেল সংস্কার করে রেখেছিলেন। অনেক হোটেলের পক্ষ থেকে পর্যটকদের জন্য বিশেষ অফারও ঘোষণা করা হয়। একই অবস্থা পরিবহন ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ও। কিন্তু বন্যা সব স্বপ্ন ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
সিলেট হোটেল মোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস অনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, সিলেটে প্রায় ৫০০ আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউস রয়েছে। যেকোনো উৎসবের ছুটিতে এসব হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউস পর্যটকে পরিপূর্ণ থাকে। কিন্তু এবার বেশিরভাগ হোটেল খালি। মাত্র হাজার খানেক লোকের আগমন ঘটেছে সিলেটে।
জাতীয় উদ্যান লাউয়াছড়া
ঈদ কিংবা কোনো দীর্ঘ ছুটিতে প্রকৃতি প্রেমীরা মনের টানে ছুটে আসেন লাউয়াছড়ায়। তবে এবার ঈদুল আজহার ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের ভিড় নেই লাউয়াছড়াসহ মৌলভীবাজারের পর্যটন স্পটগুলোতে। প্রায় সব জায়গাতেই সুনসান নীরবতা। হতাশ হয়ে পড়েছেন পর্যটন নির্ভর জেলার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মালিকরা।
লাউয়াছড়া বিটের বিট অফিসার আনিছুজ্জামান বলেন, ঈদের দিন মাত্র ৪২৯ জন পর্যটক লাউয়াছড়ায় প্রবেশ করেছেন। তার মধ্যে স্থানীয়রাই বেশি। অথচ গত ঈদের সময় দিনে কমপক্ষে ৪-৫ হাজার পর্যটক যাতায়াত করেছেন।
মধ্য জুনে চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ের বৃষ্টিতে সৃষ্টি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট বিভাগের ৬৩ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুনামগঞ্জ ও সিলেটের দুই জেলার ৫০ লাখ লোক জলবন্দি হয়ে পড়েন। উদ্ধার তৎপরতায় প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহীনি, পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে নামানো হয়। এলাকায় মানবিক সংকট দেখা দেয়। সেই সংকট চলছে এখনো।
আরও পড়ুন
কোথাও আগুন লাগলে সতর্কতার জন্য যা করবেন, যা করবেন না
আগুনে পুড়লে মৃত ব্যক্তির মর্যাদা ও আগুন লাগলে যে দোয়া পড়বেন
দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স; প্রয়োজন সতর্কতা
দেহকে সুস্থ রাখবে অ্যালোভেরা
বসন্তের বাতাসে অ্যালার্জির প্রবণতা, একটু গাফিলতি হলেই মারাত্মক বিপদ
রাসূল সা: প্রবর্তিত খাদ্যবিজ্ঞান । ডা: মো: তৌহিদ হোসাইন
তরমুজের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
যে খাবারে শিশুর উচ্চতা বাড়ে
ইন্ডাস্ট্রির সকলের স্বার্থে কপিরাইটের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিঃ ফাহিম ফয়সাল
অতিরিক্ত আবেগ মনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে
আক্ষেপ প্রকাশ করলেন ‘ছুটির ঘণ্টা’র নির্মাতার মেয়ে বিন্দি
ওজন কমাতে সাহায্য করে যে সকল খাবার