হুমায়ূন রশিদ চৌধূরী সিলেট থেকে
– সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারায় ‘ক্যাপিটাল’ ড্রেজিং জরুরি
– প্রায় ৩ হাজার মিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ও ৫২টি স্থানে বাঁধ উপচে সিলেট প্লাবিত হয়
সিলেটে এবারের বন্যায় হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, টাকার অঙ্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতির নিরূপণ চলছে।
কর্মকর্তারা বলেন, ২০০৪ সালের পরে এটা সিলেটে ভয়াবহ বন্যা। এপ্রিল ও মে মাসে দুই দফা বন্যা শস্য ও মৎস্য ভাণ্ডার খ্যাত এই অঞ্চলকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। সড়ক ভেঙে, ফসল ডুবে গ্রামীণ অর্থনীতি অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। বহু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছে। নারী ও শিশুদের অবস্হা করুণ।
আন্তর্জাতিক সংস্হা ইউনিসেফ বলেছে, বন্যায় সিলেট অঞ্চলের অন্তত ৫ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিলেটে বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠছে রাস্তাঘাট, কৃষিক্ষেত্র, মত্স্যসম্পদ, বাড়িঘরসহ নানা অবকাঠামোর ক্ষতির চিত্র।
উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, বন্যায় সিলেট সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে সিলেটের সাত উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ডাইকের ৩৮টি স্হান ভেঙেছে। দুটি রেগুলেটরও ভেঙে গেছে। ডাইকের ৫২টি স্হানে বাঁধ উপচে পানি ঢুকে ঘরবাড়ি ডুবেছে। টাকার অঙ্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতি নিরূপন চলছে।তিনি বলেন, শুধু সিলেটে জেলার ৩৮টি স্হানের মধ্যে কয়েকটির ভাঙন বন্ধ করার কাজ শুরু হয়েছে। সিলেট অঞ্চলের প্রধান নদী সুরমা-কুশিয়ারা নাব্য হারিয়েছে। নদী এখন পানি ধরে রাখতে পারছে না। ফলে নদী উপচে জনপদ প্লাবিত হয়।
সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন বলেছেন, ‘সিলেট অঞ্চলকে বন্যামুক্ত করতে হলে ‘ক্যাপিটাল ড্রেজিং’ প্রয়োজন। আর তা করা হলে সিলেট কৃষি ও মত্স্য সম্পদের সোনালি অতীত ফিরে আসবে। নতুবা এলাকাটি মরুভূমি হয়ে যাবে।
এদিকে সিলেটে বন্যা পরিস্হিতি পর্যবেক্ষণে এসে সুরামা, কুশিয়ারায় ‘ক্যাপিটাল ড্রেজিং’-এর গুরুত্বারোপ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, আগামী বর্ষার আগে নদী খনন করা হবে।